বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের ম্যাচে ভিন্নরকম অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে গেল দক্ষিণ আমেরিকার দুই পরাশক্তি দল—আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল। একদিকে স্কালোনির পরীক্ষামূলক দল জয় তুলে নিয়ে পথচলায় ধরে রাখলো ধারাবাহিকতা, অন্যদিকে আনচেলত্তির অধীনে প্রথম ম্যাচেই হতাশ করলো ব্রাজিল।
চিলির মাঠে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা যেন ছিলেন ভারমুক্ত, নির্ভার। বিশ্বকাপের টিকিট অনেক আগেই নিশ্চিত হয়ে গেছে, ফলে এই ম্যাচটিকে ভবিষ্যতের জন্য নতুনদের যাচাই করার এক সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে দেখছিলেন লিওনেল স্কালোনি। আর সে সুযোগকে পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে দিয়েছে তরুণ দলটি।
আরও পড়ুন: ইতিহাস গড়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে উজবেকিস্তান

১৬ মিনিটে থিয়াগো আলমাদার পাস থেকে গোলটি করেন হুলিয়ান আলভারেজ। পুরো ম্যাচেই মাঝমাঠে ও আক্রমণে দারুণ সমন্বয় দেখা যায় আর্জেন্টাইনদের। দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নামেন লিওনেল মেসিও। প্রায় তিন মাস পর আর্জেন্টিনার হয়ে ফেরেন তিনি, যদিও গোল পাননি। তবে মেসির উপস্থিতিতে দল যেন পেল বাড়তি আত্মবিশ্বাস। ম্যাচের শেষদিকে গিলিয়ানো সিমিওনে একটি সহজ সুযোগ মিস করলেও তাতে জয় নিয়ে সমস্যা হয়নি। এই জয়ে আর্জেন্টিনার পয়েন্ট দাঁড়ালো ৩৪, ১৫ ম্যাচ শেষে রয়েছে তারা পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে।
অন্যদিকে নতুন অধ্যায়ের শুরুটা মোটেও সুখকর হলো না ব্রাজিলের জন্য। বিশ্বকাপজয়ী কোচ কার্লো আনচেলত্তিকে নিয়ে নতুন আশা জাগিয়েছিল সমর্থকরা। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল পুরনো সমস্যার পুনরাবৃত্তি।

ইকুয়েডরের মাঠে গোলশূন্য ড্র করে মাঠ ছাড়তে হলো সেলেসাওদের। পুরো ম্যাচজুড়ে ছিল ছন্দহীনতা, আক্রমণে অনিয়মিত চাপ এবং মাঝেমাঠে অগোছালো পাসিং। কয়েকটি মুহূর্তে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলা গেলেও গোল আদায়ে কার্যকর ছিল না ব্রাজিল। একমাত্র উল্লেখযোগ্য সুযোগ এসেছিল কাসেমিরোর শট থেকে, যেটি ফিরিয়ে দেন ইকুয়েডরের গোলরক্ষক ভালে।
আরও পড়ুন: রোনালদোর গোলে ফাইনালে পর্তুগাল
দ্বিতীয়ার্ধে রিচার্লিসন, এস্তেভাওকে উঠিয়ে মার্টিনেল্লি ও কুনহাকে মাঠে নামিয়ে আনচেলত্তি পরিবর্তন আনতে চাইলেও খেলায় বড় কোনো পার্থক্য দেখা যায়নি। উল্টো ম্যাচের শেষ ভাগে ইকুয়েডরই একের পর এক আক্রমণে ব্রাজিলের রক্ষণকে চাপের মুখে ফেলে দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত অবশ্য গোল মেলেনি, ভাগ করে নিতে হয় পয়েন্ট।

১৫ ম্যাচে মাত্র ২২ পয়েন্ট নিয়ে এখন দক্ষিণ আমেরিকার বাছাইপর্বে চতুর্থ অবস্থানে ব্রাজিল। তুলনায় ইকুয়েডরের ঝুলিতে রয়েছে ২৫ পয়েন্ট, যা তাদের দ্বিতীয় স্থানে রেখেছে।
একই রাতে দুই পরাশক্তির ভিন্ন চিত্র। যেখানে আর্জেন্টিনা তরুণদের ঝলকে আত্মবিশ্বাসী ও পরিপক্ব, সেখানে ব্রাজিল নতুন কোচের অধীনেও পরিচিত সমস্যায় জর্জরিত। আনচেলত্তির ব্রাজিলকে তাই এখনও গুছিয়ে উঠতে হবে অনেক দিকেই।
আরও পড়ুন: ফাহমিদুল দশে দশ, হতাশ করেননি তাজ-কাজেমও