ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বে বেশ সংকটময় এক পরিস্থিতিতে পড়েছে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও জাকজমকপূর্ণ ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টুর্নামেন্ট ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সীমান্ত উত্তেজনার জেরে শুক্রবার (৯ মে) টুর্নামেন্টটি আপাতত এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেছে বিসিসিআই। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে, আইপিএলের বাকি ম্যাচগুলো আয়োজন করতে চায় ইংল্যান্ড।
আরও পড়ুন: পেছাতে পারে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজ
ইংল্যান্ডের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন মতে, আগামী সেপ্টেম্বরে আইপিএলের অবশিষ্ট অংশ আয়োজন করার প্রস্তাব দিয়েছেন ইসিবির প্রধান নির্বাহী রিচার্ড গোল্ড। যদিও বিসিসিআইয়ের সঙ্গে এখনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হয়নি, তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় এটাই আপাতত সম্ভাব্য সেরা বিকল্প হিসেবে মনে করা হচ্ছে। তাছাড়া বিদেশি খেলোয়াড়রা টুর্নামেন্ট ছেড়ে নিজ নিজ দেশে ফিরে যাচ্ছেন, ফলে ইংল্যান্ডে ম্যাচগুলো স্থানান্তর করা গেলে পুরো আসর বাতিল হওয়া থেকে বাঁচানো যাবে।

এর আগে ২০২১ সালেও কোভিডের কারণে টুর্নামেন্ট মাঝপথে থেমে গিয়েছিল এবং বাকি অংশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এছাড়া ২০০৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ২০১৪ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আইপিএলে আয়োজিত হয়েছিলো। তাই ভারতের বাইরে আইপিএল আয়োজন নতুন কিছু নয়।
আরও পড়ুন: টেস্ট থেকে অবসর নিতে চান কোহলি
এবার, ৭৪ ম্যাচের আইপিএলের মধ্যে ৫৮টি ম্যাচ ইতিমধ্যে হয়ে গেছে। বাকি আছে ১২টি গ্রুপ ম্যাচ ও ৪টি প্লে-অফ। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনার পর টুর্নামেন্ট পুরোপুরি ভারতের মাটিতে শেষ হওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে বড় ধোঁয়াশা। ধর্মশালায় পাঞ্জাব কিংস ও দিল্লি ক্যাপিটালসের ম্যাচ চলাকালীন আশপাশে সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর পরই খেলা বন্ধ করে দিতে হয়। মাঠে আলো নিভিয়ে দর্শকদের সরিয়ে ফেলা হয়, খেলোয়াড়দেরও নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। পরদিনই বিসিসিআই পুরো টুর্নামেনের স্থগিতাদেশ দেয়। দেশের ২৭টি বিমানবন্দরও এই মুহূর্তে নিরাপত্তাজনিত কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে।

আইপিএলের প্রতি ম্যাচে বিসিসিআইয়ের আয় প্রায় কয়েক মিলিয়ন ডলার। সম্প্রচার স্বত্ব, স্পনসরশিপ, ডিজিটাল ভিউয়ারশিপ, সবকিছু মিলিয়ে আর্থিকভাবে এ যেন রীতিমতো এক মহাযজ্ঞ। তবে এক সপ্তাহের স্থগিতাদেশ আয়োজক কমিটির জন্য বেশ বড় এক ধাক্কা। এই বাস্তবতায় ইংল্যান্ডে ম্যাচ আয়োজন অর্থনৈতিকভাবেও লাভজনক হতে পারে, কারণ সেখানে দক্ষিণ এশীয় ক্রিকেটপ্রেমী বিশাল দর্শকগোষ্ঠী রয়েছে, যারা খুব সহজেই মাঠ পরিপূর্ণ করতে সক্ষম।
আরও পড়ুন: ইয়াসির-নাসুমের ফিফটিতে বাংলাদেশ ‘এ’-র সংগ্রহ ২২৭
এমনকি ব্রিটিশ সময়সূচি অনুযায়ী ম্যাচ হলেও তা ভারতীয় দর্শকদের রাতের প্রাইম টাইমে সম্প্রচার করা সম্ভব। এই সব কিছু বিবেচনা করলে ইংল্যান্ডই হবে আইপিএল আয়োজনের সেরা বিকল্প। তবে শেষ পর্যন্ত আয়োজক কমিটি কি সিদ্ধান্ত নেয় বা কবে নাগাদ আসরের বাকি ম্যাচগুলো শুরু হবে সেটার উত্তর সময়ই বলে দেবে।