আন্তর্জাতিক বক্সিং অঙ্গনে প্রথম স্বর্ণপদক জিতে নিজের নাম জানান দিলেন বাংলাদেশের বক্সার উৎসব আহমেদ। থিম্পুতে আয়োজিত চার জাতির আন্তর্জাতিক বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে ৫৪ কেজি ওজন শ্রেণিতে নেপালের প্রতিদ্বন্দ্বী চন্দ্র থাপাকে হারিয়ে শীর্ষে ওঠেন বাংলাদেশ আনসারের এই তরুণ।
গ্রুপপর্বেই নিজের সামর্থ্যের জানান দেন উৎসব। স্বাগতিক ভুটানের ফোনসু কারমাকে হারিয়ে জায়গা করে নেন ফাইনালে। এরপর রোববার রাতে স্বর্ণপদক নিশ্চিত করেন থাপাকে পরাজিত করে। পুরো টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ জিতেছে আরও তিনটি ব্রোঞ্জ পদক— সেনাবাহিনীর বক্সার হোসেন আলী (৬৩ কেজি), জান্নাতুল ফেরদৌস (৪৮ কেজি) ও কায়মা খাতুন (৫০ কেজি) একটি করে ব্রোঞ্জ জেতেন।
আরও পড়ুন: বার্নাব্যুতেও রিয়ালের আত্মসমর্পণ, অবশেষে সেমিতে আর্সেনাল

এটিই উৎসবের প্রথম আন্তর্জাতিক স্বর্নপদক জয়। তাই এই পদক তাঁর ক্যারিয়ারের জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি দেশের জন্যও এক গর্বের মুহূর্ত। এই অর্জনের পর বাংলাদেশ বক্সিং ফেডারেশন আয়োজন করে একটি সংবর্ধনার, যেখানে উৎসবকে সম্মানী হিসেবে দেওয়া হয় ৫০ হাজার টাকা।
ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এম এ কুদ্দুস খান বলেন, “উৎসব খুবই সম্ভাবনাময় একজন বক্সার। আমরা চাই তার উন্নত প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতির সুযোগ থাকুক। ফেডারেশন সর্বোচ্চ সহায়তা দিয়ে যাবে।”
তবে এই সাফল্যের পেছনে ছিল কিছু অনিশ্চয়তাও। উৎসবের ভুটানে যাওয়া শেষ মুহূর্তে নিশ্চিত হয় ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম ও সেনাবাহিনীর মেজর ইস্রাফিলের সহায়তায়। দলের কোচ শফিউল আজম মাসুদ জানান, “সময়ে টিকিট না হলে উৎসবের যাওয়া হত না। এই সোনাও দেশের ঘরে আসতো না।”

আরও পড়ুন: বায়ার্নকে বিদায় করে সেমিতে ইন্টার মিলান
অ্যামেচার বক্সিংয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রথম সাফল্য নিয়ে উৎসবের চোখ এখন আরও বড় মঞ্চে। তাঁর কথা, “এই স্বর্ণ আমার ক্যারিয়ারের শুরু মাত্র। এখন আমার লক্ষ্য পাকিস্তানে আসন্ন এসএ গেমসে দেশের জন্য সোনা জেতা। ভালো প্রস্তুতি ও সুযোগ পেলে ইনশাআল্লাহ সে স্বপ্ন পূরণ করতে পারব।”
উৎসবের পরিবারেও এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস। যাঁর দেখে বক্সিং শুরু করেছিলেন, সেই মামা জুয়েল নিজেও দেশের হয়ে এসএ গেমসে সোনা জিতেছিলেন ২০১০ সালে। ভাগনের এমন অর্জনে আবেগাপ্লুত জুয়েল বলেন, “আমার সময়ে যা করতে পেরেছি, সে এখন আরও এগিয়ে যাচ্ছে। আশা করি এসএ গেমসেও সে দেশের জন্য সোনা নিয়ে ফিরবে।”