প্রায় বছর খানেক হতে চলেছে দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের সাথে যুক্ত নেই সাকিব আল হাসান। বিপিএল থেকে শুরু করে ডিপিএল খেলেননি কোনো টুর্নামেন্টই। আওয়ামী সরকারের আমলে এমপি হওয়ায় তার দেশে ফেরা নিয়েও পরিস্থিতি স্বাভাবিকের বাইরে চলে গিয়েছে। তবে এমন অবস্থা সত্ত্বেও ডিপিএলে খেলতে চেয়েছিলেন সাকিব। নাম লেখাতে চেয়েছিলেন ডিপিএলের চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর হয়ে। সম্প্রতি বিডিক্রিকটাইমকে দেওয়া একান্ত এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন আবাহনীর কোচ ও সাবেক জাতীয় দলের নির্বাচক হান্নান সরকার।
আরও পড়ুন: আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে নথিপত্র যাচাই করছ বিসিবি
সাকিবের বোলিং নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার ব্যাপারে আভাস পেয়েছিলেন হান্নান সরকার। খোদ সাকিবের মুখ থেকে শোনার পর তাই ডিপিএলে নিজ দলে সাকিবকে ভেড়ানোর ইচ্ছাও জানিয়েছিলেন আবাহনীর এই কোচ। সেই ঘটনার স্মৃতিচারণ করে হান্নান বলেন, “সাকিবের সাথে এমনি আমি মজা করে একদিন ফোন করেছিলাম যে সাকিবের কি অবস্থা কেমন আছে। ওর বোলিং ক্লিয়ারেন্স আসার দুই দিন আগে ওর সাথে কথা হয়। ও বলল যে খুব তাড়াতাড়ি হয়তো এরকম (বোলিং ক্লিয়ারেন্সের) একটা নিউজ আসবে। আমি ওকে বললাম তাহলে আবাহনীতে আসো, এসে কিছু ম্যাচ খেলে যাও।”
হান্নানের সেই চাওয়ায় সহজ উত্তর দিয়েছিলেন সাকিব। জানিয়েছিলেন খেলতে চান আবাহনীর হয়ে। সাকিব ঠিক কি বলেছিলেন এমন প্রশ্নের উত্তরে আবাহনীর এই কোচ বলেন, “হ্যাঁ হান্নান ভাই খেলব, সহজ একটা উত্তর। সাকিবের সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুব বেশিদিন না হলেও ওর সঙ্গে আমি মিশে আমার খুব ফ্রেন্ডলি একটা সম্পর্ক হয়ে গেছে। সাকিবকে আমি যখন অফার করেছি সাকিব বলেছে ‘হ্যা, আমি খেলব। আপনি টিকেট পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।’ তবে আপনি বোঝেন দেশের এই প্রেক্ষাপটে সাকিব যে আসবে না সেটা আমরা সবাই জানতাম বাট যদি প্রেক্ষাপট অন্য কিছু হতো তখন হয়তো সাকিব অন্যভাবে ভাবে চিন্তা করতো।”
আরও পড়ুন: মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে রোহিতের নামে স্ট্যান্ড
দেশের ক্রিকেটে সাকিব সকলের জন্য এক অনুপ্রেরণা। তার কাছ থেকে জুনিয়র ক্রিকেটারদের অনেক কিছুই শেখার আছে বলে মনে করেন হান্নান। তিনি বলেন, “টি-টোয়েন্টির জায়গা থেকে তাকে একটু চিন্তা বা আলোচনায় আনা যেতেই পারে। সে কেমন ছন্দে রয়েছে আমরা পিএসএল এর মাধ্যমেই জানতে পারব। সাকিব মাঠে ফিরে আসা মানে আমার মনে হয় প্লেয়ারদের জন্য একটা অনুপ্রেরণা। সে যদি জাতীয় দলে নাও খেলে, শুধু ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে সেখানেও প্লেয়ারদের তার সঙ্গে আন্ডারস্ট্যান্ডিং এর মাধ্যমে অনেক কিছু শেখার সুযোগ থাকবে।”
হান্নান সরকার যদি নির্বাচক থাকতেন এবং যদি সাকিব পিএসএল পারফর্ম করতো তাহলে কি তাকে ২০২৬ বিশ্বকাপে বিবেচনা করতেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আমার মনে হয় করতাম। একদম সোজাসাপটা যদি আমাকে জিজ্ঞেস করা হয় সাকিব পিএসএল এ কেমন পারফর্ম করছে, তার ইমপ্যাক্টটা কেমন থাকছে সেটার উপর একটা জাজমেন্ট করে আমার মনে হয় যে চিন্তাভাবনা করাই যেতে হবে। যেহেতু আমি বলছি যে এই সময়টা কিন্তু খুব বেশি না ওয়ার্ল্ড কাপের জন্য। এই মুহূর্তে কাউকে নিয়ে পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে একদম রেডি করে নেওয়ার চেয়ে যদি একজন রেডি প্লেয়ার পাওয়া যায় তাহলে শর্টটার্ম একটা গোল সম্পন্ন করা যেতে পারে।”
আরও পড়ুন: ওয়েস্ট ইন্ডিজের নতুন অধিনায়ক চেজ, ডেপুটি ওয়ারিকান
তবে সাকিবকে নির্বাচকরা জাতীয় দলের জন্য বিবেচনায় আনবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে হান্নান বলেন, “এটা আসলে দেশের অনেক প্রেক্ষাপটের উপর নির্ভর করে। কারণ আপনারা জানেন যে এর মধ্যে আমাদের দেশে বেশ কিছু খেলা রয়েছে। দেশে অনেকগুলো ক্যাম্প হবে। সাকিব এখানে আসতে পারবে কিনা বা কতটুকু সময় এভেলেইবল হবে এগুলো দেশের প্রেক্ষাপটের উপর নির্ভর করছে। সাকিব এমন একজন প্লেয়ার সে যেকোন জায়গায় যেকোনো ইভেন্টে যে ডিরেক্ট খেলতে পারে। বাট তারপরেও টিম বন্ডিং এর একটা ব্যাপার থাকে। এখানে আসলে দেশের প্রেক্ষাপটের উপর অনেক কিছুই নির্ভর করছে।”