রাতটা হতে পারত চেন্নাই সুপার কিংসের। হতে পারত ১৭ বছরের এক কিশোরের জীবনের সবচেয়ে রঙিন অধ্যায়। তবে নাটকীয়তার শেষে এই ম্যাচের নায়ক হোন রোমারিও শেফার্ড। তাঁর ব্যাটিং তাণ্ডবে দুই রানের ব্যবধানে থমকে গেল চেন্নাইয়ের স্বপ্নযাত্রা, থেমে গেল আয়ুশের রূপকথাও।
ম্যাচের শুরু থেকেই জমে উঠেছিল ব্যাঙ্গালুরু বনাম চেন্নাইয়ের এই গুরুত্বপূর্ণ লড়াই। ওপেনিংয়ে জ্যাকব বেথেল আর বিরাট কোহলির আগ্রাসী সূচনা দিয়েছিল শক্ত ভিত্তি। এরপর আসর মাতালেন শেফার্ড। মাত্র ১৪ বলে ঝড়ো ফিফটি হাঁকিয়ে তিনি আইপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম হাফসেঞ্চুরির মালিক হয়ে যান। ইনিংসের শেষ দুই ওভারে শেফার্ডের ব্যাট থেকে আসে ৫২ রান, যার মধ্যে এক ওভারেই তুলে নেন ৩৩। তাঁর মারমুখী ব্যাটিংয়ে বেঙ্গালুরুর স্কোরবোর্ডে জ্বলজ্বল করে ২১৩ রান।
আরও পড়ুন: তামিম-জাওয়াদে স্বপ্ন বুনছে বাংলাদেশ

এই বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে চেন্নাইয়ের শুরুটা ছিল অগোছালো। তবে এক পাশে দাঁড়িয়ে ক্রমশ আলো ছড়াতে থাকেন কিশোর আয়ুশ। চাপের মুখেও নিজের ব্যাটে ভরসা রেখে সামনে এগিয়ে যান তিনি। জাদেজার সঙ্গে গড়ে তোলেন কার্যকরী জুটি, যেটা দলকে এনে দেয় ম্যাচে ফিরে আসার স্বপ্ন।
একসময় ম্যাচ এমন জায়গায় পৌঁছায়, যেখানে চেন্নাইয়ের দরকার ছিল মাত্র ২৪ বলে ৪৩ রান। তখনও উইকেটে আয়ুশ, যার ব্যাটে বল হচ্ছিল জ্বলন্ত। কিন্তু দুর্ভাগ্য, শতকের ঠিক আগমুহূর্তে ৯৪ রানে থামতে হয় তাঁকে। এরপর দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন ধোনি ও জাদেজা। শেষ দুই ওভারে দরকার পড়ে ২৯। সমীকরণ যখন দাঁড়ায়— শেষ বলে ৪, তখনো চোখে ছিল হাজারো আশা।

কিন্তু ইয়াশ দয়ালের ছোড়া নিখুঁত ইয়র্কারে ভেসে যায় সেই স্বপ্ন। বেঙ্গালুরুর খেলোয়াড়েরা উল্লাসে ফেটে পড়েন, আর ধোনি-জাদেজারা ফিরে যান হতাশায় নিমগ্ন হয়ে।
আরও পড়ুন: গুজরাটের টপ অর্ডার ত্রয়ীই কি আইপিএল ইতিহাসের সেরা?
এই ম্যাচ শুধু দুই পয়েন্টই এনে দেয়নি, উপহার দিয়েছে নাটকীয়তা, আবেগ আর ক্রিকেটীয় সৌন্দর্যের এক দুর্দান্ত প্রদর্শনী। শেফার্ডের মারমুখী ইনিংস আর আয়ুশের হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া লড়াই—সব মিলিয়ে এটি হয়ে থাকবে আইপিএলের ইতিহাসে স্মরণীয় এক ম্যাচ হয়েই।