লিটনের অধিনায়কত্ব রেকর্ড হয়তো সংখ্যার হিসেবে হয়তো খুব বেশি নয়। তবে মর্যাদার দিক থেকে, তা নিঃসন্দেহে অনেক বড়। প্রথমবারের পূর্ণ সময়ের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন লিটন কুমার দাস। যদিও জাতীয় দলের নেতৃত্ব তার জন্য নতুন নয়। আগেও টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি—তিন ফরম্যাটেই দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি, তবে প্রতিবারই তা ছিল সীমিত সময়ের জন্য, মূল অধিনায়কের অনুপস্থিতিতে।টেস্টে লিটনের অধীনে একমাত্র ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে এসেছিল ৫৪৬ রানের রেকর্ড জয়। ওয়ানডেতে সাত ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে জয় পেয়েছেন ভারতের বিপক্ষে হাইভোল্টেজ সিরিজে। এছাড়া আফগানিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও তার নেতৃত্বে নেমেছে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন চারটি ম্যাচে, যার মধ্যে গত ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের হোয়াইটওয়াশ ছিল সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য—যেখানে ৩-০ ব্যবধানে জয় আসে লিটনের অধীনেই।

আরও পড়ুন: বিসিবি চাইলে আমরা অবশ্যই পাকিস্তানে খেলতে যাব: লিটন
তবে এবার যে দায়িত্ব পেলেন, সেটি আগের সব অভিজ্ঞতার চেয়ে আলাদা। সেটা মানছেন লিটন নিজেই। আগেরবার দায়িত্ব পেতেন হঠাৎ, একেকটি সিরিজের জন্য সাময়িকভাবে। এবার তা পেয়েছেন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত জাতীয় দলের নেতৃত্বে থাকবেন তিনি।এই দায়িত্বকে লিটন নিচ্ছেন সাদরে, দৃঢ় মনোবলে। লিটনের ভাষায়, “আগে যেহেতু তাৎক্ষণিক কোনো একটি সিরিজের জন্য দায়িত্ব পেতাম, তাই পরিকল্পনাও হতো ছোট পরিসরে। কিন্তু এখন যেহেতু দীর্ঘ সময়ের জন্য অধিনায়কত্ব পেয়েছি, ভবিষ্যতের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা থাকবে—যাতে বাংলাদেশ ক্রিকেট সামনে আরও ভালো জায়গায় পৌঁছাতে পারে।”
লম্বা সময় অধিনায়কত্ব পাওয়ায় দলকে গুছিয়ে নেওয়ার সুযোগ থাকছে পর্যাপ্ত। লিটনও তাই ভবিষ্যতের রূপরেখা গড়ে তুলতে চান ধাপে ধাপে। তিনি মনে করেন, এই সময়টা হবে বাংলাদেশের জন্য কিছু বড় করে দেখানোর সুযোগ। লিটন বলেন, “আমি চাই, আমার হাত ধরে বাংলাদেশে যেন কিছু বড় কিছু আসে।”

আরও পড়ুন: ৩ বছর আগেই বাংলাদেশের কোচ হতে আগ্রহী ছিলেন টেইট
তবে শুধু দলীয় সাফল্য নয়, নিজের পারফরম্যান্সের বিষয়টিও সামনে এনেছেন লিটন। সাম্প্রতিক সময়টা তার ব্যাটে তেমন কিছু আসেনি, এ নিয়ে সচেতন তিনি নিজেও। লিটনের আশা, দ্রুত ফর্মে ফিরে এসে দলের জন্য অবদান রাখতে পারবেন। তার মতে, “সব খেলোয়াড় যেমন চায় ম্যাচে পারফর্ম করতে, ঠিক তেমনি প্রতিটি অধিনায়কও চায় দলকে জেতাতে। আমারও সেই ইচ্ছা থাকবে। আর আমি যত দ্রুত ফর্মে ফিরতে পারব, ততই দল উপকৃত হবে।”আপাতত লিটনের সামনে চ্যালেঞ্জ—২০২৬ বিশ্বকাপ পর্যন্ত বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়ে প্রস্তুত করা একটি প্রতিযোগিতামূলক দল, যে দল নিয়ে স্বপ্ন দেখবে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা।