ইগান রাইলির আচরণে ক্ষোভে ফুঁসছে বাংলাদেশি ফুটবল ভক্তরা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার শিকার এই ইংলিশ ফুটবলার। বাংলাদেশি হামজা চৌধুরীর সঙ্গে অশোভন ও অপমানজনক আচরণ করায় তাকে তুলোধোনা করছেন ভক্তরা।
শুধু মাঠে খেলার ফলেই নয়, শেফিল্ড ইউনাইটেডের সেই রাতটা মনে থাকবে আরও একটি বিশেষ কারণে— যেখানে প্রতিপক্ষ বার্নলির কাছে ২-১ গোলে হারের চেয়েও বেশি কষ্ট দিয়েছে একজন ফুটবলারের প্রতি অন্যায় আচরণ। ম্যাচের শেষ দিকে হামজা চৌধুরীর সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়ান বার্নলির ডিফেন্ডার সিজে ইগান রাইলি, যার মধ্যে ছিল অপমানজনক ভঙ্গি, তর্কাত্মক ভাষা এবং একপর্যায়ে ভেংচি কাটা।
আরও পড়ুন: হারা ম্যাচেও দুর্দান্ত হামজা পড়লেন প্রতিপক্ষের রোষানলে

মাঠে এমন আচরণের পরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বাংলাদেশি ফুটভক্তরা। একের পর এক পোস্ট, ভিডিও, স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়ে টুইটার ও ফেসবুকে, ইনস্টাগ্রামের কমেন্ট বক্সে বাংলাদেশিদের মন্তব্যে সয়লাব। সবার একই দাবি, হামজার সঙ্গে কোনও রকম বেয়াদবি চলবে না। অনেকেই সরাসরি রাইলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন, কেউ আবার এটিকে বর্ণবৈষম্যমূলক আচরণের ইঙ্গিত হিসেবেও ব্যাখ্যা করেছেন। হামজার প্রতি এমন আচরণ শুধু একজন ফুটবলারের প্রতি অবমাননাই নয়— এটি যেন গোটা এক সম্প্রদায়ের আবেগে আঘাত।
এদিকে পুরো ম্যাচজুড়েই মাঝমাঠে নিখুঁত নিয়ন্ত্রণ, পাসিং ও ডিফেন্সিভ কভার দিয়ে নজর কাড়েন হামজা। প্রায় ৯০ শতাংশ সফল পাস, সাতবার বল উদ্ধার, পাঁচটি ক্লিয়ারেন্স— সব মিলিয়ে তার পারফরম্যান্স ছিল প্রশংসনীয়। অথচ সেই পারফরম্যান্সকেও ছাপিয়ে গেছে ম্যাচশেষে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনাগুলো।
শেফিল্ড কোচ ক্রিস উইল্ডার সরাসরিই ক্ষোভ ঝাড়েন নিরাপত্তা নিয়ে, “যেখানে নিরাপত্তা থাকা উচিত ছিল, সেখানে কাউকেই দেখা যায়নি। হামজার সঙ্গে যা হয়েছে, সেটা বন্ধুত্বপূর্ণ তো নয়ই, বরং সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।”
আরও পড়ুন: হামজাদের হারে প্রিমিয়ার লিগে ফিরল বার্নলি

ডেইলি মেইলের রিপোর্টে উঠে এসেছে, ম্যাচশেষে বার্নলির কিছু সমর্থক মাঠে ঢুকে পড়ে শেফিল্ডের খেলোয়াড়দের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় হামজাকে উত্তেজিত অবস্থায় দেখা যায়, আর ইগান রাইলিকে ক্যামেরায় ধরা পড়ে ভেংচি কাটতে। ধারাভাষ্যকাররাও বলছিলেন, “এই শান্ত স্বভাবের ছেলেটিও আজ উত্তেজনায় ফেটে পড়েছে, কিছু একটা তো নিশ্চয়ই ঘটেছে।”
একদিকে মাঠে হারের যন্ত্রণা, অন্যদিকে এমন অপমানজনক অভিজ্ঞতা— দুটি দিক থেকেই হতাশার রাত পার করেছেন হামজা চৌধুরী। তবে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন থেকে যায়— ইংলিশ ফুটবলের এই উঁচু স্তরে খেলোয়াড়রা কি আদৌ নিরাপদ?

ইগান রাইলির এই আচরণের বিরুদ্ধে এখন কণ্ঠ মিলিয়েছেন হাজারো বাংলাদেশি ফুটভক্ত। তারা শুধু ক্ষুব্ধ নয়, বরং চান— এই ঘটনার জবাব হোক দৃষ্টান্তমূলক। হামজার অপমান তারা নিচ্ছেন নিজেদের অপমান হিসেবে।