সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে থেকে বাংলাদেশ ফুটবলে ছিলো এক অন্যরকম উত্তেজনা। হামজা চৌধুরী, শমিত সোম, ফাহমিদুল ইসলাম নতুন এই তিন প্রবাসী ফুটবলারকে নিয়ে দল সাজানোর পর আশা করা হচ্ছিল, এবার বোধ হয় সেই চেনা গল্পটা বদলাবে। কিন্তু না, ঢাকার স্টেডিয়ামে প্রায় হাজার বিশেক দর্শকের সামনে শেষটা হলো পুরনো হতাশার মতোই। ২-১ গোলের ব্যবধানে হেরে গেছে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: ওপেনিংয়ে লাবুশেন, ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার শক্তিশালী একাদশ
এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের এই হার এক রকম ধাক্কা হয়ে এলেও এখনও গ্রুপ-সি’তে টিকে আছে বাংলাদেশের স্বপ্ন। কেননা একইদিনে হংকংয়ের কাছে ১-০ গোলে হেরে গেছে ভারত। দুই দলের ঝুলিতেই এখন রয়েছে একটি করে পয়েন্ট, কিন্তু গোল ব্যবধানে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। তাই তাদের অবস্থান ভারতের ওপরে, তৃতীয় স্থানে।
গ্রুপ-সি’তে এখনও বাকি আছে ৪টি করে ম্যাচ। এবং এই চার ম্যাচই হয়ে উঠতে পারে হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার দলের ভাগ্য নির্ধারক। কারণ এখান থেকেই শুরু হবে কঠিন অঙ্ক কষার পালা। সিঙ্গাপুর এবং হংকং এখন পর্যন্ত একটি করে জয় ও একটি করে ড্র নিয়ে এগিয়ে আছে। সিঙ্গাপুর যদি বাকি সব ম্যাচ জিতে, তাদের পয়েন্ট হবে ১৬। বাংলাদেশের সামনে সর্বোচ্চ সুযোগ ১৩ পয়েন্ট পর্যন্ত যাওয়ার। অর্থাৎ শীর্ষে যেতে হলে এখন শুধু নিজের ম্যাচ জিতলেই চলবে না, তাকিয়ে থাকতে হবে অন্যদের দিকেও।
আরও পড়ুন: এনগিডিকে নিয়েই ফাইনালে নামছে প্রোটিয়ারা
বাংলাদেশের পরের দুই ম্যাচই হংকংয়ের বিপক্ষে, প্রথমটি ঢাকায়, আর দ্বিতীয়টি হংকংয়ে। এই দুই ম্যাচেই যদি পূর্ণ ৬ পয়েন্ট পাওয়া যায়, তাহলে বাছাইপর্বের শেষ দিকে গিয়ে লড়াইয়ে বেশ ভালোভাবে ফিরতে পারবে বাংলাদেশ। তবে যদি একটিতেও হোঁচট খায়, তাহলে সেই সমীকরণ হয়ে যাবে আরও কঠিন। এরপর সামনে থাকবে ভারত এবং সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচ। এই দুটি ম্যাচেও পূর্ণ ৬ পয়েন্ট পেলে মোট পয়েন্ট দাঁড়াবে ১৩।
তবে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর উভয়েই যদি ১৩ পয়েন্ট করে অর্জন করে, তাহলে দেখা হবে ‘হেড-টু-হেড’ ফল। সেখানে দুই দলেরই একটিতে জয়, একটিতে হার থাকলে সমতা হবে। তখন গোল ব্যবধান দেখা হবে। তাতেও যদি সমান হয়, তবে এগিয়ে থাকবে যে দল বেশি গোল করেছে। অর্থাৎ এখন থেকে প্রতিটি গোলই হয়ে উঠতে পারে টুর্নামেন্ট ভাগ্য বদলের হাতিয়ার।
আরও পড়ুন: ভক্তদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে হামজার বার্তা, ‘আবার ফিরবো, ইনশাআল্লাহ’
মাঠের ফলাফল এখন কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার জন্য কঠিন এক পরীক্ষা। অনেক দিন ধরে দলে নতুন চেহারা, নতুন কৌশল নিয়ে কাজ করছেন তিনি। কিন্তু এই হারের পর মাঠের ভেতরেই তার প্রমাণ দিতে হবে দলে প্রবাসী যোগে আশা বাড়লেও, মাঠের প্রাপ্তিটাও যেন বাড়ে। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে হতাশা দিয়ে শেষ হলেও, জাতীয় দলের জন্য অপেক্ষা শেষ হয়নি। বরং নতুন করে শুরু হবে অক্টোবরে। পাঁচ দিনের ব্যবধানে দুইবার হংকংয়ের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। সেই ম্যাচগুলো জিতলেই আবারও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে এশিয়ান কাপের স্বপ্ন।