আইপিএলের ৪১তম ম্যাচে হায়দ্রাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছিল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স এবং সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। এই টুর্নামেন্টটা হায়দ্রাবাদ এমনি তাদের চিরচেনা খেলা খেলতে পারছিল না, ম্যাচের পর ম্যাচ হেরেই চলেছে তারা। অন্যদিকে মুম্বাই ছিল এক কামব্যাকের আশায়। দুই দল আগের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল একে অপরের এবং সেই ম্যাচে মুম্বাইয়ের মাটিতে জয়লাভ করে মুম্বাই। এদিন হায়দ্রাবাদের ঘরের মাটিতে এসেও সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদকে ধরাশায়ী করে মুম্বাই।
টসে জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্তটা মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়ার। হার্দিকের এই সিদ্ধান্তকে শতভাগ সঠিক প্রমাণ করে মুম্বাইয়ের পেস বোলাররা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ট্রেন্ট বোল্ট নিজের প্রথম ওভার করতে এসে ফিরিয়ে দেন ধ্বংসাত্মক ব্যাটার ট্রাভিস হেডকে। এদিন হেড শূন্য রানে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। পরের ওভারে দীপক চাহার এসে ঈশান কিষানকে আউট করেন এবং চতুর্থ ওভারে ট্রেন্ট বোল্ট আবার আরেক ওপেনার অভিষেক শর্মাকে আউট করলে তের রানের মাঝে তিন টপ অর্ডারকে হারিয়ে ফেলে হায়দ্রাবাদ।
আরও পড়ুন: মার্কিন ব্যাটার গাউসের ব্যাটিংয়ে ধরাশায়ী মুলতান
তখনও ব্যর্থতা ঘুচেনি হায়দ্রাবাদের, পঞ্চম ওভারে দীপক চাহার আবার নীতিশ রানাকে আউট করলে ১৩ রানের মাঝে চার উইকেট হারিয়ে ফেলে হায়দ্রাবাদ। ইনিংস শুরু হওয়ার আগেই ব্যাকফুটে চলে যায় হায়দ্রাবাদ। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন আফ্রিকান ব্যাটার হেনরিক ক্লাসেন এবং তরুণ অনিকেত ভার্মা। হার্দিকের বলে ১৪ বলে ১২ রান করে অনিকেত বিদায় নিলে ৩৫ রানে ৫ উইকেট হারায় হায়দ্রাবাদ। সেই ধাক্কা সামাল দিতে ক্লাসেনকে সঙ্গ দেন ইম্প্যাক্ট প্লেয়ার অভিনব মনোহর। দুইজনের ৯৯ রানের জুটিতে সম্মানজনক পুঁজির দিকে আগায় সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। ক্লাসেন ৪৪ বলে ৭১ রান করে বুমরাহর বলে আউট হলে হায়দ্রাবাদের ষষ্ঠ উইকেটের পতন ঘটে ১৩৪ রানে। এই উইকেটের মধ্য দিয়ে বুমরাহ তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ৩০০ তম উইকেট পান। শেষ পর্যন্ত হায়দ্রাবাদের স্কোর দাঁড়ায় আট উইকেটে ১৪৩ রানে। ট্রেন্ট বোল্ট সর্বোচ্চ চার উইকেট পান এবং দীপক চাহার দুটি উইকেট নেন।
১৪৪ রানের সহজ লক্ষ্যের শুরুতে রিকেলটনের উইকেট হারালেও আগের ম্যাচে ফিফটি করা রোহিত শর্মা এদিনও জানান দেন নিজের উপস্থিতি। দ্বিতীয় উইকেটে উইল জ্যাকসকে নিয়ে ৪৬ বলে ৬৪ রানের জুটি গড়েন রোহিত, যার মধ্যে বড় রান আসে রোহিতের ব্যাট থেকে। জ্যাকস ফিরলে সুরিয়াকুমার ইয়াদাভকে সঙ্গে নিয়ে ৫৩ রানের জুটি গড়েন রোহিত।
আরও পড়ুন: জুনেই প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে জামাল-হামজারা, প্রতিপক্ষ কারা?
ঈশান মালিঙ্গার শিকার হয়ে ফিরে যাওয়ার আগে রোহিত ৪৬ বলে ৭০ রানের এক দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন। ৯ বছর পর আইপিএলে টানা ২ ফিফটি পান রোহিত। শেষ পর্যন্ত সুরিয়ার ১৯ বলে ৪০ রানের ঝড়ো ক্যামিওতে ২৬ বল হাতে রেখে সহজেই জয় পায় মুম্বাই। এই জয়ে নয় ম্যাচে পাঁচ জয় নিয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকায় তৃতীয় স্থানে উঠে এল মুম্বাই, অন্যদিকে ৬ হার নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের ১০ দলের মাঝে নবম স্থানে আছে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ।
স্কোরকার্ড :
সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ : ১৪৩/৮ (২০ ওভার)
(ক্লাসেন ৭১, অভিনব ৪৩, বোল্ট ৪/২৬, চাহার ২/১২)
মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স: ১৪৬/৩ (১৫.৩ ওভার)
(রোহিত ৭০, সুরিয়াকুমার ৪০*)
ফলাফল : মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: ট্রেন্ট বোল্ট