বৃহস্পতিবার, জুন ২৬, ২০২৫
সামি'স কর্নার

নিরাপত্তাহীনতায় বাংলাদেশ ছাড়েন- দাবি হাতুরুসিংহের

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছিলো হাতুরুসিংহেকে। গত বছরে অক্টোবরে ফারুক আহমেদের নেতৃত্বাধীন ক্রিকেট বোর্ড সাবেক এই কোচের সাথে চুক্তি বাতিল করেন। বরখাস্ত হওয়ার পর অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই দেশ ছেড়েছেন লঙ্কান এই কোচ। তবে দেশ ছাড়তে গিয়ে নানা আতঙ্কের মুখে পড়তে হয়েছে হাতুরুসিংহেকে। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ান গণমাধ্যম কোড স্পোর্টসকে দেওয়া হাতুরুর সাক্ষাৎকারের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ক্রিকবাজ, যেখানে দেশ ছাড়ার সময় তার নিরাপত্তা ঝুঁকির ব্যাপার উঠে এসেছে।

আরও পড়ুন: ভালভার্দের রকেটে মান বাঁচলো রিয়ালের

২০২৩ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশের দায়িত্ব পাওয়া হাতুরুকে গত বছরের অক্টোবরে আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে বহিষ্কার করে বিসিবি। তার সঙ্গে করা চুক্তিও বাতিল করে ফারুক আহমেদের নেতৃত্বাধীন বোর্ড। হাতুরু অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করলেও পুরো ব্যাপারটি নিয়ে এতোদিন মুখ খোলেননি। তবে এবার পুরো ঘটনা নিয়েও খোলামেলা আলাপ করেছেন লঙ্কান এই কোচ।

অধিনায়ক শান্তর সাথে হাতুরু

হাতুরুসিংহে বলেন, “বাংলাদেশের সিইও আমাকে বলেছিলেন, ‘আমার পরামর্শ হলো আপনি চলে যান। কাউকে কিছু বলতে হবে না। আপনার কি টিকিট আছে?’এই কথাগুলোই আমার জন্য সতর্কবার্তা ছিল। তখনই আমি চিন্তিত হয়ে পড়ি।”

আরও পড়ুন: শিরোপার আরও কাছে লিভারপুল

বাংলাদেশের কোচের দায়িত্ব পাওয়ার সুবাদে হাতুরুর সাথে সবসময় একজন ড্রাইভার ও নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ থাকতো। তবে লঙ্কান এই কোচ দাবি করেছেন সেসময় তার সাথে কোনো নিরাপত্তাকর্মী ছিলো না। তিনি বলেন, “সাধারণত আমি একজন ড্রাইভার আর একজন অস্ত্রধারী নিরাপত্তারক্ষী পাই। সেদিন তিনি (বিসিবি সিইও) জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনার গার্ড আর ড্রাইভার আছে তো?’ আমি বললাম, না, শুধু ড্রাইভার ছিল।”

সদ্য চাকরি হারানো হাতুরু দেশত্যাগের পূর্বে ব্যাংক থেকে টাকা তোলারও চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, “আমি সরাসরি ব্যাংকে গেলাম, দেশ ছাড়ার জন্য টাকা জোগাড় করার চেষ্টা করছিলাম। আমি যখন ব্যাংকে ছিলাম তখন টিভিতে একটি ব্রেকিং নিউজ চলছিল; ‘চন্ডিকাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। একজন খেলোয়াড়কে লাঞ্ছিত করা হয়েছে’, এই খবর দেখেই ব্যাংক ম্যানেজার বললেন, ‘কোচ, আমি আপনার সঙ্গে যাব। রাস্তায় আপনাকে দেখলে সেটা আপনার জন্য নিরাপদ হবে না।”

আরও পড়ুন: শাদাব খানের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে চারে চার ইসলামাবাদের

এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়া হাতুরু সেদিন রাতেই দেশ ত্যাগ করেন। তিনি বলেন, “আমি তখন খুবই আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। এক বন্ধু আমাকে রাত ১২টার সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ধরতে এয়ারপোর্টে নামিয়ে দেন। আমি হুডি আর ক্যাপ পরে থাকি, সাথে কোনো নিরাপত্তা ছিল না। তখন মনে হচ্ছিল, আমাকে হয়তো বিমানবন্দরেই গ্রেফতার করা হবে। আগেও দেখা গেছে, একবার একজন সাবেক মন্ত্রী দেশ ছাড়ার চেষ্টা করলে বিমান রানওয়ে থেকে ফেরত নিয়ে তাকে নামিয়ে দেওয়া হয়। এমন সব চিন্তা মাথায় ঘুরছিল।”

বিশ্বকাপে চেন্নাইয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ চলাকালীন নাসুম আহমেদকে থাপ লাঞ্চনা করা অভিযোগ তিনি জোরালোভাবে অস্বীকার করেন। তার মতে, তিনি শুধু নাসুমের পিঠে টোকা দিয়ে গ্লাভস মাঠে পাঠাতে বলেছিলেন, যা ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। বিসিবি কখনোই তার বক্তব্য জানতে চায়নি এবং নাসুম আহমেদও বিষয়টি নিয়ে কোনো খোলামেলা আলাপ করেননি।

আরও পড়ুন: শেষ মুহূর্তের নাটকীয়তায় টানা দ্বিতীয় জয় বাংলাদেশের

হাতুরু অবশ্য দাবি করেছেন তার উপর আনা অভিযোগ তার ক্যারিয়ারে মারাত্মক ক্ষতি করেছে। তিনি বলেন, “এটা আমার ক্যারিয়ার। তারা অভিযোগ এনেছে, কিন্তু আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়নি। আমার ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দিয়েছে। এই ঘটনার পর আমি কতগুলো সুযোগ হারিয়েছি, তার হিসাব নেই। আমার চুক্তি শেষ করার জন্যই নতুন সভাপতি পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে এমনটা করেছেন।”

আরও খবর

একটি মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ খবর

জনপ্রিয় খবর