প্রথম ম্যাচে ঝলমলে সেঞ্চুরি, এরপর টানা দুই ম্যাচে ফিফটি— চলমান নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে নিগার সুলতানা জ্যোতি যেন একাই লিখে চলেছেন রাজত্বের গল্প। শুধু ব্যাট হাতে নয়, নেতৃত্ব দিয়েও বাংলাদেশ নারী দলকে এনে দিয়েছেন টানা তিনটি জয়। তার কাঁধে ভর করে বাংলাদেশ এখন পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে, বিশ্বকাপের মূল পর্বও প্রায় নিশ্চিত।
থাইল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই ইতিহাস গড়েন টাইগ্রেস অধিনায়ক। ৮০ বলে ১৫ চার ও ১ ছক্কায় খেলেন ১০১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। অধিনায়ক এবং উইকেটরক্ষক হিসেবে এটাই নারী ওয়ানডেতে ইতিহাসের প্রথম সেঞ্চুরি— অর্থাৎ, যেখানে আর কেউ নেই জ্যোতির পাশে। সেই ম্যাচেই তার দল করে ২৭১ রান, যা তখন অব্দি ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ।
আরও পড়ুন: টানা তিন জয়ে বিশ্বকাপের আরো কাছে জ্যোতি-নাহিদারা
এরপর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে ৬৮ বলে করেন ৫১ রান। শেষ দিকে রিতু মনির দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ ২ উইকেটের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে।
আর তৃতীয় ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে আবারও ব্যাট হাতে জ্বলে উঠেন বাঘিনীদের এই নেত্রী। মাত্র ৫৯ বলে ১১ চারে খেলেন অপরাজিত ৮৩, যার স্ট্রাইক রেট ১৪০.৬৭। এখানেও আলাদা এক কীর্তি গড়েন জ্যোতি।
বাংলাদেশের ইতিহাসে কমপক্ষে ১৫ বল খেলা ইনিংসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এই ম্যাচেই মাত্র ৩৯ বলে ফিফটি তুলে নিয়ে জ্যোতি গড়েন বাংলাদেশের নারী ওয়ানডে ইতিহাসে দ্রুততম অর্ধশতকের রেকর্ড। অর্থাৎ, চলমান বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে রানের পাশাপাশি রেকর্ডের পসরা সাজাচ্ছেন তিনি।
এছাড়া অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক হিসেবে এটি ছিল তার পঞ্চম ফিফটি, যা নারী ওয়ানডেতে গোটা বিশ্বেই সর্বোচ্চ।
তাছাড়া এই টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও তিনি, একমাত্র ব্যাটার হিসেবে তিন ম্যাচেই করেছেন পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস।
আরও পড়ুন: তিন মিনিটের খেলা, তিন ঘণ্টার পার্টি— লাইমলাইটে গ্রিলিশ
ফলে আইসিসির সর্বশেষ র্যাঙ্কিংয়েও তার উন্নতি হয়েছে চোখে পড়ার মতো— ১৬ ধাপ এগিয়ে আপাতত ৫৬৩ রেটিং নিয়ে আছেন ১৭ নম্বর অবস্থানে।
বলা যায়, সাফল্যের মঞ্চে দাঁড়িয়ে নিগার সুলতানা জ্যোতির নামটাই এখন বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন। শুধু ব্যাটে-বলেই নয়, নেতৃত্বেও যিনি বদলে দিচ্ছেন দলের চেহারা, ভবিষ্যতের বড় শিরোপারও স্বপ্ন দেখাচ্ছেন পুরো জাতিকে।