“হৃদস্পন্দন থামছে না, মনে হচ্ছে ২০০ পার করে ফেলেছে! এই বয়সে আর এমন ম্যাচ চাই না, সত্যিই!” — ম্যাচ শেষে এভাবেই বলেছিলেন পাঞ্জাবের কোচ রিকি পন্টিং। কিন্তু সে আড়ালেও লুকানো ছিল এক ধাক্কা খাওয়া হৃদয়, এক চাপা বিস্ময় আর গর্বে ভরা চোখ।
আইপিএল যে শুধু ব্যাটে-বলে সীমাবদ্ধ থাকে না, তা আবারও প্রমাণ করে দিল পাঞ্জাব কিংস। ১১১ রানের মতো নগণ্য সংগ্রহ নিয়েও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কলকাতা নাইট রাইডার্সকে হারিয়ে মাঠ কাঁপিয়ে দিল দলটি। আর ডাগআউটের সবচেয়ে আবেগী মানুষটি ছিলেন প্রধান কোচ রিকি পন্টিং। রাসেল আউট হতেই যেন সময় থমকে গেল— কোচ ছুটে এলেন গ্যালারির দিকে, হাত নাড়লেন দর্শকদের উদ্দেশে, যেন বললেন: “দেখলে! আমরা পারি!”
আরও পড়ুন: বাফুফুকে ২.৫ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিবে এএফসি
পন্টিং বলেন, “জানি, এমন ম্যাচে জয় পাওয়া কল্পনাতীত। কিন্তু ক্রিকেট এমনই— যেখানে স্কোরবোর্ড নয়, মনোবল নির্ধারণ করে ফল।”
তিন দিন আগেই তো ২৪৫ রান করেও জিততে পারেনি পাঞ্জাব! অথচ আজ, তিন অঙ্কের নিচের সংগ্রহ নিয়েও ম্যাচ পকেটে পুরে ফেলল। পন্টিং জানান, “মাঝ বিরতিতে ছেলেদের বলেছিলাম— এই উইকেটে রান তাড়া করা কঠিন। বল থেমে আসছে, শট খেলতে সমস্যা হবে। বলেছিলাম, যদি জিততে পারো, এটাই হবে তোমাদের জীবনের অন্যতম বড় জয়।”
আর সেই কথাই বাস্তব করলেন স্পিনার চাহাল। ম্যাচের আগে পর্যন্তই সন্দেহ ছিল, খেলবেন কি না। কাঁধের চোট নিয়ে নেমে এলেন মাঠে, আর একে একে তুলে নিলেন চারটি উইকেট।
এ প্রসঙ্গে পন্টিং স্মিত হেসে বলেন, “ওকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘তুই খেলতে পারবি তো?’ ও বলল, ‘একশো ভাগ কোচ!’ তারপর যেভাবে বল করল— বলে বোঝানো যাবে না, চোখে দেখতে হয়!”
আইপিএলে চাহালের উইকেট সংখ্যা শ’খানেক— কিন্তু সংখ্যার চেয়েও আজ বড় হয়ে উঠেছে তাঁর সময়ে নেওয়া সিদ্ধান্ত, তাঁর আত্মবিশ্বাস। এই জয়টা শুধুই পয়েন্ট টেবিলের হিসাব বদলায়নি, বদলে দিয়েছে ড্রেসিংরুমের আত্মবিশ্বাস, মুখে-মুখে ছড়িয়ে পড়েছে নতুন বার্তা— এই দল হাল ছাড়ে না।
আরও পড়ুন: বর্ণবাদী আচরণে আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে ফিফার দ্বারস্থ ব্রাজিল
পন্টিং বলেন, “জানি, আমাদের ব্যাটিং দুর্বল ছিল। কিন্তু মাঠে নামার পর যেভাবে ছেলেরা একসাথে লড়েছে, তাতে আমি গর্বিত। এমন জয় রোজ আসে না। এই ম্যাচ আমি কোনও দিন ভুলতে পারব না।”
তবে দিনশেষে, পন্টিংয়ের চোখেমুখেই ফুটে উঠছিল সব— বয়স যতই হোক, ক্রিকেটে এমন দিন এলেই তিনি আবার তরুণ হয়ে ওঠেন!