বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার রুমানা আহমেদ বছরখানেক ধরেই খানিকটা অনিয়মিত বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দলে। এবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিসিবিকে সরাসরি বার্তা দিলেন তিনি— চেয়েছেন ন্যায্য বিচার, চেয়েছেন অন্ধকারে ঢেকে থাকা অনৈতিকতার অবসান।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিসিবিকে উদ্দেশ করে রুমানা লিখেছেন, “আমার সম্মানিত বিসিবি অভিভাবক, আমি খেলি বা না খেলি, এই অনৈতিকতা ও বিশৃঙ্খলা চলতে পারে না। দয়া করে এর একটা চূড়ান্ত সমাধান দিন। বিনা কারণে তিন বছর ধরে চলতে থাকা এই অনিয়ম কোনো হাস্যকর বিষয় নয়।”
আরও পড়ুন: দলের ব্যর্থতার ব্যাখ্যা দিলেন সিমন্স
রুমানা দাবি করেন, তার পারফরম্যান্স বা আচরণের কারণে নয়, অজানা কোনো কারণে তাকে দলের বাইরে রাখা হয়েছে। একই বিবৃতিতে আরও বলেন, “আমার রেকর্ড ঘাঁটলে দেখা যাবে, আমি কখনোই বাজে ক্রিকেট খেলিনি, কোনো অনৈতিক কাজেও জড়াইনি। সিনিয়র হওয়াটা কখনো অভিশাপ হতে পারে না। যারা আমার উজ্জ্বল ক্রিকেট ক্যারিয়ার নষ্ট করেছে, তাদের বিচার আমি অবশ্যই চাই।”
বাংলাদেশ নারী দলের সাবেক এই সহ-অধিনায়ক দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় দলে ছিলেন দলের ভরসা হয়েই। বিশেষ করে বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে একসময় তিন ফরম্যাটেই ছিলেন অপরিহার্য। তবে বছরখানেক আগে হঠাৎই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রুমানা আহমেদ একটি পোস্ট দিয়েছিলেন, যেখানে স্পষ্ট লিখেছিলেন— ‘আর ক্রিকেট নয়’। তার সেই ঘোষণার পরেই তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে আসে নতুন এক মোড়।
আরও পড়ুন: শিশিরের কারণেই হার, বলছেন লিটন
সেই সময় বাংলাদেশ নারী দল শ্রীলঙ্কা ও ভারতের বিপক্ষে দুটি গুরুত্বপূর্ণ সিরিজ খেললেও স্কোয়াডে জায়গা হয়নি অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডারের। শ্রীলঙ্কা সিরিজের দল ঘোষণার পর বিসিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল— রুমানাকে নাকি ‘বিশ্রাম’ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রুমানার ভাষ্য ছিল একেবারে উল্টো। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, তাকে কোনো বিশ্রাম নয়, বরং সরাসরি দল থেকে বাদই দেওয়া হয়েছে।
টিম ম্যানেজমেন্টের এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলার ‘অপরাধে’ পরে বোর্ডের কাছ থেকে তলবের চিঠিও পেয়েছিলেন তিনি। সেই ঘটনা থেকেই শুরু হয় বোর্ড আর রুমানার সম্পর্কের শীতলতা, যা সময়ের সঙ্গে আরও গভীর হয়েছে।
রুমানার এই খোলা বার্তায় স্পষ্ট, তিনি আর নিরব থাকতে চান না। চেপে রাখা অভিমানের ভাষা এবার তিনি প্রকাশ করেছেন সরাসরি বোর্ডের প্রতি। নারী ক্রিকেটের ভবিষ্যতের স্বার্থে এমন অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের বক্তব্য আমলে নেওয়া এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করাই হতে পারে বোর্ডের সামনে আসল চ্যালেঞ্জ।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তান-নিউজিল্যান্ডকেও হারিয়েছি, এটাই প্রথম নয়: আসিফ