ভারত-পাকিস্তানের রাজনৈতিক উত্তেজনার জেরে এশিয়া কাপ থেকে নাম প্রত্যাহার করেছে ভারত, এমন খবরে ছেয়ে গেছে গোটা ক্রিকেট বিশ্ব। বিসিসিআইয়ের বিভিন্ন সূত্রে এমন খবর প্রকাশ করেছে ভারতের বেশ কিছু শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম। যদিও বিসিসিআই সচিব দেবজিত সাঈকিয়া জানিয়েছেন এশিয়া কাপে অংশ না নেওয়ার ব্যাপারে এখনো কোনো আলোচনাই করেনি ক্রিকেট বোর্ড।
আরও পড়ুন: পাকিস্তান সফর নিয়ে ক্রীড়া উপদেষ্টার ইতিবাচক বার্তা
সাম্প্রতিক সময়ে আইসিসি ইভেন্টগুলোতে পাকিস্তানের মাটিতে খেলতে অস্বীকৃতি জানায় ভারত। যার ফলে সেসব টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে হয় হাইব্রিড মডেলে। ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি এবং ২০২৩ সালের এশিয়া কাপে ভারত সরকারের নিরাপত্তাজনিত অনুমতির অভাবে পাকিস্তানে গিয়ে খেলা হয়নি রোহিত-কোহলিদের। এবারও তেমন কিছু ঘটতে পারে, এমন জল্পনা কল্পনা চলছে। তবে বিসিসিআই আনুষ্ঠানিকভাবে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলকে এখনো কিছু জানায়নি।
বিসিসিআই সচিব সাঈকিয়া স্পষ্ট করে বলেছেন, “এশিয়া কাপ বা এসিসির কোনো ইভেন্ট নিয়ে এখনো পর্যন্ত বিসিসিআইয়ের কোনো স্তরে কোনো আলোচনা হয়নি। এমনকি এটা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত এসিসিকে জানানো হয়নি। আইপিএল ও ইংল্যান্ড সিরিজ নিয়েই আমাদের এখন মূল ফোকাস।”
এদিকে আগামী জুনে শ্রীলঙ্কায় হওয়ার কথা নারী ইমার্জিং এশিয়া কাপ। তবে ক্রিকেটভিত্তিক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ক্রিকইনফোর মতে এবারের আসর পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি)।
আরও পড়ুন: সাকিবের দলে খেলার ছাড়পত্র পেলেন মিরাজ
সম্প্রতি কাশ্মীরের পাহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর দুই দেশের মধ্যে সাময়িক সামরিক উত্তেজনা দেখা দেয়, যার প্রভাব পড়ে আইপিএল ও পিএসএলেও। দুটো লিগই কয়েকদিনের জন্য স্থগিত করা হয়। পরে ১০ মে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে ১৭ মে থেকে আবার মাঠে গড়াতে শুরু করে এই দুই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট।
এই পরিস্থিতির মধ্যেই ভারতের প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীরের বক্তব্যের জেরে নতুন করে আলোচনার জন্ম হয়েছিলো। তিনি বলেন, ” যতক্ষণ না সীমান্তে রক্ত ঝরা বন্ধ হচ্ছে ততক্ষণ ভারতের উচিত হবে না পাকিস্তানের সঙ্গে কোনো ধরনের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক রাখা।” এরপর থেকেই এশিয়া কাপে দুদেশের লড়াই নিয়ে শোরগোল বাধে ক্রিকেট পাড়ায়। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই বিশ্ব ক্রিকেটে টানটান উত্তেজনা। এই দুই দকের ঘিরে বিপুল পরিমাণ অর্থে বিক্রি হয়ে সম্প্রচারসত্ত্ব। অথচ রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে অতীতে একাধিকবার পুরো টুর্নামেন্টই স্থগিত হয়েছে বা দলকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: এশিয়া কাপ না-ও খেলতে পারে ভারত
এই অবস্থায় এশিয়া কাপ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছে গোটা ক্রিকেট বিশ্ব। ভারতের অংশগ্রহণ ছাড়া এই টুর্নামেন্টের বাণিজ্যিক এবং প্রতিযোগিতামূলক গুরুত্ব অনেকটাই কমে যাবে, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে সবকিছু নির্ভর করছে রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং সরকারি সিদ্ধান্তের উপর। বিসিসিআই যদিও জানিয়েছে, তারা এখনো কিছুই ঠিক করেনি। তবে শেষপর্যন্ত ভারত-পাকিস্তানের সেই বহু প্রতীক্ষিত লড়াইটা আদৌ দেখতে পাওয়া যাবে কি না সেটা সময়ই বলে দেব।