বৃহস্পতিবার, জুন ২৬, ২০২৫
সামি'স কর্নার

৩৩ বছর বয়সেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় ক্লাসেনের

হঠাৎ করেই যেন থেমে গেল এক ঝড়। ব্যাট হাতে যিনি মাঝের ওভারে হানা দিতেন, স্পিনারদের বলকে উড়িয়ে দিতেন বাউন্ডারির বাইরে, সেই হেনরিখ ক্লাসেন জানিয়ে দিলেন— আর আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেখা যাবে না তাঁকে। সাত বছরের পথচলা শেষে বিদায় জানালেন দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সব ধরনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে।

৩৩ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার নিজের অফিসিয়াল ইন্সটাগ্রামে এক আবেগঘন বার্তায় এই ঘোষণা দেন। সাদা পোশাক থেকে আগেই অবসর নিয়েছিলেন, এবার থামলেন ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টিতেও।

আরও পড়ুন: ওডিয়াই ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন ম্যাক্সওয়েল

২০১৮ সালে আন্তর্জাতিক অভিষেকের পর ধীরে ধীরে দলে জায়গা করে নেন ক্লাসেন। অনেকটা দেরিতে এলেও প্রভাবটা ছিল বেশ তীব্র। ৬০টি ওয়ানডেতে প্রায় ৪৪ গড়ে ২ হাজারের বেশি রান, সঙ্গে বেশ কয়েকটা ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়া ইনিংস। সবমিলিয়ে তিনি ছিলেন সেই ব্যাটার, যিনি চাপের মুহূর্তে দাঁড়িয়ে গড়তেন ম্যাচের মোড়।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২০২৩ সালের সেই ১৭৪ রানের ইনিংস— সুপারস্পোর্ট পার্কে যেন নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে দিয়েছিলেন তিনি। ইতিহাসে পাঁচ নম্বরে নেমে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর সেটাই, এবং সেটা এসেছিল এমন আগ্রাসন আর শিল্পের মিশেলে, যেটা সহজে ভুলে যাওয়ার নয়।

টি-টোয়েন্টিতেও ছিলেন একই রকম বিধ্বংসী। ৫৮ ম্যাচে স্ট্রাইক রেট ছিল ১৪১– এর ওপরে। স্পিনারদের মুখোমুখি হলে তিনি যেন এক অন্য মানুষ, মুহূর্তেই গতি বদলে আক্রমণে যেতে পারতেন। দক্ষিণ আফ্রিকার সাদা বলের ব্যাটিং ইউনিটে ক্লাসেন ছিলেন এক ভরসার জায়গা, যেখানে দরকার, সেখানে নিজেকে মানিয়ে নিতেন নিঃশব্দে।

আরও পড়ুন: শ্রেয়াস আইয়ার: তিন ফ্র্যাঞ্চাইজিকে ফাইনালে নেওয়া অধিনায়ক

বিদায়বার্তায় ক্লাসেন লিখেছেন, “আজকের দিনটা আমার জন্য অনেক কষ্টের। বহুদিন ধরে ভেবে অবশেষে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ানোর। এটা খুব কঠিন ছিল, কিন্তু এখন আমি শান্তি অনুভব করছি।”

শৈশবের সেই স্বপ্ন, দেশের হয়ে খেলা, সেটি পূর্ণতা পেয়েছিল বলেই আজ এত কৃতজ্ঞতা তাঁর কণ্ঠে। ক্লাসেন বলেন, “প্রোটিয়াদের জার্সি গায়ে চাপানোটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সম্মান। ছোটবেলা থেকেই যেটার জন্য স্বপ্ন দেখতাম, সেটাই পূরণ করতে পেরেছি।”

তিনি বলেন, “তাঁর এই পথচলা ছিল অন্যদের চেয়ে একটু আলাদা। মাঝেমধ্যে থেমে যাওয়ার মতো মুহূর্ত এসেছিল, কিন্তু কিছু মানুষ, বিশেষ করে কিছু কোচ তাঁর ওপর আস্থা রেখেছিলেন, যাঁদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞ।”

আরও পড়ুন: কার্ডিফে রুটের মহাকাব্য, ভিভকে ছাড়িয়ে কেসির কীর্তি

তবে এই যাত্রাটা শুধু রানের গল্প না। ক্লাসেন মনে করিয়ে দিয়েছেন, এই সময়টায় তৈরি হয়েছে অজস্র সম্পর্ক, বন্ধুত্ব, যা সারাজীবনের সঙ্গী হয়ে থাকবে। তিনি লিখেছেন, “প্রোটিয়া দলে খেলার সুবাদে এমন কিছু মানুষের সঙ্গে দেখা হয়েছে, যারা আমার জীবনটাই বদলে দিয়েছেন। তাঁদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।”

পরিবারের সঙ্গে আরও সময় কাটানোর ইচ্ছায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেও, দেশের প্রতি ভালোবাসাটা ঠিক আগের মতোই আছে। ক্লাসেন লিখেছেন, “আমি সবসময় একজন গর্বিত প্রোটিয়া সমর্থক হয়ে থাকব। যারা আমাকে আর আমার সতীর্থদের পাশে ছিলেন, তাঁদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।”

আরও পড়ুন: হারিসের ঝড়ো সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানে হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ

আরও খবর

একটি মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ খবর

জনপ্রিয় খবর