বাংলাদেশে টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে যতটা আলোচনা হয়, তার সিংহভাগই ঘুরপাক খায় ঘরোয়া ক্রিকেটের মান আর উইকেটের গুণগত অবস্থান নিয়ে। সিলেট টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে আবারও নতুন করে উসকে উঠেছে সেই পুরোনো প্রসঙ্গ। যেখানে ব্যাট-বলের লড়াইয়ের বাইরেও জায়গা করে নিয়েছে ঘরোয়া সংস্কৃতির সীমাবদ্ধতা।
বৃষ্টিভেজা দিনে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে টাইগারদের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১৯৪, লিড দাঁড়িয়েছে ১১২ রানে। তবে খেলার মাঠ থেকে আলোচনার টেবিলে যখন বিষয় এসেছে দেশের টেস্ট সংস্কৃতি, সেখানেই খোলাসা কথা বলেছেন মুমিনুল হক। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট ভাষায় তুলে ধরেন ঘরোয়া উইকেট নিয়ে নিজের হতাশা।
আরও পড়ুন: ফি’ক্সিংয়ের অভিযোগ উড়িয়ে দিলো রাজস্থান

মুমিনুল বলেন, “ঘরোয়া ক্রিকেটের মান বাড়বে না যতদিন না উইকেট চেঞ্জ হবে। এই ধরণের উইকেট পেসারদের জন্য ভালো হতে পারে। কিন্তু টেস্ট সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হলে প্রত্যেক বিভাগে, প্রত্যেক কন্ডিশনে উন্নত উইকেটের ব্যবস্থা করতে হবে।”
জাতীয় দলের সাবেক এই টেস্ট অধিনায়কের চোখে ঘরোয়া কাঠামোর উন্নয়ন মানেই ভবিষ্যতের টেস্ট দলকে শক্ত ভিত দেওয়া। তার মতে, শুধু ফলাফল নয়, প্রতিটি ফরম্যাটের স্বচ্ছ ধারাকে তুলে ধরতে উইকেটের চরিত্র হওয়া উচিত ভারসাম্যপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জিং।
তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে বিদেশিদের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে তিনি কিছুটা দ্বিধান্বিত। মুমিনুলের কথায়, “বিদেশি খেললে দেশি ক্রিকেটারদের সুযোগ কমে যাবে। একদিকে লাভ হলেও অন্যদিকে ক্ষতিও হতে পারে।”

সেট হয়ে বড় ইনিংস খেলার গুরুত্বও তুলে ধরেন মুমিনুল, “টেস্ট ক্রিকেটে একটা বড় ইনিংস পুরো ম্যাচের রঙ বদলে দিতে পারে। তাই ব্যাটারদের উচিত সেট হওয়ার পর ইনিংসটা বড় করা।”
আরও পড়ুন: তবুও মুশফিকেই আস্থা রাখছেন মুমিনুল
এছাড়া মাহমুদুল হাসান জয়ের আউট নিয়ে প্রশ্ন উঠলে কৌশলে উত্তর দেন এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার, “আমি ব্যাটিং কোচ না। ট্যাকনিক্যালি কোন জায়গায় সমস্যা তা কোচরাই ভালো জানবেন। আমার কাছে আত্মবিশ্বাসীই লেগেছে। বলটায় হয়তো সে আনলাকি ছিল।”
সিলেট টেস্টে ফল যাই হোক, মুমিনুলের কণ্ঠে যেন প্রতিধ্বনিত হচ্ছে একটা দীর্ঘদিনের প্রশ্ন— দেশের টেস্ট ক্রিকেট কাঠামো কি আসলেই প্রস্তুত চ্যালেঞ্জ নিতে? টেস্ট সংস্কৃতির ভিত গড়তে হলে তাই ফিরতে হবে মূলে— সেই ঘরোয়া ক্রিকেটের উইকেটেই।