অলিখিত ফাইনালটা জিতে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখাল সংযুক্ত আরব আমিরাত। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে শক্তিশালী বাংলাদেশকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে রীতিমতো কীর্তিই গড়ল স্বাগতিকরা। এই অভাবনীয় অর্জনের পর আবেগাপ্লুত প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন আমিরাতের অধিনায়ক মোহাম্মদ ওয়াসিম।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে পরাজিত হলেও পরের দুই ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ায় আমিরাত। দ্বিতীয় ম্যাচে জয় এনে বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে হারায় তারা। আর শেষ ম্যাচে ৭ উইকেটের জয়ে নিশ্চিত করে ঐতিহাসিক সিরিজ ট্রফি। ম্যাচ শেষে অধিনায়ক ওয়াসিম বলেন, “এই জয়টা আমাদের জন্য অনেক বড় কিছু। আমি দলকে, ম্যানেজমেন্টকে এবং বোর্ডকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা সত্যিই ইতিহাস গড়েছি—এটা বলতে পারাটা গর্বের।”
আরও পড়ুন: আমেরিকার পর আমিরাতেও সিরিজ হার বাংলাদেশের

শুধু সিরিজ জয়ের কথাই নয়, পুরো দলের পারফরম্যান্স নিয়েও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন ওয়াসিম। তার ভাষায়, “এই সিরিজটা আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমরা যেভাবে একসঙ্গে লড়েছি, সেটা অসাধারণ। সবাই নিজের জায়গা থেকে শতভাগ দিয়েছে।”
বিশেষ করে অভিষিক্ত হায়দার আলির পারফরম্যান্সে মুগ্ধ ওয়াসিম। তরুণ এই পেসার প্রথমবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে নেমেই দারুণ বোলিং করেছেন। তাকে নিয়ে অধিনায়কের প্রশংসা, “যারা এই পর্যায়ে প্রথমবার খেলল, তারাও ভয়ডরহীন ছিল। হায়দার আলি অভিষেকেই যেভাবে বল করেছে, সেটা অনেক আত্মবিশ্বাসের বার্তা দেয়।”
সিরিজজুড়ে দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাস কীভাবে কাজ করেছে—সে কথাও জানান ওয়াসিম। “আমরা সবসময় বিশ্বাস রেখেছি। আমরা জানি এই কন্ডিশন আমাদের পরিচিত। টস ভাগ্যে পাশে থাকায় দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করে সুবিধা পেয়েছি। তবে শুধু কন্ডিশন নয়, আমরা ব্যাট-বলে ভালো খেলেছি বলেই জয় সম্ভব হয়েছে।”

তিন ম্যাচের এই টি-টোয়েন্টি সিরিজে ‘প্লেয়ার অব দ্য সিরিজ’ নির্বাচিত হন ওয়াসিম। এই অর্জনটিও আবেগের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন তিনি, “এই পুরস্কারটা আমার জন্য অনেক কিছু। আমি এটা আমার ছেলেকে উৎসর্গ করছি।”
আরও পড়ুন: গ্লোবাল সুপার লিগে কবে মাঠে নামছে রংপুর
সবশেষে দেশের সমর্থকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ওয়াসিম বলেন, “আমাদের ক্রিকেটকে যারা ভালোবাসেন, যারা পাশে থাকেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। এই মুহূর্তটা আমাদের জন্য খুব গর্বের।”
নিজেদের উন্নতির বার্তা দিয়ে বাংলাদেশকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যে এখন সহযোগী নয়, প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবেই ভাবা উচিত আমিরাতকে, সেই বার্তাই হয়তো পৌঁছে দিয়েছে এই জয়।

তবে এই সিরিজে বাংলাদেশকে খানিকটা দূর্ভাগাই মানছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে বলেন, “বাংলাদেশ খুবই ভালো দল। ওদের হারানো সহজ কিছু না। তবে আমি বলবো ওরা একটু দুর্ভাগা ছিল, তিন ম্যাচেই টসে হেরেছে, প্রতিবারই পরে বল করতে হয়েছে। শারজাহর কন্ডিশনে সেটাই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে।”