বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) জাতীয় দলের প্রধান কোচ হিসেবে ফিল সিমন্সের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত বাড়িয়েছে। এর আগে, তাকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তবে দলের প্রত্যাশিত সাফল্য না পেলেও বিসিবি তার ওপর আস্থা রেখেছে।
দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে কাজের সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত ক্যারিবিয়ান কোচ ফিল সিমন্স। বিসিবির ঘোষণার পর তিনি বলেন, “বাংলাদেশ দলের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদে কাজ করার সুযোগ পেয়ে আমি দারুণ উচ্ছ্বসিত। দলে অসাধারণ প্রতিভা রয়েছে, যাদের সামর্থ্য কাজে লাগিয়ে আমরা ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য পেতে পারি। দলকে সাফল্যের শিখরে পৌঁছাতে আমি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সেই লক্ষ্যে কাজ করতে আমি প্রস্তুত।”
তিনি আরও যোগ করেন, “সাম্প্রতিক সময়ে আমি দলের সক্ষমতা ও প্রতিশ্রুতি গভীরভাবে উপলব্ধি করেছি। খেলোয়াড়দের কঠোর পরিশ্রম, নিষ্ঠা এবং খেলাটির প্রতি ভালোবাসা আমাকে প্রতিদিন নতুন উদ্দীপনা দেয়। আমরা একসঙ্গে কাজ করে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে আরও উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারব বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।”
আরও পডুন: তামিমকে সাভার থেকে এভারকেয়ারে স্থানান্তর
২০২৪ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ পান ফিল সিমন্স। তার কোচিংয়ের প্রথম কয়েক মাস ছিল চ্যালেঞ্জিং। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হোম টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশ হোয়াইটওয়াশ হয়। এরপর আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজেও হারতে হয় টাইগারদের।
এছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও ফলাফল ছিল মিশ্র। টেস্ট সিরিজ ১-১ এ ড্র করলেও ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ হয় বাংলাদেশ। তবে টি-টোয়েন্টি সিরিজে লিটন দাসের নেতৃত্বে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশের স্বাদ নেয় দল।
এরপর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্স আশানুরূপ না হলেও, দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায় সিমন্সকে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি। বোর্ডের বিশ্বাস, তার অভিজ্ঞতা ও কৌশল আগামী দিনের সাফল্যের ভিত্তি তৈরি করবে।
ফিল সিমন্স এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আয়ারল্যান্ড, আফগানিস্তান এবং জিম্বাবুয়ে জাতীয় দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৬ সালে তার অধীনেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছিল।
বাংলাদেশের কোচ হিসেবে তার মেয়াদ এখন ২০২৭ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ওই বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়ায় হবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ, যেখানে শান্ত-মিরাজদের দায়িত্বে থাকবেন সিমন্স।
আরও পড়ুন: কিছু ঘটনা জানিয়ে দেয় জীবন আসলে কতটা ছোট: তামিম
নিজের নতুন চুক্তি নিয়ে আত্মবিশ্বাসী এই ক্যারিবিয়ান কোচ বলেন, “আমাদের দলে এমন কিছু প্রতিভাবান ক্রিকেটার আছে, যারা আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেদের প্রমাণ করতে সক্ষম। আমার প্রধান লক্ষ্য হবে তাদের সামর্থ্যের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে দলকে সামনে এগিয়ে নেওয়া।”
বিসিবির এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এখন দেখার বিষয়, সিমন্সের অধীনে টাইগাররা আগামী বছরগুলোতে কতটা উন্নতি করতে পারে।