এক ম্যাচে এ যেনো দুই রকম বাংলাদেশ— প্রথমার্ধে চোখধাঁধানো, দ্বিতীয়ার্ধে নিষ্প্রভ। বল দখল, আক্রমণ, গোল— সব কিছুতেই প্রথমার্ধে আধিপত্য দেখিয়েছিল তারা। মনে হচ্ছিল, সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপে রাজকীয় সূচনা করতে চলেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমে যেন খেই হারিয়ে ফেলল দল। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দুই গোল ফিরিয়ে ম্যাচে সমতা আনে মালদ্বীপ।
শুক্রবার (৯ মে) ভারতের অরুনাচলে গোল্ডেন জুবিলি স্টেডিয়ামে গ্রুপ ‘এ’র প্রথম ম্যাচে ২-২ গোলের ড্র-তে শেষ হয় লড়াই।
ম্যাচের শুরু থেকেই ছন্দে ছিল বাংলাদেশ। মালদ্বীপকে চেপে ধরে খেলতে থাকে একের পর এক আক্রমণে। মাত্র ১২ মিনিটেই গোল আসে নাজমুল হুদা ফয়সালের দুর্দান্ত শটে— বক্সের বাইরে থেকে নিখুঁত প্লেসিংয়ে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ব্রাজিলিয়ান ছোঁয়ায় বেতিসের ইতিহাস, ফাইনালে ইউনাইটেডও
এরপর রিফাত কাজী একাধিকবার সুযোগ তৈরি করেন, যার মধ্যে কিছু ছিল নিশ্চিত গোলের মতো। তবে সবচেয়ে বড় আফসোসের মুহূর্ত আসে ২৫ মিনিটে— ফয়সালের দুর্দান্ত থ্রু পেয়ে গোলরক্ষককে কাটিয়ে দেওয়ার পরও লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন রিফাত, যা চোখে মুখে হতাশা ফুটিয়ে তোলে।
তবে বিরতির আগে রিফাত শাপমোচন করেন— ৪৪ মিনিটে মিঠুর চিপ পাস ধরে ডান পায়ে ঠেকিয়ে বল জালে কাঁপান। প্রথমার্ধ শেষে ২-০ গোলের লিড নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।
কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে যেন মাঠে নেমেছিল একেবারে ভিন্ন এক দল। ৫৬ মিনিটে বাংলাদেশের গোলরক্ষক মাহিন ভুলে পোস্ট ছেড়ে বের হলে মালদ্বীপের আনুফ আব্দুল্লাহ সুযোগ লুফে নেন। খালি পোস্টে বল ঠেলে ব্যবধান কমিয়ে আনেন।
এরপর মালদ্বীপ আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে, আর বাংলাদেশ যেন নিজেদের খুঁজেই পায় না। ৭৩ মিনিটে এক দুর্দান্ত রক্ষণভেদী পাস ধরে ইথান জাকি ম্যাচে ফেরান মালদ্বীপকে— ডান পায়ে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বাঁ পায়ে নিখুঁত শট।
আরও পড়ুন: মেসির কাছাকাছি ফুটবলার হতে পারবেন ইয়ামাল: বেকহ্যাম
বাকিটা সময়ে আর গোল আসেনি। শেষদিকে কর্নার পেয়েও বাংলাদেশ ফল আনতে পারেনি। বরং পাল্টা আক্রমণে একবার রীতিমতো ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল মালদ্বীপ।
প্রথমার্ধে দারুণ সূচনা, দ্বিতীয়ার্ধে ব্যর্থ রক্ষণ ও পরিকল্পনার ঘাটতি— এই মিশ্র পারফরম্যান্সের প্রতিফলনই ম্যাচের ফল। জয় ছুঁয়ে ফিরে আসার বেদনা নিয়েই মাঠ ছাড়ে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
রোববার (১১ মে) গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভুটান। সেই ম্যাচেই নির্ধারণ হবে সেমিফাইনালের পথ।