বুধবার, জুন ২৫, ২০২৫
সামি'স কর্নার

আরাধ্য শিরোপা জিতে শিশুর মতো ঘুমাবেন কোহলি

আইপিএলের সবচেয়ে সফল ব্যাটার হয়েও কোহলির নামের পাশে ছিল না একটি মাত্র জিনিস, সোনালী ট্রফি। সেটিই অবশেষে জুটলো। ফাইনালের শেষ ওভারে জয়ের নিশ্চয়তা আসতেই ক্যামেরায় ধরা পড়ল কোহলির অশ্রুসিক্ত চোখ। শশাঙ্কের শেষ বলের ছক্কা ম্লান হয়ে গেল বেঙ্গালুরুর উদযাপনে, আর কোহলি হাঁটু গেড়ে বসে মাথা নুইয়ে দিলেন মাঠেই। চোখ বুজে হয়তো পুরোনো দিনগুলোকে স্মরণ করছিলেন, ট্রফির কাছে গিয়েও বারবার ফিরে আসাকেই মনে করছিলেন। তবে অবশেষে সব আক্ষেপের অবসান ঘটিয়ে দেড়যুগ পর আরাধ্য সেই ট্রফিটা ধরা দিয়েছে কোহলিকে।

আরও পড়ুন: অবশেষে আইপিএলের চ্যাম্পিয়ন কোহলির বেঙ্গালুরু 

ম্যাচশেষে হেইডেইনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রফি জয়ের আবেগ-উচ্ছ্বাস সব কিছুই ফুটে ওঠে কোহলির কন্ঠে। তিনি বলেন, “এই জয় যতটা দলের জন্য, ততটাই সমর্থকদের জন্য। দীর্ঘ ১৮ বছর, আমার যৌবন, সেরা সময়,অভিজ্ঞতা সব দিয়েছি এই দলকে। প্রতি মৌসুমেই জয়ের চেষ্টা করেছি, সবটুকু নিংড়ে দিয়েছি। অবশেষে এই মুহূর্তের দেখা পাওয়া অবিশ্বাস্য এক অনুভূতি। কখনও ভাবিনি, এই দিনটি আসবে। শেষ বলটি হওয়ার পর আবেগ উপড়ে পড়ছিল। আমার প্রাণশক্তির প্রতিটি বিন্দু ঢেলে দিয়েছি এবং এখনকার অনুভূতি অসাধারণ।”

২০০৮ সাল থেকে বেঙ্গালুরুর জার্সি গায়ে জড়ানো কোহলি এখনো এই ফ্র‍্যাঞ্চাইজির হয়েই খেলছেন। স্বাভাবিকভাবেই ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রতি তার ভালোবাসা নিয়ে কোনো দ্বিধা নেই। অন্য দল থেকে বহুবার মোটা অঙ্কের প্রস্তাব পেলেও কোহলি কখনো বেঙ্গালুরু ছাড়েননি। তার হৃদয়ে এই শহর ও দলের জন্য যে জায়গা, সেটা বুঝিয়ে দেন খুব স্পষ্ট ভাষায়। 

আরও পড়ুন: পাঞ্জাবকে উড়িয়ে দিয়ে আইপিএলের ফাইনালে বেঙ্গালুরু

তিনি বলেন, “সত্যি বলতে, এই শিরোপা শীর্ষ কাতারেই থাকবে। যেটা বললাম, গত ১৮ বছরে নিজের সবটুকু উজাড় করে দিয়েছি। এই দলের প্রতি অনুগত থাকার চেষ্টা করেছি, যা কিছুই হোক না কেন। কিছু কিছু মুহূর্তে অন্যরকমও ভেবেছি। তবে শেষ পর্যন্ত এই দলকেই আঁকড়ে রেখেছি, তাদের পাশে থেকেছি, তারাও আমার পাশে থেকেছে। এই দলের হয়ে শিরোপা জয়ের স্বপ্নই সবসময় দেখেছি। অন্য যে কোনো দলের চেয়ে এখানে জেতাটাই অনেক অনেক বেশি স্পেশাল, কারণ আমার হৃদয়, আমার আত্মা মিশে গেছে বেঙ্গালোরের সঙ্গে। আজকে রাতে আমি শিশুর মতো ঘুমাব।”

শুধু নিজের সাফল্য নয়, দলের প্রতিও ছিল তার অগাধ বিশ্বাস। মৌসুম শুরুর আগে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন আরসিবির দল গঠন নিয়ে। কিন্তু কোহলি বলেন, “এই ম্যানেজমেন্ট, এই ক্রিকেটাররা অসাধারণ। সঠিক ধরনের ক্রিকেটার, ম্যাচ জেতানোর ক্রিকেটার আছে এই দলে, যারা খেলাটাকে এগিয়ে নেয়। নিলামে অনেকেই আমাদের কৌশল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কিন্তু নিলামের দুই দিন শেষে আমরা আমাদের দল নিয়ে খুশি ছিলাম। এই দলের শক্তিমত্তার প্রতি আমাদের বিশ্বাসের কমতি ছিল না।”

আরও পড়ুন: কার্ডিফে রুটের মহাকাব্য, ভিভকে ছাড়িয়ে কেসির কীর্তি

প্রায় দেড়যুগের পথচলার ইতিটা অবশ্য খুব শীঘ্রই আসবে। তবে যতদিনই খেলবেন মাঠে পুরো দায়িত্ব নিয়েই খেলতে চান কোহলি। তিনি বলেন, “খুব বেশি বছর আর এই খেলাটি খেলার সুযোগ পাব না। আমাদের ক্যারিয়ারে শেষের দিনটি আসবেই। যখন পথচলা থামাব, বাড়িতে বসে এটুকু বলতে চাই যে, নিজের সবটুকু দিয়ে খেলেছি। এজন্যই সবসময় উন্নতি করা উপায় খুজি। আমি কখনোই ইম্প্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে খেলতে পারব না। আমি ২০ ওভার ফিল্ডিং করতে চাই, মাঠে ছাপ রাখতে চাই। সবসময় এই ধরনের ক্রিকেটারই ছিলাম এবং ইশ্বর আমাকে সেই প্রতিভা দিয়েছেন।”

আরও খবর

একটি মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ খবর

জনপ্রিয় খবর