সম্প্রতি আইপিএলে রশিদ খানের ফর্ম নিয়ে আলোচনা যেন উঠেছে তুঙ্গে। বিশেষ করে ইসএসপিএন ক্রিকইনফো ও স্টার স্পোর্টসের বিশ্লেষকরা রশিদ খানের বোলিং ফর্ম নিয়ে বেশ চিন্তা প্রকাশ করেছেন। রশিদ খানের বোলিংয়ে কেন সেই পুরোনো ছন্দ পাওয়া যাচ্ছে না এবার সে বিষয়ে ব্যাখ্যা করেছেন জনপ্রিয় ক্রিকেট বিশ্লেষক সৈয়দ আবিদ হুসাইন সামিও। জানিয়েছেন রানআপ এবং বোলিং বায়োমেকানিক্সে ব্যাপক পরিবর্তন আনার কারণেই মূলত আগের সেই ধার হারিয়েছেন রশিদ।

এবারের আসরের প্রথম তিন ম্যাচে নিজের স্বভাবসুলভ বোলিং করতে ব্যর্থ হয়েছেন রশিদ। তিন ম্যাচে দশ ওভার বোলিং করে রশিদ রান খরচ করেছেন মোট ১১২। উইকেট পেয়েছেন মাত্র একটি। রশিদের বলের গতি ও স্পিন কমে যাওয়াটাই সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে। অতীতে রাশিদ খানের বলের গতি ছিল অনেক বেশি, বিশেষ করে যখন তিনি ইন দ্য এয়ার বলটি রিলিজ করতেন। তবে এখন বলে সেই গতি নেই কিংবা বলের জিপও (স্পিন) খুবই কম।
আরও পড়ুন: জুন উইন্ডোতে শামিত শোমকে খেলাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা বাফুফের
হুট করেই কেন রশিদের বলে এমন হচ্ছে সেই ব্যাপারে নিজের পর্যবেক্ষণ জানিয়েছেন সৈয়দ সামি। তিনি বলেন, “রশিদ খান যখন ফর্মের তুঙ্গে ছিলেন তখনকার রানআপ এবং বোলিং বায়োমেকানিক্সের সাথে এখনকার রানআপ ও বোলিং বায়োমেকানিক্সে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে। প্রথমত, এখন তিনি রানআপ শুরু করেন কিছুটা কোণাকুণিভাবে। কিন্তু তিনি যখন তার ক্যারিয়ারের তুঙ্গে ছিলেন তখন তার রানআপ ছিলো অনেকটাই সোজাসুজি।”

রানআপের পরে বোলিং হ্যান্ডের পজিশনেও পরিবর্তন চোখে এসেছে সৈয়দ সামির। এ ব্যাপারে সামি বলেন, “ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে রশিদের বোলিং হ্যান্ড থাকতো কিছুটা সাইডে এবং পিছন দিকে। তবে এখন সেটা থাকে শরীরের সামনের দিকে। বোলিং হ্যান্ড শরীরের কিছুটা সাইডে থাকলে বোলার বল ছোঁড়ার সময় সামান্য পরিমাণ বেশি গতি আনতে পারে। তবে এখন সেটা পাচ্ছেন না আফগান এই লেগি।”
আরও পড়ুন: আইপিএল ছেড়ে হঠাৎ দেশে ফিরলেন রাবাদা
রশিদ খানের পুরো বোলিং প্রক্রিয়ার ধাপে ধাপে বিশ্লেষণ করেছেন সামি। রশিদের বোলিংয়ের ল্যান্ডিংয়ের ব্যাপারে সামি তার পর্যবেক্ষণে জানান, “রশিদ খানের প্রথম ব্যাকফুট ল্যান্ডিং যদি এখন লক্ষ্য করা হয় তাহলে দেখা যাবে তা অনেকটাই কোণাকুণি আছে, যা একসময় অনেক বেশি স্ট্রেইট বা সোজা ছিল। একইভাবে, তার ফ্রন্ট লেগের অবস্থানেও পরিবর্তিত এসেছে। এখন তার পা ফাইন লেগের দিকে চলে যায়, যার ফলে ল্যান্ডিং পজিশনের আগ মুহূর্তে পায়ের অবস্থান আগের মতো সোজা থাকে না। রশিদ যখন পুরোপুরি ল্যান্ডিংয়ে যাচ্ছেন তখন তার বডি পজিশন আগের থেকে অনেকটাই ঝুঁকে যাচ্ছে। আর একারণেই তিনি পূর্বের মতো আর এয়ারে পেস এবং ড্রিফট তৈরি করতে পারছেন না।”

রশিদ খানের বোলিংয়ের এই বায়োমেকানিক্সে পরিবর্তন আসার কারণে তার বোলিং লেন্থ নির্ধারণেও অসুবিধা সৃষ্টি করেছে। গুড লেন্থে বল করার মাধ্যমে আফগান এই লেগি ব্যাটারদের বিভ্রান্ত করতেন। তবে ক্রিকেট বিশ্লেষক সামির মতে রশিদের বল কিছু ক্ষেত্রে শর্ট অফ লেন্থ কিংবা কিছু ক্ষেত্রে অনেক সামনের দিকে পড়ছে। আর এটাই মূলত রশিদের বিপক্ষে ব্যাটারদের হাত খুলে খেলার সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে।