শেষরক্ষাটা আর হলো না, সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচেও হারতে হলো বাংলাদেশকে। শারজায় সিরিজের শেষ ম্যাচে স্বাগতিক সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে টাইগাররা ম্যাচ হারলো সাত উইকেটের ব্যবধানে। আর এই হারে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে হাতছাড়া হলো টাইগারদের। গত বছর আমেরিকায় স্বাগতিকদের বিপক্ষে সিরিজ হারের লজ্জার পর এবার আমিরাতেও সেই একই লজ্জায় পড়তে হলো লাল-সবুজদের।
আরও পড়ুন: গ্লোবাল সুপার লিগে কবে মাঠে নামছে রংপুর
সিরিজের শেষ ম্যাচেও টসভাগ্য সহায় হয়নি টাইগার অধিনায়ক লিটন দাসের। টস হেরে এদিনও ব্যাটিংয়ে যেতে হয় বাংলাদেশকে। প্রথম ওভারেই তামিম ঝড়ো শুরুর আভাস দিলেও দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই বিদায় নেন প্রথম ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান পারভেজ হোসেন ইমন। বাহাতি এই ব্যাটারের বিদায়ে অবশ্য মোটেই বিচলিত হয়নি লিটন-তামিম জুটি। মতিউল্লাহর করা পরের ওভারেই তুলে নেয় ১৮ রান।

তবে চতুর্থ ওভারেই শুরু হয় হায়দার আলীর ম্যাজিক। ওভারের প্রথম বলে লিটনকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলা হায়দার তৃতীয় বলে বিদায় করেন হৃদয়কেও। অপরপ্রান্তে দাঁড়িয়ে ব্যাটারদের এই আসা যাওয়ার মিছিল দেখছিলেন ওপেনার তানজিদ তামিম। তবে তাতে বিচলিত হননি একচুলও। হায়দারের মেইডেনসহ দুই উইকেটের ঠিক পরের ওভারেই দুই ছয় সহ এক চারে তুলে নেন ১৬ রান। তবে এদিন বাংলাদেশের ব্যাটারদের মূল পরীক্ষাটা নিয়েছেন হায়দার। পাওয়ার প্লের শেষ বলে বিদায় করেন মেহেদীকেও।
তানজিদ হাসান তামিমও এরপর আকিফ রাজার এক বল বুঝে ওঠার আগেই বোল্ডের শিকার হন। ১৮ বলে ৪০ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন এই ব্যাটার, যেখানে পুরো রানটাই তামিম করেছেন বাউন্ডারিতে। ৪ চার ও ৪ ছক্কায় সাজানো ইনিংসে ছিলো না কোনো দৌড়ের রান। ইনিংসের সপ্তম ওভারেই পাঁচ ব্যাটারের বিদায়ে তখন পুরোপুরি চাপে টাইগাররা। শামীম ও জাকের ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করলেও খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি শামীম। রিশাদ হোসেনও ফেরেন সেই একই ওভারে।
আরও পড়ুন: জাকের হাসানের দৃঢ়তায় বাংলাদেশের পুঁজি ১৬২
ব্যাট হাতে শেষ ভরসা সাকিবও বিদায় নিলে একশোর ভেতরে অলআউট হবার শঙ্কা দেখা দেয় টাইগার শিবিরে। ৮৪ রানে ৮ উইকে হারানো টাইগারদের অবশ্য লজ্জার হাত থেকে বাঁচিয়েছেন জাকের এবং শেষ দুই ব্যাটার হাসান মাহমুদ ও শরীফুল ইসলাম। হাসান ও জাকের মিলে গড়েন ম্যাচের সর্বোচ্চ ৪৪ রানের পার্টনারশিপ। ৪১ রানে জাকেরের বিদায়ের পর পুরো দায়িত্বটা নিজেদের কাধে তুলে নেন দুই টেল এন্ডার হাসান মাহমুদ ও শরীফুল ইসলাম। দুজনে মিলে শেষ উইকেট জুটিতে যোগ করেন ৩৪ রান, যার মধ্যে ২৬ রানই এসেছে ইনিংসে শেষ ওভারে। শেষ পর্যন্ত হাসান মাহমুদের ১৫ বলে ২৬ ও শরীফুলের ৭ বলে ১৬ রানে ভর করে ৯ উইকেটে ১৬২ রান করে বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নিয়েছেন হায়দার।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা মনমতো হয়নি স্বাগতিক আরব আমিরাতের। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই বিদায় নেন গোটা আসরেই দুর্দান্ত ছন্দে থাকা মুহাম্মদ ওয়াসিম। তবে ওয়াসিমের দ্রুত বিদায় সত্ত্বেও চাপ সামলে নেন মুহাম্মদ জুহাইব ও আলিশান শারাফু। অষ্টম ওভারে আঘাত হানেন রিশাদ। এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে বিদায় করেন জুহাইবকে। ২৩ বলে ২৯ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এরপর রাহুল চোপড়াও ফিরেছেন সাকিবের বলে, ১৩ বলে সমান ১৩ রান করে।
আরও পড়ুন: একাদশে ফিরলেন ইমন, এবারো নেই সৌম্য
তবে আলিসান শাফারু ও আসিফ খান মিলে গড়েন ম্যাচ জেতানো এক পার্টনারশিপ। এই দুজনে মিলেই লেখেন নতুন এক ইতিহাস। ব্যক্তিগত অর্ধশতকেও পৌঁছে যান শারাফু। শেষ পর্যন্ত এই দুই ব্যাটারের ব্যাটে ভর করেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করে স্বাগতিক আমিরাত, আর বাংলাদেশের কপালে জোটে আরো এক লজ্জার হার।