বাংলাদেশের ফুটবলে নারীদের অগ্রযাত্রার অন্যতম পথিকৃৎ ঋতুপর্ণা চাকমা। জাতীয় দলের হয়ে টানা দু’বার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছেন, ২০২৪ সালে হয়েছেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়। অথচ দেশের জন্য এত কিছু করার পরও নিজের জন্য ছাদ জোটেনি এই কৃতী ফুটবলারের।
প্রশাসনের দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবে রূপ পেতে শুরু করেছিল, কিন্তু এখন বাধার মুখে পড়েছে তার স্বপ্নের ঘর। নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে তিনি হতাশা প্রকাশ করে লিখেছেন—
“এতদিন পর প্রশাসন আমাকে বাড়ি করে দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে, কিন্তু এখন শুনছি, কোনো এক মহল থেকে বাধা আসছে! তাহলে কি আমার ঘাগড়ায় কোনো ঠাঁই নেই?”
২০২২ সালে প্রথমবারের মতো সাফ জয়ের পর ঋতুপর্ণা ও তার সতীর্থরা রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে সংবর্ধনা পান। রুপনা চাকমার জন্য প্রশাসন বাড়ি তৈরি করে দিলেও ঋতুপর্ণার ক্ষেত্রে ছিল শুধু আশ্বাস। কিন্তু নিজের জন্য কিছু চাননি তিনি, চেয়েছিলেন তার গ্রামের মানুষের জন্য একটি রাস্তা।

“আমাকে যখন জিজ্ঞেস করা হলো, আমি কী চাই, তখন নিজের জন্য কিছু চাইনি। শুধু চেয়েছিলাম আমার গ্রামবাসীর চলাচলের জন্য একটা রাস্তা। প্রশাসন তখন বলেছিল, রাস্তা হবে, আর আমার জন্যও জায়গাসহ বাড়ি হবে।”
সেবার জায়গা নির্ধারণও করা হয়েছিল, কিন্তু সেটি আর বাস্তবে রূপ নেয়নি।
এরপর ২০২৪ সালে আবারও সাফ চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। এবারও রাজকীয় সংবর্ধনা পান ঋতুপর্ণা ও তার সতীর্থরা। তবে এবার প্রশাসনের তরফ থেকে সুখবরও আসে—তার এলাকার রাস্তা সংস্কারের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, এমনকি তার জন্য একটি ঘর তৈরিরও অনুমোদন মিলেছে।
ঋতুপর্ণা উচ্ছ্বসিত হয়ে ভাবতে শুরু করেন, এবার হয়তো সত্যিই তার স্বপ্ন পূরণ হবে। কিন্তু ঠিক তখনই শুরু হয় বাধার খবর!

সবকিছু চূড়ান্ত হওয়ার পরও বাড়ি নির্মাণে বাধা আসছে শুনে হতাশ ঋতুপর্ণা বলেন, “২০১৭ সাল থেকে দেশের হয়ে খেলছি, দেশের প্রতিনিধিত্ব করছি। অথচ নিজের জেলার মানুষের কাছ থেকে কি এতটুকু মূল্যায়নও পাব না?”
এত বড় অর্জনের পরও একজন জাতীয় তারকার প্রতি এমন অবহেলা কেন? প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি কি বাস্তবে রূপ নেবে, নাকি আবারও স্বপ্নভঙ্গের হতাশায় ডুবে যেতে হবে ঋতুপর্ণাকে? এখন তাকিয়ে আছে পুরো দেশ।