অবশেষে বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। যেই ইংল্যান্ড থেকে সাকিবের বোলিং অ্যাকশন প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছিলো, সেখান থেকেই তৃতীয়বারের পরীক্ষায় পাশ মার্ক পেলেন সাকিব। যার ফলে আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া ক্রিকেটে বল করতে এখন আর কোনো বাঁধা রইলো না সাকিবের উপর।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ডের ঘরোয়া প্রতিযোগিতা কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে সারের হয়ে একটি ম্যাচ খেলেন টাইগার এই অলরাউন্ডার। সমারসেটের বিপক্ষে খেলা সেই ম্যাচে সাকিবের বোলিং অ্যাকশন প্রশ্নবিদ্ধ হয়। সাকিবের বোলিং নিয়ে এরপর পর্যালোচনা শুরু করে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। পরবর্তীতে তার বোলিং অ্যাকশন অবৈধ ঘোষণা করা হয়, যার ফলে ইংল্যান্ডের মাটিতে বোলিং থেকে নিষিদ্ধ হন সাকিব।
সাকিব অবশ্য নিজের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে এরপর বেশ কাজ করেছেন। দুই দফা পরীক্ষায়ও অংশ নেন তিনি। গত বছরের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ইংল্যান্ডের বার্মিংহামের লাফবোরো ইউনিভার্সিটিতে আইসিসি অনুমোদিত কেন্দ্রে অ্যাকশনের পরীক্ষা দেন সাকিব। কিন্তু সেই পরীক্ষায় ফেল করেন তিনি। এরপর ভারতের চেন্নাইতে আবারো পরীক্ষা দিয়েছেন তবে সেখান থেকেও কোনো ভালো খবর পাননি টাইগার এই ক্রিকেটার। যার ফলে সব ধরনের ক্রিকেটেই নিষিদ্ধ করা হয় সাকিবের বোলিং অ্যাকশন।
ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলায় এসে দুইবার ব্যর্থ হওয়া সাকিব আদৌ আর বল হাতে বাইশ গজ মাতাতে পারবেন কিনা এ ব্যাপারে অনেকের মনেই সন্দেহ ছিলো। তবে গোটা ক্যারিয়ার জুড়ে বিশ্ব ক্রিকেটে দাপট দেখিয়ে বেড়ানো এই ক্রিকেটার এতো সহজে হার মানার পাত্র না। দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে জাতীয় দলে সুযোগ না পাওয়া সাকিব তৃতীয়বার আবারো পরীক্ষা দিয়েছেন ইংল্যান্ডে। এবার অবশ্য আর পরীক্ষায় ঠিকই উতরে গেছেন টাইগার এই অলরাউন্ডার।
সারের হেড কোচ গ্যারেথ ব্যাটিই সাকিবের বোলিং অ্যাকশন সংশোধনের পথে বড় ভূমিকা রেখেছেন। বোলিং অ্যাকশন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার পর দুই দফায় পরীক্ষায় ব্যর্থ হলেও ব্যাটির পরামর্শে নতুনভাবে কাজ শুরু করেন সাকিব। তার নির্দেশনা ও সারে দলের সাপোর্টের মাধ্যমেই ধীরে ধীরে ফিরে আসেন সঠিক অ্যাকশনে।
সারের হয়েই যেখানে সমস্যার শুরু হয়েছিল, সেখানেই ব্যাটির অধীনেই সমাধান মিলেছে। কোচ হিসেবে ব্যাটি শুধু দলের পারফরম্যান্সের দিকেই নজর রাখেননি, খেলোয়াড়দের উন্নতিতেও তার ভূমিকা রেখেছেন। সাকিবের জন্যও সেটাই সত্যি হলো। একসময় তার বিপক্ষে খেলেছিলেন, আর এবার তার কোচ হিসেবেই সাকিবের ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ বাঁক ঘুরিয়ে দিলেন।