বাংলাদেশের নারীদের দু’বারের সাফজয়ী দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন তিনি। শুধু খেলোয়াড় নন, ছিলেন অধিনায়কও। অথচ সেই সাবিনা খাতুন এখন নেই বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের স্কোয়াডে। জর্ডানে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টের আগে ঘোষিত ২৩ সদস্যের দলে জায়গা হয়নি দেশের নারী ফুটবলের এক সময়ের সবচেয়ে পরিচিত মুখের। শুধু সাবিনাই নন, বাদ পড়েছেন ডিফেন্ডার মাসুরাসহ আরও চার ফুটবলার— যাঁরা বর্তমানে খেলছেন ভুটানের নারী লিগে।
ভুটানে পারফর্ম করেও কেন তাঁরা জাতীয় দলে বিবেচিত হলেন না, সেই প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ নারী দলের কোচ পিটার বাটলার যেভাবে ব্যাখ্যা দিলেন, তা নিয়ে ইতোমধ্যে তৈরি হয়েছে আলোচনা। সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “ভুটানের লিগের মান এতটাই নিচু যে, সেখানে এমনকি বাফুফের নারী উইং প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণও সেন্টার ফরোয়ার্ড হিসেবে খেলতে পারেন!”
আরও পড়ুন: লাহোরে পৌঁছেছে বাংলাদেশের একাংশ

সাবিনাদের বাদ দেওয়ার বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বাটলার বলেন, “আমি ভুটানের লিগকে হেয় করতে চাই না। তবে সেখানে খেলা অনেকটাই হাঁটার গতিতে খেলার মতো। নাহলে কোনো ম্যাচে ২৮–০ গোল হয় কীভাবে?”
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই থিম্পুতে অনুষ্ঠিত এক ম্যাচে পারো এফসি ২৮-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল সামৎসে এফসিকে। সেই ম্যাচেই বাংলাদেশের চার ফুটবলার—সাবিনা, ঋতুপর্ণা, সুমাইয়া ও মনিকা মিলে করেছিলেন ২৫ গোল। একাই ৯ গোল করেছিলেন সাবিনা খাতুন।
বাটলার আরও যোগ করেন, “আমি বলছি না যে সাবিনাদের ফিরে আসার সব দরজা বন্ধ। তবে সাবিনার ক্যারিয়ারের শেষ সময়টা চলে এসেছে বলেই মনে করি। আর মাসুরা এখনো পুরোপুরি ফিট না।”
আরও পড়ুন: ‘বাংলাদেশ আমার আত্মার ঠিকানা’ — শমিতের হৃদয় ছোঁয়া বার্তা

তবে বাটলারের এই মন্তব্য সহজভাবে নেয়নি অনেকেই। সাবিনাদের পারফরম্যান্স এবং অভিজ্ঞতা যেখানে দলের বড় শক্তি হতে পারত, সেখানে তাঁদের ভুটানের লিগে খেলার অজুহাতে বাদ দেওয়া অনেকের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ মনে হয়েছে।
তিন জাতির এই টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে বাংলাদেশ নারী দল ৩১ মে মুখোমুখি হবে ইন্দোনেশিয়ার এবং ৩ জুন খেলবে স্বাগতিক জর্ডানের বিপক্ষে। এরপর ২৩ জুন থেকে শুরু হবে এএফসি উইমেন্স এশিয়ান কাপের বাছাইপর্ব, যেখানে ‘সি’ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ— মিয়ানমার, বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তান। এই বড় চ্যালেঞ্জের আগে দলের অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের না রাখার সিদ্ধান্ত আদৌ কতটা কাজে আসে, এখন সেই দিকেই তাকিয়ে ফুটবলপ্রেমীরা।
আরও পড়ুন: রোনালদোর সঙ্গে দ্বৈরথ ফুটবলের শ্রেষ্ঠ অধ্যায়: মেসি