বুধবার, জুন ২৫, ২০২৫
সামি'স কর্নার

বাংলাদেশের ফাহমিদুলকে নিয়ে ওলবিয়া ক্যালসিওর উচ্ছ্বাস

গত মার্চে হুট করেই বাংলাদেশের সৌদি ক্যাম্পে ডাক পেয়ে সূদুর ইতালি থেকে ছুটে এসেছিলেন। অনুশীলনে তার খেলা দেখে অভিভূতও হয়েছিল সবাই। তবে পরবর্তীতে যখন তাকে সৌদি থেকেই ফের ইতালিতে ফেরত পাঠানো হয় এরপরেই উঠে ঝড়। ভারতের বিপক্ষে ফাহমিদুলকে না খেলানোয় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিল বাফুফে ও কোচ কাবরেরা। সেই ফাহমিদুলই এবার ভুটানের বিপক্ষে অভিষেকেই নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করলেন ।

২০১৬ সালে এই ভুটানের কাছেই হেরে হতাশার গহ্বরে ডুবে গিয়েছিলো বাংলাদেশের ফুটবল। সেই ভুটানকেই ৯ বছর পর হারিয়ে নতুন করে পথচলার ইঙ্গিত দিলো লাল-সবুজের দল। আর সেই নতুন সূচনার অন্যতম মুখ হয়ে উঠলেন ১৬ নম্বর জার্সিধারী ফাহমিদুল।

আরও পড়ুন: ফাহমিদুল দশে দশ, হতাশ করেননি তাজ-কাজেমও

ম্যাচের শুরু থেকেই চনমনে ছিলেন এই মিডফিল্ডার। তৃতীয় মিনিটেই রাকিব হোসেনের কাটব্যাকে গোলের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিলো, যদিও তা কাজে লাগেনি। এরপর কয়েক মিনিট পরেই আবারও আক্রমণ সাজান ফাহমিদুল। ম্যাচ যত এগিয়েছে, ততই তার উপস্থিতি যেন আরও দৃঢ় হয়েছে। গতি, পজিশনিং আর আক্রমণের ধার— সবদিক থেকেই নিজেকে মেলে ধরেন তিনি।

৩০ মিনিটে তার নেওয়া শট ফিরিয়ে দেন ভুটানের গোলরক্ষক। ফিরতি বলে গোলের কাছাকাছি গিয়েছিলেন জামাল ভূঁইয়া, তবে গোল হয়নি। প্রথমার্ধের শেষ দিকে হেডেও গোলের সুযোগ তৈরি করেছিলেন ফাহমিদুল, সেটিও লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তবে তার পারফরম্যান্স এতটাই চোখে পড়ার মতো ছিলো যে, দ্বিতীয়ার্ধে যখন তাকে তুলে নেওয়া হয়, পুরো স্টেডিয়াম দাঁড়িয়ে করতালিতে তাকে সম্মান জানায়।

ম্যাচ শেষে মঞ্চে নায়কের মতোই ছিলেন তিনি। গ্যালারির এক পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন তার বাবা-মা। খেলা শেষে ছুটে গিয়ে তাদের জড়িয়ে ধরার দৃশ্যটি যেন বলে দিচ্ছিল, এটি কেবল একটি ম্যাচ নয়, এটি একটি বড় স্বপ্নের শুরু। প্রবাসে বেড়ে ওঠা এই তরুণ তার প্রথম ম্যাচেই হয়ে উঠেছেন দেশের প্রতিচ্ছবি।

আরও পড়ুন: রোনালদোর গোলে ফাইনালে পর্তুগাল

তার এমন দারুণ অভিষেকের পর প্রশংসা করেছে তার ক্লাব ওলবিয়া কালসিওও। ইতালির চতুর্থ ডিভিশনের এই ক্লাবের হয়ে খেলে থাকেন তিনি। এক বিবৃতিতে তারা লিখেছে, “আমাদের তরুণ তারকার অসাধারণ অভিষেক বাংলাদেশের জার্সিতে! ১৮ হাজার দর্শকের সামনে নিজের জাত চিনিয়েছেন।”

বাংলাদেশের দুই গোল এসেছে দুই অর্ধে—প্রথমটিতে কর্নার থেকে হেডে গোল করেন হামজা চৌধুরী, দ্বিতীয়ার্ধে দুর্দান্ত এক শটে লক্ষ্যভেদ করেন সোহেল রানা। তবে ম্যাচজুড়ে যে পারফরম্যান্স সবচেয়ে আলাদা করে চোখে পড়েছে, সেটা নিঃসন্দেহে ফাহমিদুল ইসলামের।

১০ জুন এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ সিঙ্গাপুর। তার আগেই অভিষেক ম্যাচে এমন পারফরম্যান্স দিয়ে ফাহমিদুল জাতীয় দলের ভবিষ্যতের জন্য একটা বড় বার্তা দিয়ে রাখলেন— এই তরুণকে নিয়ে আশাবাদী হওয়া যায়।

আরও পড়ুন: দুর্দান্ত হামজায় ভুটানকে হারাল বাংলাদেশ

আরও খবর

একটি মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ খবর

জনপ্রিয় খবর