দেশের ফুটবলে আবারও সৃষ্টি হয়েছে গণজাগরণ। ইংল্যান্ড থেকে হামজা চৌধুরীর আসার পর থেকেই ফুটবল ভক্তদের আগ্রহ বেড়েছে আরও। তবে একই সঙ্গে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের স্কোয়াড থেকে ফাহামিদুল বাদ পড়ায় শুরু হয়েছে সমালোচনা। অনেকেই মনে করছেন, সিন্ডিকেটের শিকার হয়েই তরুণ ফুটবলার সৌদি আরবের অনুশীলন শেষ করেই ইতালি ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সমর্থকরা, যা শেষ পর্যন্ত ক্রীড়া উপদেষ্টার দপ্তর পর্যন্ত গড়ায়।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ফাহামিদুলের বাদ পড়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই ফুটবল ভক্তরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। বিকাল থেকেই মতিঝিল, বাফুফে ভবনের সামনে এবং ঢাকার বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ মিছিল করেন তারা। তাদের একটাই দাবি— ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগেই দলে ফিরিয়ে আনতে হবে ফাহামিদুলকে।
এ প্রসঙ্গে ক্রীড়া উপদেষ্টার দপ্তর থেকে জানানো হয়, উপদেষ্টা নিজে ফাহামিদুল ইস্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতির সঙ্গে কথা বলবেন।
বুধবার (১৯ মার্চ) বাফুফে সভাপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এসময় ফুটবলে চলমান সংকট নিয়ে আলোচনা করেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল।
প্রেস রিলিজে জানানো হয়, এএফসি এশিয়ান কাপ ২০২৭ কোয়ালিফিকেশনে বাংলাদেশ দলের অংশগ্রহণের আগে সৃষ্ট সংকট নিয়ে আলোচনা করা হয়। সমর্থকদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বাফুফে সভাপতি বলেন, ‘ফুটবল ফেডারেশনে সিন্ডিকেটের কোনো সুযোগ নেই। যোগ্যতা অনুযায়ী সবাই সুযোগ পাবে। যদি কোনো অনিয়মের আভাস পাওয়া যায়, ফেডারেশন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’
ফাহামিদুল ইস্যুতে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তাকে বাদ দেইনি, সে প্রতিভাবান খেলোয়াড়। তাকে আরও সময় দিতে চেয়েছি। আগামী জুনে বাংলাদেশের ঘরের মাঠে ম্যাচ রয়েছে, সেখানেই তাকে সুযোগ দেওয়া হতে পারে। সমর্থকদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই।’
এছাড়া সিন্ডিকেট নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘দেশের স্বার্থেই যোগ্য খেলোয়াড়দের বঞ্চিত করার কোনো সুযোগ নেই। প্লেয়ার সিলেকশনে স্বজনপ্রীতি বা সিন্ডিকেট যেন না হয়, সে বিষয়ে বাফুফেকে সজাগ থাকতে হবে। যদি কোনো দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায়, সরকার জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে কোনো সংকট মোকাবিলায় বাফুফেকে আরও সুদৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে। বাংলাদেশ দলের জন্য শুভকামনা। হামজার অন্তর্ভুক্তি দলকে আরও আত্মবিশ্বাসী করবে, এবং আমরা ইতিবাচক ফল আশা করছি।’
অন্য দিকে বৈঠকে হামজা চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন। ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে হামজা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসায় আমি আপ্লুত। দেশের ফুটবলকে সামনে এগিয়ে নিতে আমি আপ্রাণ চেষ্টা করব।’
ক্রীড়া উপদেষ্টাও হামজার প্রশংসা করে বলেন, ‘হামজার মতো খেলোয়াড়ের উপস্থিতি প্রতিপক্ষের জন্য চাপের কারণ হবে।’