‘আমি একজন সংসদ সদস্য ছিলাম, কিন্তু এখন আমি আর কোনো রাজনৈতিক পদে নেই। আমি কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত নই। তাহলে এমন কী করলাম আমি, যার জন্য গত ১৮-২০ বছরের ক্যারিয়ার হঠাৎ থেমে যাবে? আমি এখনো চাই, বাংলাদেশের হয়ে খেলে বিদায় নিতে।
যদি সুযোগ থাকে, আমি পরিকল্পনা করে নিতে চাই—একটা সিরিজ খেলব, না কি দুটো, না কি আরও এক বছর। আমার সবচেয়ে বড় স্বপ্ন হলো দেশের হয়ে খেলে ক্যারিয়ার শেষ করা, এবং আমি এখনো সেটার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি—খেলাধুলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টা, বিসিবি সভাপতির সঙ্গে কথা বলছি।’
আরও পড়ুন: অলিম্পিকের মঞ্চে ক্রিকেট, ভেন্যু ক্যালিফোর্নিয়ার পোমোনা
কথাগুলো বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় সুপারস্টার সাকিব আল হাসানের। গত বছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে বিতর্কিত ভূমিকার আগেও ছিলেন দেশের মানুষের আশার প্রতীক। সরকার পরিবর্তনের পর এখন দেশে ঢুকাই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে সাকিবের জন্য। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় জানানোর জন্য আনুষ্ঠানিক ম্যাচটিও খেলতে পারেননি তিনি। তবে তিনি বিশ্বাস করেন তিনি বাংলাদেশের হয়ে আরো এক থেকে দুই বছর খেলতে পারেন এবং বাংলাদেশের মানুষও তাকে চায়।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) বাংলাদেশ ইংরেজি দৈনিক ‘ডেইলি সান’-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানান সাকিব আল হাসান।
সাক্ষাৎকারে তিনি আরো বলেন, ‘যখন বুঝতে পারলাম, এত চাপ নিয়ে আমি আর খেলতে পারছি না, তখনই মনে হলো, শেষ। এটা না যে আমি বাংলাদেশের হয়ে খেলতে চাই না—আমার সেই ইচ্ছা সবসময় থাকবে। আমি এ নিয়ে বোর্ড প্রেসিডেন্ট থেকে শুরু করে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের মানুষদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।’
এই সাক্ষাৎকারে সাকিব আল হাসান দাবি করেন বাংলাদেশের মানুষ এখনো তাকে মাঠে চায়। তবে সবকিছুর জন্য সদিচ্ছা প্রয়োজন। আর এই সদিচ্চা প্রয়োজন কর্তা-ব্যক্তিদের থেকে। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘ আমি কাউকে নিয়ে অভিযোগ করি না, কারো বিরুদ্ধে কোনো রাগও নেই। প্রত্যেকের নিজস্ব সীমাবদ্ধতা আছে। আপনি জিনিসগুলো ইতিবাচকভাবে দেখবেন না কি জটিল করে তুলবেন, সেটা আপনার উপর। আপনি যদি আমার ১৮ বছরের ক্যারিয়ার দেখেন, আর ছয় মাসের ঘটনা দিয়ে বিচার করেন, সেটা আপনার ইচ্ছা।

এক দিক থেকে দেখলে ব্যাপারটা অন্যরকম মনে হবে, কিন্তু নিরপেক্ষভাবে দেখলে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে। আমি বিশ্বাস করি, আমি বাংলাদেশের হয়ে খেলার যোগ্য, এবং বেশিরভাগ মানুষ চায় আমি যেন দেশের হয়ে খেলে অবসরে যাই। আমি বিশ্বাস করি, আমি এখনো আরও এক বা দুই বছর খেলতে পারি। যদি কিছু হয়ে থাকে, সেটাকে সদিচ্ছা দিয়ে ঠিক করা যায়। আর এই সদিচ্ছা আসা উচিত ওপর দিক থেকেই।
আরও পড়ুন: লা লিগায় এক ম্যাচ নিষিদ্ধ এমবাপে
দেশে ফেরার ক্ষেত্রে সাকিব তার নিজের নিশ্চয়তা চান দাবি করে সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি ফিরতে প্রস্তুত যদি আমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। আমি খুব কষ্ট পেয়েছিলাম যখন আমার নামে হত্যা মামলা করা হয়েছিল, এবং পরে জানতে পারি মামলাকারী নিজেই জানেন না, আমার নাম কীভাবে সেখানে এলো! তখন বুঝলাম, মানুষ কতদূর যেতে পারে। আমার কাছে প্রমাণ আছে, আমি খুব সোজা-সরলভাবে চিন্তা করতাম, কিন্তু এখন বুঝতে পারছি পৃথিবী কতটা জটিল।’