ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) মানেই যেন অর্থের কাড়াকাড়ি। নিলামে বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে খেলোয়াড় কেনা থেকে শুরু করে ম্যাচ আয়োজন, সম্প্রচার সবকিছুতেই টাকা ঢালতে কার্পণ্য করেনা এই টুর্নামেন্ট সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। এবার ম্যাচ খেলার জন্যও আলাদা করে খেলোয়াড়দের টাকা দিবে আয়োজক কমিটি। এমনকি আসরের সবগুলো ম্যাচ খেলতে পারলে এই অর্থ ছাড়াবে কোটি টাকারও বেশি।
প্রথমবারের মতো আইপিএলে ম্যাচ ফি পেতে যাচ্ছে খেলোয়াড়রা। প্রতিটি ম্যাচের জন্য খেলোয়াড়দের পকেটে ঢুকবে সাড়ে সাত লাখ রূপি। বাংলাদেশি টাকায় যা গিয়ে দাঁড়াবে ১০ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। গ্রুপ পর্বে খেলোয়াড়দের কাছে সুযোগ থাকবে ১৪ ম্যাচ মাঠে নামার। অর্থাৎ গ্রুপ পর্বে সব ম্যাচ খেললে এই অর্থ দাঁড়াবে প্রায় ১ কোটি ৫ লাখ রূপি। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা কিনা প্রায় ১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।

এতো গেলো শুধু গ্রুপ পর্বের হিসাব। প্লে অফ খেলে ফাইনালে যাওয়া একজন ক্রিকেটারের সামনে সুযোগ থাকছে সর্বোচ্চ তিন ম্যাচ খেলার। অর্থাৎ এক আসরে একজন ক্রিকেটার সর্বোচ্চ ১৭ টি ম্যাচ খেলতে পারবে। সেই হিসেব ম্যাচ ফি দাঁড়ায় ১ কোটি সাড়ে ২৭ লাখ রূপি। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ টাকারও বেশি। এই পুরো অর্থ খেলোয়াড়রা পাবেন ফ্র্যাঞ্চাইজির সাথে তার চুক্তির বাইরে।
টিম শিটে থাকা মোট ১২ জন খেলোয়াড়ের (ইম্প্যাক্ট প্লেয়ারসহ) সবাকেই এই ম্যাচ ফি প্রদান করা হবে। প্রতি ম্যাচ বাবদ এই খাতে দলগুলোর খরচ হবে ৯০ লাখ রূপি। যদিও এই অর্থ ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো দিবে না, বরং আয়োজক কমিটি ম্যাচ ফি’র সম্পূর্ণ খরচ বহন করবে। এই খরচ বাবদ প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে ১২ কোটি ৬০ লাখ রূপি দিবে আয়োজক কমিটি। অর্থাৎ এই খাতে আয়োজকদের পকেট থেকে বাড়তি ১২৬ কোটি রূপি খরচ হবে। তবে মজার ব্যাপার হলো, ২০২৪ এর কেন্দ্রীয় চুক্তি অনুযায়ী একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার জন্য খেলোয়াড়েরা যেই অর্থ পেতেন আইপিএলে খেলে তার থেকে আড়াইগুণ বেশি টাকা পাবে রোহিত-কোহলিরা।

আইপিএলকে কেন্দ্র করে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড যে শুধু খরচ করছে এমনটাও কিন্তু না। ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক টুর্নামেন্টগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় এই আসরের সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রি করে নিজেদের আয় প্রতিনিয়ত বাড়িয়ে চলেছে বিসিসিআই। এই প্রতিযোগিতার একটি ম্যাচ দেখানোর জন্য ব্রডকাস্টারদের গুণতে হয় ম্যাচপ্রতি প্রায় ১১৮ কোটি রূপি। গোটা বিশ্বের ক্রীড়াজগতে যা কিনা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। তাদের সামনে আছে শুধুমাত্র আমেরিকার এনএফএল, যার জন্য ব্রডকাস্টারদের খরচ করতে হয় প্রায় ১৩৩ কোটি রূপি। আঠারো বছরে আইপিএলের উন্নতির গ্রাফ যেভাবে বেড়েছে তাতে করে অদূর ভবিষ্যতেই যে এই তালিকায় সবার উপরে উঠবে আইপিএল সেটা বলাই যায়।