ভারতের ক্রিকেটের দুই মহাতারকার লড়াইয়ে শেষ হাসি হেসেছে ভিরাট কোহলি। রোহিতের মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে তাদের ঘরের মাটিতে কোহলির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু হারিয়েছে ১২ রানের ব্যবধানে। এই জয়ে দশ বছর পর ওয়াংখেডেতে মুম্বাইয়েকে হারানোত স্বাদ পেলো বেঙ্গালুরু।
আরও পড়ুন: আরভিনের নেতৃত্বে শক্তিশালী দল ঘোষণা জিম্বাবুয়ের
নিজেদের ঘরের মাঠে টস জেতে মুম্বাইয়ের অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া। সিদ্ধান্ত নেন আগে বল করার। বল হাতে শুরুটাও বেশ দারুণ হয় স্বাগতিকদের। আইপিএলের মঞ্চে প্রথম ওভারে উইকেট নেওয়ার রীতি বজায় রাখেন ট্রেন্ট বোল্ট। বিদায় করেন ফিল সল্টকে। প্রথম ওভারে উইকেট হারালেও রান তোলার ব্যাপারে মোটেই কার্পণ্য করেনি দেভদূত পাডিক্কাল ও ভিরাট কোহলি। দুজনে মিলে পাওয়ার প্লে শেষে বেঙ্গালুরুর সংগ্রহ নিয়ে যায় ৭৩-তে, যা কিনা মুম্বাইয়ের বিপক্ষে ২০১১ সালের পর থেকে আরসিবির সর্বোচ্চ সংগ্রহ।

ইনিংসের নবম ওভারে ব্যক্তিগত অর্ধশতকে পৌঁছান কোহলি। বিশাল এক ছক্কা হাকিয়ে মাত্র ২৯ বলেই ফিফটি পূরণ করেন আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী এই ব্যাটার। সেই সাথে এদিন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ১৩ হাজার রানের মাইলফলকও স্পর্শ করেছেন কোহলি। ৩৮৬ ইনিংসে ১৩ হাজার রান পূর্ণ করে এই মাইলফলকে পৌছানো দ্বিতীয় দ্রুততম ব্যাটসম্যান এখন ভারতের এই ব্যাটিং জিনিয়াস।
আরও পড়ুন: টাইগারদের ফিল্ডিং কোচ হলেন মুম্বাইয়ের সাবেক কোচ
নবম ওভারের শেষ বলে বিদায় নেন পাডিক্কাল। আর তাতে করে সমাপ্তি ঘটে ৯১ রানের অসাধারণ এক পার্টনারশিপের। পাডিক্কালের বিদায়ের পর ম্যাচের লাগাম টেনে ধরার চেষ্টা করে মুম্বাই। তবে বেঙ্গালুরুর অধিনায়ক রজত পাতিদারের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে সেই সুযোগ হাতছাড়া হয় মুম্বাইয়ের। ইনিংসের ১৫তম ওভারে অবশ্য জোড়া উইকেট শিকার করেন হার্দিক পান্ডিয়া। বিদায় করেন ভিরাট কোহলি ও লিয়াম লিভিংস্টোনকে।

তবে অপর প্রান্তে ঝড় তুলতে থাকেন রজত পাতিদার। মাত্র ২৫ বলেই অর্ধশতকে পৌঁছান এই ব্যাটার। ইনিংসের ১৯তম ওভারের শেষ বলে বোল্টের শিকার হয়ে ফেরত যান পাতিদার। শেষ পর্যন্ত পাঁচ উইকেট হারিয়ে ২২১ রানের পুঁজি পায় সফরকারীরা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪২ বলে ৬৭ রান আসে কোহলির ব্যাট থেকে। মুম্বাইয়ের হয়ে সর্বোচ্চ দুইটি করে উইকেট নেন ট্রেন্ট বোল্ট ও হার্দিক পান্ডিয়া। তবে দুই উইকেট পেলেও চার ওভারে ৫৭ রান খরচ করেছেন বোল্ট, যা কিনা তার আইপিএল ক্যারিয়ারের সবচেয়ে খরুচে বোলিং ফিগার।

২২২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মুম্বাইয়ের ইনিংসের শুরুটাও হয়েছে বেশ ঝড়ো গতিতে। তবে শুরুর সেই ঝড় টিকেছে মাত্র ২২ বল। এই বাইশ বলেই বিদায় নেন দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও রায়ান রিকেলটন। দুজনেই প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন সমান ১৭ রান করে। দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া মুম্বাইয়ের রানের চাকায় লাগাম টেনে ধরে বেঙ্গালুরুর বোলাররা। উইল জ্যাকস কিংবা সুরইয়াকুমার ইয়াদাভের কেউই নিজেদের স্বভাবসুলভ ব্যাটিং করতে পারছিলেন না।
আরও পড়ুন: সাদা বলে নতুন অধিনায়ক চূড়ান্ত করলো ইংল্যান্ড
১০০ রানের আগেই চার উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে এক প্রকার ছিটকে যায় মুম্বাই। তবে খাদের কিনারা থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া ও তিলক ভার্মা। দুজনে মিলে পঞ্চম উইকেট জুটিতে যোগ করেন ৮৯ রান, তাও আবার মাত্র ৩৪ বলে। তবে ২৯ বলে ৫৬ রান করা তিলককে বিদায় করেন ভুবনেশ্বর। আর এতেই ম্যাচে ফিরে আসে বেঙ্গালুরু। সেই সাথে আইপিএলের ইতিহাসে পেস বোলার হিসেবে সবচেয়ের বেশি উইকেটের কীর্তিতেও নাম ওঠে ডানহাতি এই পেসারের।

তিলকের বিদায়ের পর হার্দিকও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। যার ফলে শেষ দুই ওভারে ২৮ রান তুলতে ব্যর্থ হয় স্বাগতিকরা। শেষ ওভারে ক্রুনাল তিন উইকেট তুললে মুম্বাইয়ের ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে ৯ উইকেটে ২০৯ রান করে। ১২ রানে ম্যাচ জিতে নেয় বেঙ্গালুরু। এই জয়ে চার ম্যাচে ছয় পয়েন্ট নিয়ে টেবিলে আরসিবির অবস্থান তিন। অন্যদিকে পাঁচ ম্যাচে মাত্র এক জয়ে দুই পয়েন্ট নিয়ে মুম্বাই রয়েছে তালিকার আট নম্বরে।