বৃহস্পতিবার, জুন ২৬, ২০২৫
সামি'স কর্নার

অবসর নিয়ে কোহলির সিদ্ধান্ত যৌক্তিক, দাবি শাস্ত্রীর

ভিরাট কোহলির অবসরের সিদ্ধান্ত মোটেই আবেগপ্রবণ ছিলো না, এমনটাই দাবি করেছেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ও কোচ রবি শাস্ত্রী। ভিরাটের এই সিদ্ধান্ত প্রথমে কিছুটা অবাক লাগলেও পরে অবশ্য ভিরাটের অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্তের পেছনের যুক্তি মনে ধরেছে শাস্ত্রীর।  

আরও পড়ুন: মিরাজ-ইমরুলদের এমকেএস ব্যাটের ফ্যাক্টরি পরিদর্শন করলেন প্রোটিয়ারা

ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা কোচ ও অধিনায়ক জুটি ধরা হয় ভিরাট কোহলি ও রবি শাস্ত্রীকে। দুজনের মধ্যে সুসম্পর্ক শুধু মাঠের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো না, বরং ব্যক্তিগত জীবনেও দুজনের মধ্যে সম্পর্ক ছিলো বেশ গভীর। কোহলির সিদ্ধান্ত ঘোষণার অল্প কয়েকদিন আগেই তার সাথে একান্ত আলাপ করেন শাস্ত্রী। যেখানে অবসরের ব্যাপার নিয়েও কথা বলেছেন সাবেক এই কোচ। সেসময় অবসরের পেছনে কোহলির যুক্তিতে সন্তুষ্ট হতে হয়েছে শাস্ত্রীকেও। 

আইসিসি রিভিউতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শাস্ত্রী বলেন, “অবসরের ঘোষণা আসার ঠিক এক সপ্তাহ আগে আমি ওর সঙ্গে এই বিষয়টা নিয়ে কথা বলেছিলাম। এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে ওর ধারণা একেবারে পরিষ্কার ছিল, ও টেস্ট ক্রিকেটে নিজের সবকিছু দিয়ে দিয়েছে। ওর কোনো আফসোস ছিল না। আমি এক-দুইটা প্রশ্ন করেছিলাম, যেগুলো অবশ্য আমাদের ব্যক্তিগত আলাপ ছিল। তবে সেখানে ও স্পষ্টভাবেই বলেছে ওর মনে কোনো দ্বিধা নেই। ও আমাকে বুঝিয়েছে, এটাই সঠিক সময়। ওর মন, শরীরকে জানিয়ে দিয়েছে যে যাওয়ার সময় হয়ে গেছে।” 

আরও পড়ুন: ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা সাদের, জাতীয় দলে খেলা নিয়ে শঙ্কা

বেশ কিছু দিন ধরেই টেস্ট ক্রিকেটে ফর্মে নেই কোহলি। যেই কোহলি এক সময় ৫০-এর উপরে গড়ে রান করতো, তার গড় ২০২০ সালের পর থেকে কমতে শুরু করেছে এবং অবসরের সময়ে তা গিয়ে ঠেকেছে মাত্র ৪৬-এর সামান্য ওপরে। ডিসেম্বর ২০২০ থেকে কোহলি টেস্টে ৬৫ বার ব্যাট করেছেন মাত্র ৩২.০৯ এভারেজে। এই সময়ে তার ব্যাটে এসেছে মাত্র ৩টি সেঞ্চুরি ও ৯টি হাফ-সেঞ্চুরি।

এই পারফরম্যান্সে অবনতি ছাড়াও শাস্ত্রী মনে করেন কোহলির আগ্রাসী খেলার ধরনও তার উপর অনেক প্রভাব ফেলেছিল। অধিনায়ক হিসেবে ৪০ টেস্টে জয় পাওয়া কোহলি ম্যাচে সবচেয়ে বেশি আগ্রাসী মনোভাব নিয়েই মাঠে নামতেন। তবে তার এই চাপ নিয়ে খেলা এবং প্রতিটি ম্যাচের প্রতিটি মুহূর্তেই তার জড়িয়ে যাওয়াই হয়তো তাকে বিপর্যস্ত করেছে, এমনটাই মনে করছেন শাস্ত্রী।

তিনি বলেন, “যদি সে কিছু করার সিদ্ধান্ত নেয়, তবে সে ১০০% দেয়। যেটা সবাই করতে পারে না। ব্যক্তিগতভাবে, একজন বোলার বা ব্যাটসম্যান শুধু তার নিজের কাজটাই করে। কিন্তু কোহলির ক্ষেত্রে যখন দল মাঠে যায়, মনে হয় যেন ওকেই সব উইকেট নিতে হবে, সব ক্যাচ ধরতে হবে, মাঠে সব সিদ্ধান্ত ওকেই নিতে হবে। যদি ও বিশ্রাম না নেয়া বা নিজে না ঠিক করে কোন ফরম্যাটে কতটা খেলবে তাহলে এই মাত্রার সম্পৃক্ততা, আমার মনে হয়, কোথাও না কোথাও ক্লান্তি ডেকে আনবেই।”

আরও পড়ুন: আইপিএলের শেষভাগে কারা ফিরছেন, কারা আসছেন না ভারতে

যদিও কোহলির এই সিদ্ধান্তকে শাস্ত্রী যুক্তিযুক্ত মনে করেন। তবে ব্যক্তিগতভাবে শাস্ত্রীর ভাবনা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। এই কারণেই, কোহলির অবসর ঘোষণা পুরো ক্রিকেট বিশ্বের মতো তার জন্যও অপ্রত্যাশিত ছিল। তিনি বলেন, “ও আমাকে চমকে দিয়েছে। কারণ আমি ভেবেছিলাম ওর আরও দু’তিন বছর টেস্ট ক্রিকেট খেলার সামর্থ্য আছে। কিন্তু যখন মানসিকভাবে ক্লান্তি আসে তখন সেটাই শরীরকে সংকেত দেয়। আপনি হয়তো পুরো দলে সবচেয়ে ফিট খেলোয়াড়, কিন্তু যখন মানসিকভাবে আপনি বিপর্যস্ত, তখন শরীরকে বলে দেয় এবারই শেষ।”

আরও খবর

একটি মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ খবর

জনপ্রিয় খবর