বৃহস্পতিবার, জুন ২৬, ২০২৫
সামি'স কর্নার

শ্রাবণের পাশে দাঁড়ালেন সেই ফাহমিদুল

‘যে মোরে দিয়েছে বিষে ভরা বাণ, আমি দেই তারে বুকভরা গান।’

পল্লীকবি জসিমউদ্দীনের সেই কালজয়ী লাইন যেন মনে করিয়ে দিলেন ফাহমিদুল ইসলাম। বাংলাদেশের ফুটবলে সাম্প্রতিক নবজাগরণের অন্যতম অংশ তিনি, কিন্তু সৌদি আরবে জাতীয় দলের ক্যাম্পে যোগ দিলেও এবার মাঠে নামার সুযোগ পেলেন না। ভারতের বিপক্ষে এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের ম্যাচেও নেই তার নাম।

এই খবরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীরা। গুঞ্জন ছড়ায়, ফাহমিদুলের বাদ পড়ার পেছনে হাত রয়েছে জাতীয় দলের গোলকিপার মেহেদী হাসান শ্রাবণের। দৈনিক যুগান্তরের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, শ্রাবণ নাকি অনুশীলনে ফাহমিদুলকে সহযোগিতা করেননি। এরপর থেকেই শ্রাবণের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন সমর্থকরা, সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

তবে এবার সেই শ্রাবণের পাশেই দাঁড়ালেন ফাহমিদুল ইসলাম। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লেখেন—

‘আমি লক্ষ্য করেছি, মাঠের একটি অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বিভিন্ন তথ্য ছড়িয়ে পড়ছে, যার সবই সত্য নয়। খেলাধুলায় মাঝেমাঝে ভুল বোঝাবুঝি হয়, তবে তা দলের ভেতরেই থাকা উচিত। কারণ, প্রতিটি খেলোয়াড়ই দেশ ও দলের জন্য নিবেদিত।

মেহেদী হাসান শ্রাবণ দীর্ঘদিন ধরে কঠোর পরিশ্রম ও নিষ্ঠার সঙ্গে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করছেন। তিনি একজন পেশাদার ফুটবলার, যিনি সবসময় দলের জন্য সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কোনো খেলোয়াড়েরই এসবের শিকার হওয়া উচিত নয়, বিশেষ করে সমর্থকদের কাছ থেকে, যারা তাদের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা হওয়া উচিত।

বাংলাদেশের জার্সিতে শ্রাবণ

একজন ফুটবলপ্রেমী হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হলো খেলোয়াড়দের পাশে থাকা, তাদের প্রচেষ্টাকে সম্মান জানানো এবং প্রতিটি চ্যালেঞ্জে তাদের সাহস দেওয়া। আসুন, আমাদের ক্রীড়াবিদদের মনোবল ভাঙার বদলে তাদের অনুপ্রাণিত করি।’

এর আগে, নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজেও ফাহমিদুল জানান, এবার না হলেও ভবিষ্যতে তিনি বাংলাদেশের হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখেন। তিনি লেখেন—

‘বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা ও সমর্থনের জন্য আমি কৃতজ্ঞ। ইনশাআল্লাহ, যদি সৃষ্টিকর্তা চান, একদিন আমি লাল-সবুজের জার্সি গায়ে মাঠে নামব এবং দেশকে প্রতিনিধিত্ব করব। সেই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে আমি কঠোর পরিশ্রম চালিয়ে যাব।’

বাংলাদেশের সাথে অনুশীলনে ছিলেন ফাহমিদুল

বাংলাদেশের কোচ কাবরেরা এবং বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়ালও নিশ্চিত করেছেন, ভবিষ্যতে জাতীয় দলে ফাহমিদুলের সুযোগ আসবে। কাবরেরা বলেন, ‘ফাহমিদুল অত্যন্ত মেধাবী ফুটবলার। ভারতের বিপক্ষে না খেললেও ভবিষ্যতের পরিকল্পনায় তিনি আছেন।’

সবশেষে, এমন পরিস্থিতিতেও ফাহমিদুলের শ্রাবণের পাশে দাঁড়ানো নতুন এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করল। বয়স কম হলেও তার হৃদয়ের বিশালতা ফুটে উঠল ভালোবাসা আর শ্রদ্ধায়—যেখানে নেই কোনো বিদ্বেষ, শুধু সৌহার্দ্যের বার্তা।

আরও খবর

একটি মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ খবর

জনপ্রিয় খবর