ইউরোপা লিগে লাৎসিওর বিদায়, আর অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের দুর্দান্ত এক জয়ের পর হিসাবের খাতা ঘেঁটে উয়েফা জানিয়ে দিল— চ্যাম্পিয়ন্স লিগের পরবর্তী আসরে লা লিগা পাবে অতিরিক্ত একটি দল। অর্থাৎ, স্পেনের শীর্ষ লিগ থেকে এবার ইউরোপের সেরা প্রতিযোগিতায় খেলবে মোট পাঁচটি দল।
ইউরোপীয় ফুটবলের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, তিনটি মহাদেশীয় টুর্নামেন্টে— চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ইউরোপা লিগ ও কনফারেন্স লিগে— দেশভিত্তিক ক্লাবগুলোর সম্মিলিত পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয় ‘ইউরোপিয়ান পারফরম্যান্স স্পট’ বা ইপিএস। এই ইপিএস র্যাংকিংয়ের শীর্ষ দুই দেশের জন্য বরাদ্দ থাকে অতিরিক্ত একটি করে টিকিট।
প্রিমিয়ার লিগ এই দৌড়ে অনেক আগেই এগিয়ে ছিল। দ্বিতীয় স্থান নিয়ে রোমাঞ্চকর লড়াই শেষে বৃহস্পতিবার সেই কোটা নিশ্চিত করে লা লিগা। কারণ, ইউরোপা লিগে লাৎসিওর বিদায় এবং অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের রেঞ্জার্স বধ— এই দুই ফলেই স্পেন উঠে আসে শীর্ষ দুইয়ে।
আরও পড়ুন: নিগারদের লড়াইটা শুধু পাকিস্তানের সঙ্গে নয়, সমীকরণের সঙ্গেও!
এতে করে নিশ্চিত হয়, স্প্যানিশ লিগের পঞ্চম দলটিও খেলবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে। প্রিমিয়ার লিগেও ঘটবে একই ঘটনা— যার মানে, দুটি বড় লিগ থেকে এবার পাঁচটি করে দল পাবে ইউরোপের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ক্লাব আসরে অংশ নেওয়ার সুযোগ।
প্রিমিয়ার লিগে এরই মধ্যে পয়েন্ট টেবিলের চেহারা হালকা গোলমেলে। তৃতীয় স্থানে থাকা নিউক্যাসলের পয়েন্ট ৫৯, ঠিক তার পেছনে ৫৭ পয়েন্ট নিয়ে নটিংহ্যাম ফরেস্ট। পঞ্চম স্থানে আছে ৫৫ পয়েন্ট পাওয়া ম্যানচেস্টার সিটি। আর তাদের ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস ফেলছে ৫৪ পয়েন্ট করে চেলসি ও অ্যাস্টন ভিলা। শেষ পর্যন্ত কে পঞ্চম হবে— এখনই বলা যাচ্ছে না।
লা লিগায় শীর্ষ চার দল প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে। কিন্তু পঞ্চম পজিশনের লড়াই রয়ে গেছে জমজমাট। ভিয়ারিয়াল ৫১ পয়েন্ট নিয়ে এগিয়ে, তাদের একটি ম্যাচ হাতে রয়েছে। তাড়ার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল বেতিস, যাদের সংগ্রহ ৪৮ পয়েন্ট।
তবে ইউরোপে জায়গা পাওয়ার খাতাটা এখানেই বন্ধ হচ্ছে না। আর্সেনাল যদি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতে এবং ঘরোয়া লিগে প্রথম চারে থেকেই যায়, তাহলে আলাদা কোনো দল বাড়বে না। কিন্তু যদি টটেনহ্যাম বা ম্যান ইউনাইটেড ইউরোপা লিগ জিতে আর লিগে পঞ্চমের নিচে থাকে, তাহলেও তারা সরাসরি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলবে— শিরোপাজয়ীদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে নির্দিষ্ট কোটা।
এমনকি কনফারেন্স লিগে চেলসি যদি চ্যাম্পিয়ন হয় এবং প্রিমিয়ার লিগে ইউরোপীয় কোনো স্থানে না থাকতে পারে, তাহলেও ইংল্যান্ড থেকে ইউরোপে অংশ নেওয়া ক্লাবের সংখ্যা পৌঁছাতে পারে ১০-এ।
আরও পড়ুন: কারো নাম বেঁচে খাওয়া উচিত না: ফি’ক্সিং ইস্যুতে সাব্বির
গতবার এই বাড়তি কোটা পেয়েছিল ইতালিয়ান সিরি আ এবং জার্মান বুন্দেসলিগা। এবার সেই তালিকায় যোগ দিল লা লিগা, নিশ্চিত করল নিজেদের পাঁচটি প্রতিনিধি নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অংশগ্রহণ।
এতসব হিসেব-নিকেশে পরিষ্কার, ইউরোপের নতুন নিয়মে শুধু ঘরোয়া লিগ ভালো করলেই হবে না, ইউরোপিয়ান মঞ্চে পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা থাকাও জরুরি। আর সেই ধারাবাহিকতায় এবার বাজিমাত করেছে স্পেন।