“কী দুর্দান্ত টাইমিং, অবিশ্বাস্য এক ট্যাকল, দারুণ সেভ চৌধুরীর।”
হামজাকে নিয়ে কমেন্ট্রি বক্সে ঠিক এভাবেই প্রশংসায় ফেটে পড়েন ধারাভাষ্যকাররা। কার্ডিফ সিটির বিপক্ষে ম্যাচে এতটাই দুর্দান্ত খেলেছেন বাংলাদেশের হামজা চৌধুরী।
এই ম্যাচের শুরু থেকেই ডান প্রান্তের ফুলব্যাক হিসেবে খেলেন হামজা, যেখানে তাঁর সহজাত পজিশন ছিল না। তবু যেন তিনি ছিলেন পুরো মাঠের নিয়ন্ত্রক। রক্ষণ সামলে বারবার উপরে উঠে আক্রমণেও ভরসা দিয়েছেন। বল পায়ে দৌড়েছেন, প্রতিপক্ষের আক্রমণ ঠেকিয়ে দিয়েছেন, আর ম্যাচের সবচেয়ে নাটকীয় মুহূর্তে বাঁচিয়ে দিয়েছেন নিশ্চিত গোল।
“আমি জানতাম, হামজা এই জায়গায় খেলতে পারে। লেস্টারে ওর এমন পারফরম্যান্স দেখেছি। আর আজকের ম্যাচে ও যা করেছে, সেটা ছিল নিঃসন্দেহে অসাধারণ!”

আরও পড়ুন: হামজার নৈপুণ্যে জয়ে ফিরল শেফিল্ড
শেফিল্ড ইউনাইটেডের কোচ ক্রিস ওয়াইল্ডারের কণ্ঠে এমন প্রশংসাই যেন বলে দিচ্ছিল— দলের এই জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান যাঁর, তিনি বাংলাদেশের হামজা চৌধুরী।
ম্যাচের ৪১ মিনিটে যখন কার্ডিফের উইল আলভেস একক দৌড়ে ঢুকে পড়েছিলেন শেফিল্ডের ডি-বক্সে, তখন পুরো মাঠ থমকে গিয়েছিল। মনে হচ্ছিল, এবার গোল হবেই। কিন্তু ঠিক তখনই পেছন থেকে ছুটে এসে নিখুঁত এক ট্যাকল করে দলকে বড় বিপদ থেকে বাঁচান হামজা চৌধুরী। একটু এদিক-ওদিক হলেই হতে পারত পেনাল্টি, কিন্তু হামজার টাইমিং এতটাই নিখুঁত ছিল যে, প্রতিপক্ষও হয়ে যায় হতবাক!
“দৌড়ে এসে ঝাঁপিয়ে পড়ে, ডান পায়ের কী দুর্দান্ত একটা ট্যাকল! কী দারুণ টাইমিং! কী অবিশ্বাস্য এক সেভ করলেন চৌধুরী!”— ধারাভাষ্যকারদের গলায় তখন রীতিমতো বিস্ময়।

পুরো ম্যাচে হামজার খেলাও ছিল চোখে পড়ার মতো। বল টাচ করেন ৬৮ বার, পাস দেন ৩৮টি, যার মধ্যে ৩১টিই সফল (৮২%)। দুটি সফল লং বল, চারটি নিখুঁত ট্যাকল, চারটি গ্রাউন্ড ডুয়েল জয়, একটি এরিয়াল ডুয়েল, একটি শট ব্লক, এবং ইন্টারসেপশন— মাঠের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছায়ার মতো ছিলেন তিনি।
এতসবের পর কোচের প্রশংসাও ছিল একেবারে প্রাপ্য, “হামজা নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে ভীষণ সচেতন। চ্যালেঞ্জ নিতে ভয় পায় না। আজকের ম্যাচে তার অবদান ছিল চোখে পড়ার মতো। ও আমাদের ডান দিকটা পুরোপুরি সামলে রেখেছিল।”

আরও পড়ুন: সোবার্স-রিচার্ডসের পাশে নাম, বাবর ছাড়িয়ে যাবেন কোহলিকেও
এ জয়ের মাধ্যমে টানা তিন ম্যাচ হারার পর ঘুরে দাঁড়িয়েছে শেফিল্ড ইউনাইটেড। এখন ৪৩ ম্যাচে ৮৬ পয়েন্ট নিয়ে তারা অবস্থান করছে চ্যাম্পিয়নশিপ টেবিলের তিনে। সামনের ম্যাচগুলো ঠিকঠাকভাবে জিততে পারলে সরাসরি প্রিমিয়ার লিগে জায়গা করে নেওয়ার সুযোগ থাকছে। আর সেই স্বপ্নপথে সবচেয়ে বড় ভরসা— বাংলাদেশের হামজা চৌধুরী।