ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক যখন নতুন উত্তেজনার সর্বোচ্চ সীমায়, তখন কূটনৈতিক টানাপোড়েন ভুলে ওমানের মাসকাটে এক মাঠে খেলতে নামতে বাধ্য হলো দুই দেশের হ্যান্ডবল দল। রাজনৈতিক বাস্তবতা হয়তো বলছিল ম্যাচটা না খেলাই শ্রেয়, কিন্তু আন্তর্জাতিক হ্যান্ডবল ফেডারেশনের (আইএইচএফ) চার্টার ছিল ভারতের সামনে বড় দেয়াল হয়ে।
কারণ স্পষ্ট—ম্যাচ বয়কট করলে ১০ হাজার মার্কিন ডলার জরিমানা গুনতে হতো ভারতকে, সঙ্গে যোগ হতো ২ বছরের আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা। অলিম্পিক চার্টারের চেতনার কথা মনে করিয়ে ভারতকে জানিয়ে দেওয়া হয়, না খেললে সেটা হবে নিয়মবহির্ভূত আচরণ।
আরও পড়ুন: প্রিমিয়ার লিগে আবারো কি ফিরবেন হামজা?

ফলে সব দ্বিধা, আপত্তি আর নৈতিক প্রতিরোধ ছাপিয়ে মাঠে নামতেই হয় ভারতীয় দলকে। অথচ তারা মাঠে নেমে শুধু খেলেই ক্ষান্ত হয়নি, বরং পাকিস্তানের কাছে হেরেছে বিশাল ব্যবধানে। প্রথম সেটে ৩৪–৬ এবং দ্বিতীয় সেটে ৩৬–৭ ব্যবধানে হারটা যেন মাথা নত করার আরেক নাম হয়ে দাঁড়ায় ভারতের জন্য।
অবস্থাটা এতটাই স্পর্শকাতর ছিল যে, ভারতের খেলোয়াড়েরা ম্যাচে কালো বাহুবন্ধনী পরে প্রতিবাদ জানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আয়োজকদের বাধায় সেটিও সম্ভব হয়নি। এমনকি ভারতীয় কোচিং স্টাফদের জানিয়ে দেওয়া হয়, এমন ‘পলিটিক্যাল স্টেটমেন্ট’ টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়ার কারণ হতে পারে।
ভারতের হ্যান্ডবল ফেডারেশনের নির্বাহী পরিচালক আনন্দেশ্বর পান্ডে বলেন, “আমরা শুরুতে ম্যাচ বয়কটের কথা ভাবছিলাম। তবে আন্তর্জাতিক হ্যান্ডবল ফেডারেশন ও আয়োজকদের কড়া অবস্থানের কারণে শেষ পর্যন্ত দলকে খেলতেই হয়েছে। এখন যদি সেমিফাইনাল বা ফাইনালে আবার পাকিস্তানের মুখোমুখি হতে হয়, আমরা তখন সরকারের নির্দেশনার অপেক্ষায় থাকব।”
আরও পড়ুন: শেষ ম্যাচ জিতে হোয়াইটওয়াশ এড়ালো নিউজিল্যান্ড ‘এ’

রাজনৈতিক অস্থিরতা, যুদ্ধাবস্থা আর ক্রীড়াঙ্গনের টানাপোড়েন—সব মিলিয়ে হ্যান্ডবলের এই ম্যাচ যেন পরিণত হয়েছে এক গভীর প্রতীকীতে। যেখানে খেলাধুলার মাঠও হয়ে উঠেছে কূটনীতির বার্তাবাহক।
চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল হবে ১৫ মে। আর চ্যাম্পিয়ন দল খেলবে ২০২৬ সালের বিচ হ্যান্ডবলের বিশ্বকাপে। তবে ভারতীয় হ্যান্ডবল দল কী সেই পর্যায়ে যেতে পারবে, তার চেয়ে বড় প্রশ্ন এখন—পাকিস্তানের বিপক্ষে আরেক ম্যাচ এলে তারা আদৌ খেলবে তো?