বাংলাদেশ ক্রিকেটে নেমে এসেছে শঙ্কার ছায়া। ২৪ মার্চ (সোমবার) ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) ম্যাচ চলাকালীন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল। টসের পর বুকে ব্যথা অনুভব করলে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে হার্টে ব্লক ধরা পড়ায় জরুরি ভিত্তিতে এনজিওগ্রাম করে রিং পরানো হয়েছে। বর্তমানে তিনি কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটে (CCU) বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।
এদিকে, তামিমের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে— “সকালে টসের পর হালকা বুকে ব্যথা অনুভব করলে সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড় বিষয়টি দলের ফিজিও ও ট্রেইনারকে জানান। প্রাথমিকভাবে গ্যাস্ট্রিকজনিত সমস্যা মনে হওয়ায় তিনি গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ গ্রহণ করেন। তবে কিছুক্ষণ পরও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সতর্কতার অংশ হিসেবে নিকটতম হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং চিকিৎসা শেষে তিনি বিকেএসপিতে ফিরে আসেন।”
কিন্তু পরে শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ম্যানেজার শিপনের সঙ্গে আলোচনা করে হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করা হয়, যাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত স্থানান্তর করা সম্ভব হয়। তবে পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ায় তাকে ফের নিকটতম কেপিজে হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজে নেওয়া হয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার হার্টে ব্লক ধরা পড়ে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়— “চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী দ্রুত এনজিওগ্রাম করা হয় এবং হার্টে রিং পরানো হয়। বর্তমানে তিনি কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটে (CCU) বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। তার সুস্থতার জন্য সবার দোয়া কামনা করা হচ্ছে, যাতে দ্রুত সুস্থ হয়ে তিনি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারেন।”
এদিকে, তামিমের অসুস্থতার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বিসিবি, সতীর্থ ক্রিকেটার, ভক্ত-সমর্থক এবং ক্রীড়াঙ্গনের ব্যক্তিরা হাসপাতালে ভিড় জমিয়েছেন। বিসিবির পক্ষ থেকে তার সর্বশেষ অবস্থা জানার জন্য নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসও তামিমের শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তার পক্ষ থেকে উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলেছেন। বিসিবি জানিয়েছে, তারা তামিমের চিকিৎসকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে এবং প্রয়োজনে যেকোনো সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তামিম ইকবাল ৭০টি টেস্ট, ২৪৩টি ওয়ানডে এবং ৭৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে জাতীয় দলের নেতৃত্বও দিয়েছেন। দেশের ক্রিকেটের অন্যতম বড় তারকার এমন অসুস্থতা নিয়ে ভক্ত-সমর্থকদের মধ্যে দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে। তবে চিকিৎসকদের মতে, তার অবস্থা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে এবং সঠিক চিকিৎসা চলমান রয়েছে।
তামিমের পরিবার ও সতীর্থরা দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন, যাতে তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরতে পারেন।