বৃহস্পতিবার, জুন ২৬, ২০২৫
সামি'স কর্নার

রাইসের আধিপত্যে অসহায় আত্মসমর্পণ রিয়ালের

এমিরেটসে লেখা হলো এক ইংরেজ রূপকথা। আর্সেনাল মিডফিল্ডারের নামের আগে অনেক তকমা জুড়ে দেওয়া যায়। কিন্তু এই রাতের পর ডেকলান রাইসের নামের পাশে নতুন আরেকটা পরিচয় জুড়ে গেল— “গল্পকার”।

রাতটা তার ছিল। শুরু থেকে শেষ— পুরো ম্যাচজুড়ে রাইস ছিলেন আর্সেনালের ছায়া অধিপতি। মাঠের প্রতিটি ইঞ্চিতে তার শাসন। বল দখল, প্রতিপক্ষের আক্রমণ ভাঙা, আবার নিজেই ছুটে গিয়ে প্রতিআক্রমণ সাজানো— সবকিছুতেই ছিল রাইসের ছোঁয়া। এরসাথে রিয়ালের লেফট সাইডে যেভাবে আলাবাকে নাচিয়েছে বুকায়ো সাকা, তাতে ম্যাচটা সেখানেই মাদ্রিদের জন্য শেষ হয়ে গিয়েছিল।

আরও পড়ুন: প্রিয়াংশের রেকর্ডগড়া শতকে পাঞ্জাবের সহজ জয়

যদিও প্রথমে সুযোগ পেয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদই। কিন্তু, এমবাপে-ভিনিসিয়াসরা ফিনিশিংয়েই করে ফেলছিল গড়বড়। গোলমুখে এসে নিজেদের ধারহীনই প্রমাণ করল তারা। সেই সুযোগ না কাজে লাগানোর মাশুল যে কতটা বড় হতে পারে, তা বুঝতে পেরেছে দ্বিতীয়ার্ধে।

বিরতির পর রিয়াল মাদ্রিদকে যেন খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিল না। মিডফিল্ড থেকে রক্ষণ কোথাও নেই রিয়াল মাদ্রিদের ছন্দ। আক্রমণেও তাই যাওয়া হচ্ছিল না এমবাপে-ভিনিসিয়াসদের। যেখানে ম্যাচের শেষ মিনিট পর্যন্ত গোলের জন্য মরিয়া ছিল আর্সেনাল, সেখানে নিজেদের ছায়া হয়ে মাঠে হেঁটে বেড়িয়েছে রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়রা।

কিন্তু রাতটা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে সেই দুইটি ফ্রি কিকের জন্য। প্রথমটায় বল উড়িয়ে দিলেন কর্তোয়ার মাথার ওপর দিয়ে— যেন শূন্যে আঁকা নিখুঁত শিল্পকর্ম। দ্বিতীয়টা ছিল আরও নির্দয়— পোস্ট ছুঁয়ে জালে ঢোকা বল যেন ঘোষণাই দিল, এই রাতে রিয়ালের রক্ষাকবচ কর্তোয়াও রাইসের সামনে নতজানু। অথচ, পুরো ম্যাচে রিয়ালের বেলজিয়ান এই গোলরক্ষক যেভাবে দলকে বাচিয়ে গিয়েছে, তাতে কমপক্ষে আরও ৪টা গোল কমই হজম করেছে মাদ্রিদিস্তারা। যদিও শেষ পর্যন্ত ঘরের মাঠে ৩-০ গোলের ব্যবধানে জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে স্বাগতিক আর্সেসেনাল। ৫৮, ৭০ আর ৭৫। এই ১৭ মিনিটের ঝড়েই বড় হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় রিয়ালের।

আরও পড়ুন: ঢাকার পাশাপাশি সিলেট-চট্টগ্রামেও হামজাদের ম্যাচ আয়োজনের ভাবনায় বাফুফে

তবে এদিন এমিরেটস মেতেছে রাইসের নামধ্বনিতে। এক প্রজন্মের নতুন আইকন জন্ম নিল এই মঞ্চে। ম্যাচ শেষে ওডেগার্ড, সাকা, মার্টিনেল্লি সবাই যখন তাকে জড়িয়ে ধরলেন— বোঝা গেল এই রাত শুধুই গোল নয়, এই রাত নেতৃত্বের জন্মের।

এদিন এমিরেটস মেতেছে রাইসের নামধ্বনিতে। এক প্রজন্মের নতুন আইকন জন্ম নিল এই মঞ্চে। ম্যাচ শেষে ওডেগার্ড, সাকা, মার্টিনেল্লি সবাই যখন তাকে জড়িয়ে ধরলেন— বোঝা গেল এই রাত শুধুই গোল নয়, এই রাত নেতৃত্বের জন্মের।

রিয়াল মাদ্রিদ? তারা হয়তো ভাবেনি, এমবাপ্পে-ভিনিসিয়াসদের চেয়ে বড় হুমকি হয়ে উঠবে ডেকলান রাইস।

এখন প্রশ্ন একটাই— এই রূপকথা কি এখানেই শেষ? নাকি সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে গিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ লিখবে নতুন এক গল্প— শেষ হাসিটা কে হাসে তাই দেখার অপেক্ষায় ফুটবলপ্রেমীরা।

রাতের অন্য কোয়ার্টার ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখের দুর্ভেদ্য ঘর ভেঙে ইতিহাস গড়েছে ইন্টার মিলান। নিজেদের মাঠে টানা ২২ ম্যাচ ধরে অপরাজিত থাকা বায়ার্নকে অবশেষে থামিয়ে দিয়েছে ইতালিয়ান ক্লাবটি। ম্যাচের ৩৮তম মিনিটেই প্রথম লক্ষ্যে নেয়া শট থেকেই গোল আদায় করে নেয় ইন্টার। দলের গোলস্কোরার লাউতারো মার্টিনেজের নিখুঁত ফিনিশিংয়ে এগিয়ে যায় সফরকারীরা। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে ফেরার জন্য আক্রমণের ধার বাড়ায় বায়ার্ন। তাদের দীর্ঘ চেষ্টার ফল আসে ৮৫তম মিনিটে।

বিদায়ী মৌসুমে খেলতে নামা টমাস মুলারের গোলে সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা। তবে ম্যাচের নিয়তি পাল্টাতে আর বেশি সময় নেয়নি ইন্টার। মাত্র তিন মিনিট পরই ফের গোলের দেখা পায় তারা। ৮৮তম মিনিটে ফ্রাত্তেসির গোলে আবারও লিড নেয় অতিথিরা। শেষ পর্যন্ত এই জয় ধরে রেখেই মাঠ ছাড়ে ইন্টার মিলান। ফলে সেমিফাইনালের পথে বড় এক ধাপ এগিয়ে গেল তারা। দ্বিতীয় লেগে ১৬ এপ্রিল নিজেদের মাঠে ফিরবে ইন্টার।

আরও খবর

একটি মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ খবর

জনপ্রিয় খবর