জাতীয় গণমাধ্যমে সম্প্রতি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আর্থিক কার্যক্রম নিয়ে যেসব প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলোকে ‘ভুল ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে আখ্যা দিয়েছে বিসিবি। এক বিবৃতিতে বোর্ড দাবি করেছে, এসব প্রতিবেদন নিরপেক্ষ নয় এবং বোর্ড ও এর সভাপতি ফারুক আহমেদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার ষড়যন্ত্রের অংশ।
বিসিবির ভাষ্য অনুযায়ী, বোর্ড সবসময়ই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার নীতিতে অটল রয়েছে। আর্থিক লেনদেন নিয়ে জনগণ ও প্রকৃত সাংবাদিকদের বিভ্রান্তি দূর করতে তারা কয়েকটি ব্যাখ্যা তুলে ধরেছে।
আরও পড়ুন: নাটকের অবসান, ফাইনালে মাঠে নামছে রিয়াল মাদ্রিদ

২০২৪ সালের আগস্টে দায়িত্ব নেওয়ার পর বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ আর্থিক নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেন। বিশেষ করে বিগত বছরগুলোতে নানা অনিয়মের অভিযোগ এবং ২০২৪ সালের মাঝামাঝি দেশের অর্থনৈতিক অস্থিরতার পর, বোর্ডের আর্থিক কাঠামো আরও দৃঢ় করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
নতুন কৌশলের অংশ হিসেবে, বিসিবি ব্যাংকিং অংশীদার নির্বাচনেও কড়া মাপকাঠি নির্ধারণ করে। সিদ্ধান্ত হয়, কেবল বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত ‘গ্রিন’ ও ‘ইয়েলো’ জোনভুক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেই লেনদেন করা হবে। ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংক থেকে ২৫০ কোটি টাকা সরিয়ে ২৩৮ কোটি টাকা নিরাপদ ব্যাংকে পুনর্বিনিয়োগ করা হয়, আর বাকি ১২ কোটি টাকা রাখা হয় দৈনন্দিন পরিচালন ব্যয়ের জন্য।
বিসিবি স্পষ্ট করে জানায়, ব্যাংকিং লেনদেনের অনুমোদন কোনো একক ব্যক্তির সিদ্ধান্ত নয়। বোর্ডের ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান ফাহিম সিনহা ও টেন্ডার-পরচেজ কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুবুল আনাম যৌথভাবে অনুমোদন দেন। সভাপতি নিজে কোনো চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী নন।
বোর্ড আরও দাবি করেছে, কিছু অভ্যন্তরীণ স্বার্থান্বেষী মহল পরিকল্পিতভাবে বোর্ডের সম্মান ক্ষুণ্ণের চেষ্টা করছে। তাই আর্থিক নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। বর্তমানে বিসিবির অর্থ ১৩টি নির্ভরযোগ্য ব্যাংকে রাখা হয়েছে। যার ফলে স্থায়ী আমানত থেকে ২ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত বেশি মুনাফা অর্জিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: টানা দুই হারে তলানিতেই থাকলো চেন্নাই

এছাড়া, গত ছয় মাসে বিসিবি তিনটি ব্যাংকিং অংশীদারের কাছ থেকে প্রায় ১২ কোটি টাকার স্পনসরশিপ পেয়েছে। অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্যও প্রায় ২০ কোটি টাকার অতিরিক্ত বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি মিলেছে, যা আর্থিক অংশীদারিত্বের শক্ত ভিতের ইঙ্গিত দেয়।
বিসিবি জানিয়েছে, তারা সবসময় সত্যনিষ্ঠ তদন্ত ও বিশ্লেষণকে স্বাগত জানায়। পাশাপাশি গণমাধ্যমকে আহ্বান জানিয়েছে, যেন ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশ করে ক্রিকেটের সুনাম নষ্ট না করা হয়।