বৃহস্পতিবার, জুন ২৬, ২০২৫
সামি'স কর্নার

২০২৪ বনাম ২০২৫: রান উৎসব থেকে স্পিনের দাপট

ছক্কার বৃষ্টি আর রানের বন্যায় ভেসে গিয়েছিলো আইপিএল ২০২৪ এর আসর। তাই ২০২৫ মৌসুম শুরু হতেই প্রশ্ন উঠেছিল এই বছরও আগের চেয়ে বেশি রানের উৎসব দেখা যাবে কিনা। প্রথম কয়েকটা ম্যাচ দেখে অবশ্য সেটাই মনে হচ্ছিল। তবে সময় যত গড়িয়েছে ব্যাটারদের থেকে বোলারদের দাপটটাই বেশি বেড়েছে আইপিএলে।

আরও পড়ুন: জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে স্টোকসের নেতৃত্বে শক্তিশালী দল ইংল্যান্ডের

২০২৫ এর প্রথম পাঁচ ম্যাচেই দেখা গিয়েছিল মারকাটারি ব্যাটিং। তখনই ১১৯টি ছক্কার মার দেখে ফেলেছিলো আইপিএল। যেখানে ২০২৪ এ এই সংখ্যা ছিল মাত্র ৮৭। প্রথম পাঁচ ম্যাচে ২০০ রান পার হয়েছে ছয়বার, তার মধ্যে তিনবারই স্কোর ছিল ২৪০ এর উপরে। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছিল এবার বুঝি নতুন সব রেকর্ডের পসরা সাজাবে আইপিএল। 

তবে এরপরই দৃশ্যপট বদলে যেতে থাকে। মাঠের অবস্থা, পিচের আচরণ আর দুর্দান্ত সব বোলিং, সব মিলিয়ে রানের গতি ধীরে ধীরে কমে আসে। এখন পর্যন্ত প্রথম ৫০ ম্যাচে রানরেট, ছক্কা আর ২০০ এর বেশি স্কোর সব দিক থেকেই ২০২৪ সালের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে চলতি মৌসুম। ২০২৪ এ যেখানে তিনটি দল, কলকাতা নাইট রাইডার্স, সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু প্রথম পঞ্চাশ ম্যাচ শেষে দশের ওপরে রানরেট বজায় রেখেছিল, এবার সেখানে একমাত্র গুজরাট টাইটান্স রয়েছে সেই তালিকায়।

আরও পড়ুন: ভারতের বাংলাদেশ সফর নিয়ে দুশ্চিন্তা দেখছেন না ফাহিম

ছক্কার হিসাবেও এবারের পার্থক্য সবচেয়ে ভালোভাবে বোঝা যায়। প্রথম ২৯ ম্যাচ পর্যন্ত ২০২৫ কিছুটা এগিয়েছ থাকলেও এরপর থেকে  আর গত বছরের সাথে পেরে ওঠেনি। ৫০ ম্যাচ শেষে ২০২৫ এর ছক্কার সংখ্যা গত বছরের চেয়ে ৭০টি কম। গত বছর ৩৫ এর বেশি ছক্কা পড়েছিল তিনটি ম্যাচে, এবার সেটা হয়নি একবারও।

এদিকে যেখানে ব্যাটসম্যানদের গতি থেমেছে, সেখানে স্পিনাররা দিনকে দিন আলো ছড়াচ্ছেন। এই মৌসুমে স্পিনাররা এখন পর্যন্ত নিয়েছেন ২২০ উইকেট, গড় ৩০.০২। অথচ ৫০ ম্যাচ পর ২০২৪ এ এই সংখ্যাটা ছিল মাত্র ১৫৪, গড় ছিলো ৩৭। গতবারের তুলনায় এবার স্পিনারদের উপরই বেশি ভরসা করেছেন অধিনায়কেরা। যেখানে গতবার মোট ওভারের ৩৩ শতাংশ করেছিলো স্পিনাররা সেখানে এবার তারা করেছেন মোট ওভারের ৪১ শতাংশ। উইকেট নেওয়ার অনুপাতটাও এবার বেড়েছে স্পিনারদের ক্ষেত্রে। গতবার ২৭ শতাংশ উইকেট নিলেও এবার তারা তুলে নিয়েছে ৩৯ শতাংশ উইকেট।

আরও পড়ুন: মুস্তাফিজের বদলে ‘এ’ দলের স্কোয়াডে খালিদ

বিশেষ করে মিডল ওভারে স্পিনারদের দাপট ছিলো চোখে পড়ার মতো। এবার মাঝের ওভারের এই সময়টাতে স্পিনাররা নিয়েছেন ১৭১ উইকেট, যেখানে পেসাররা নিয়েছেন মাত্র ১০৬। অথচ গত বছর এই সময় এগিয়ে ছিলো পেসাররাই। পেসারদের ১৩৮ উইকেটের বদলে স্পিনারদের ছিলো ১২৭ উইকেট। 

টসও এই মৌসুমে বেশ বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করেছে। একটা সময় তো মনে হচ্ছিলো আগে ব্যাট করা মানেই নিশ্চিত জয়। প্রথম ২৩ ম্যাচে ১৩ বার জিতেছে প্রথমে ব্যাট করা দল।কিন্তু এরপর পাল্টে যায় চিত্র। শেষ ২৫ ম্যাচে ১৭ বার জিতেছে চেজ করা দল। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৫০ ম্যাচে চেজ করে জেতার সংখ্যা ২৭, হেরে যাওয়ার সংখ্যা ২১। টস জিতে ম্যাচ জেতার হারও বেড়েছে এবার। ২৯ ম্যাচ জিতেছে টস জয়ী দল, হেরেছে ১৯টি ম্যাচ। এর মধ্যে বেঙ্গালুরুই এখন পর্যন্ত টস জিতে একটিও ম্যাচ হারেনি। 

আরও খবর

একটি মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ খবর

জনপ্রিয় খবর