গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের কাছে হেরে সুপার লিগে খেলার স্বপ্নভঙ্গ হলো প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের। শনিবার বিকেএসপিতে ব্যাটারদের ব্যর্থতার ভিড়ে মাত্র ২০৩ রানেই অল আউট হয়ে যায় প্রাইম ব্যাংক। জবাবে অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিমের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ৭৭ বল বাকি থাকতেই ৫ উইকেটের ব্যবধানে ম্যাচ জিতে নেয় গুলশান। এদিকে নিয়ম রক্ষার ম্যাচে জয় পেয়েছ রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব। শাইনপুকুরকে হারিয়েছে ২৮ রানের ব্যবধানে।
আরও পড়ুন: নাসিরকে ফের জাতীয় দলে দেখতে চান সোহরাওয়ার্দী শুভ
বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন প্রাইম ব্যাংকের অধিনায়ক ইরফান শুক্কুর। ব্যাট হাতে বেশ ঝড়ো শুরু করে প্রাইম ব্যাংকের দুই ওপেনার সাব্বির হোসেন ও নাইম শেখ। যদিও সেই ঝড় খুব বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি প্রাইম ব্যাংক। আসাদুজ্জামান পায়েলের বলে ২২ রান করে বিদায় নেন সাব্বির। নাইমও নিজের ইনিংস বেশিদূর এগোতে পারেননি। ২৬ বলে ৩৬ করে বিদায় নিয়েছেন এই বাহাতি ব্যাটার। মাঝে অবশ্য শাহাদাত হোসেন দিপুও বিদায় নিয়েছেন রানের খাতা খোলার আগেই। পাওয়ার প্লেতে তিন উইকেট হারানো প্রাইম ব্যাংক এরপর উইকেট হারাতে থাকে নিয়মিত বিরতিতে। শামীম পাটওয়ারি, জাকির হাসানরা সবাই বিদায় নিয়েছেন খুব অল্প রানেই। মিডল অর্ডারের ব্যাটারদের ব্যর্থতার ভীড়ে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন ইরফান শুক্কুর ও সাজ্জাদুল হক রিপন। তবে ইরফান ৪৩ করে বিদায় নিলে বাকি কেউই আর সাজ্জাদকে সঙ্গ দিতে পারেনি। বলে নির্ধারিত ওভারের আগেই ২০৩ রানে অলআউট হয়ে যায় প্রাইম ব্যাংক। সাজ্জাদ অপরাজিত থাকেন ৫১ রানে। গুলশানের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নিয়েছেন মেহেদী। এছাড়া দুইটি করে উইকেট পেয়েছেন পায়েল, নাইম ও নিহাদুজ্জামান।জবাবে ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিমের সেঞ্চুরিতে ৭৭ বল বাকি থাকতেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় গুলশান। ওপেনিংয়ে নেমে জাওয়াদ আবরারকে সাথে নিয়ে ৭১ রানের জুটি গড়েন তামিম। তবে ব্যক্তিগত ৩৩ রানে বিদায় নেন জাওয়াদ। আলিফ হাসান ইমন ও নাইম ইসলামও বিদায় নিয়েছেন দুই অঙ্কে পৌঁছানোর আগেই। এরপর খালিদকে সাথে নিয়ে জয়ের দিকে নিতে থাকেন তামিম। পূর্ণ করেন নিজের শতকও। তবে ব্যক্তিগত ১০৫ রানে থামে তামিমের ইনিংস। শেষ পর্যন্ত খালিদ হাসানের ৩৪ বলে ৩৮ রানের ইনিংসে জয় নিশ্চিত হয় গুলশানের। এই জয়ে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে সুপার লিগে উঠলো নবাগত এই ক্লাবটি।
আরও পড়ুন: আঙুলের চোটে পিএসএল শেষ লিটনের, ফিরছেন দেশে
এদিকে দিনের অপর খেলায় নিয়মরক্ষার ম্যাচে জয় পেয়ে ডিপিএল শেষ করেছে রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব। উইকেট কিপার ব্যাটার আব্দুল মজিদের অনবদ্য শতকে শাইনপুকুরকে রানে হারিয়েছে রূপগঞ্জ টাইগার্স। টসে হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামে রূপগঞ্জ। পাওয়ার প্লেতে অবশ্য শাইনপুকুরের বোলারদের সামনে দিশেহারা হয়ে পড়ে রূপগঞ্জের ব্যাটাররা। দশ ওভারে দুই উইকেট রান তোলে মাত্র ২২। তবে ইনিংসের গোড়াপত্তন করা আব্দুল মজিদ এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাট করতে থাকেন। বাকি ব্যাটাররা যখন আসা যাওয়ার মিছিলে নামে তখন ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন মজিদ। পঞ্চম উইকেট জুটিতে অবশ্য মজিদকে সাথে নিয়ে ৯২ রানের জুটি গড়েন মাহমুদুল। ৫৪ বলে ৫৬ করে বিদায় নেন মাহমুদুল। তবে মাহমুদুলের বিদায় সত্ত্বেও ক্রিজে ছিলেন মজিদ। ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত ক্রিজে থাকেন এই ওপেনার। ১০২ রানে অপরাজিত থেকে দলীয় সংগ্রহ নিয়ে যান ২৫০ এ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই মারমুখী ভঙ্গিতে ছিলেন ওপেনার মইনুল ইসলাম তন্ময়। মাত্র ২৬ বলেই পূর্ণ করনে নিজের অর্ধশতক। ফিফটি হাঁকানোর পরের বলেই বিদায় নেন এই ব্যাটার। তার বিদায়ের পর রান তোলার গতিতে ভাটা পড়ে শাইনপুকুরের। বেশ ধীরগতির এক ইনিংস খেলে ৯০ বলে ৫৩ রান করে বিদায় নেন মোহাম্মদ রহিম আহমেদ।ছয় নম্বরে নেমে শাহরিয়ার সাকিব অর্ধশতক হাঁকালেও মাহমুদুলের বলে বিদায় নিলে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় শাইনপুকুর। শেষ হয় সাকিবের ৫৯ বলে ৫০ রানের ইনিংস। শেষ পর্যন্ত লোয়ার মিডল ও লোয়ার অর্ডারে কেউই দায়িত্বশীল ব্যাটিং না করতে না পারলে জয়ের থেকে ২৯ রান দূরে শেষ হয় শাইনপুকুরের ইনিংস। ব্যাট হাতে অর্ধশতক হাঁকানো মাহমুদুল বল হাতেও ছিলেন বেশ দুর্দান্ত। একা হাতেই গুড়িয়ে দেন শাইনপুকুরের ব্যাটিং লাইনআপ। বল হাতে দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট তুলে নেন এই অলরাউন্ডার। এই জয়ে সাত পয়েন্ট নিয়ে ডিপিএল শেষ করলো রূপগঞ্জ টাইগার্স। অন্যদিকে মাত্র দুই পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তলানিতে থেকে রেলিগেট হয়ে বিদায় নিলো শাইনপুকুর।