হেডিংলিতে টেস্টের ইতিহাসে নিজের নাম সোনার অক্ষরে লেখালেন রিশাভ পান্ত। কিপার-ব্যাটার হিসেবে এক ম্যাচে দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করা মাত্র দ্বিতীয় ক্রিকেটার তিনি। প্রথম ইনিংসে ১৩৪ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ১১৮ রানের ঝকঝকে ইনিংস— অর্থাৎ, দুই ইনিংসেই যেন ছিল পান্তের একচ্ছত্র আধিপত্য। তবে কীর্তিময় এই ম্যাচেই অপ্রত্যাশিত এক ঘটনার জেরেও এবার শিরোনামে উঠল তাঁর নাম— শাস্তি পেতে যাচ্ছেন দারুণ ছন্দে থাকা এই ব্যাটার।
ম্যাচের তৃতীয় দিন ঘটে ঘটনাটি। ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসের ৬১তম ওভারে ভারতীয় পেসাররা বলের অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। আম্পায়ারের কাছে বল পরিবর্তনের অনুরোধ জানানো হয়। যদিও অনফিল্ড আম্পায়ার ক্রিস গ্যাফানি সে অনুরোধে সাড়া দেননি।
আরও পড়ুন: সিপিএলের আগে সাকিবের ম্যাক্স সিক্সটির চ্যালেঞ্জ
কিছু সময় পর রিশাভ পান্ত সরাসরি অন্য আম্পায়ার পল রাইফেলের কাছে যান একই দাবিতে। রাইফেল বল পরীক্ষা করে জানান, বলের আকৃতি এখনো নিয়মের মধ্যেই আছে। এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হন পান্ত— ক্ষোভ সামলাতে না পেরে বল ছুড়ে ফেলেন মাঠে।
আইসিসি এ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নেয়। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে প্রকাশ্য অসন্তোষ ও বল ছুড়ে মারার আচরণকে ২.৮ ধারা অনুযায়ী লেভেল ১ অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করে বিশ্ব ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা। শাস্তি হিসেবে পান্তকে দেওয়া হয়েছে আনুষ্ঠানিক তিরস্কার এবং ১টি ডিমেরিট পয়েন্ট। নিয়ম অনুযায়ী, এমন অপরাধে ম্যাচ ফির শূন্য থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কাটা যেতে পারে, যদিও পান্তের ক্ষেত্রে কেবল সতর্কবার্তা ও ডিমেরিট পয়েন্টেই সীমাবদ্ধ থেকেছে।
আরও পড়ুন: ৯৯ এর তিক্ত অভিজ্ঞতা শুধু বাংলাদেশেরই নেই
ঘটনার পরপরই ম্যাচ রেফারি রিচি রিচার্ডসনের কাছে নিজের আচরণের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন পান্ত এবং শাস্তি মেনে নেন। ফলে কোনো শুনানির প্রয়োজন পড়েনি। ঘটনার সময় মাঠে থাকা আম্পায়াররা— গ্যাফানি, রাইফেল, তৃতীয় আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত ও চতুর্থ আম্পায়ার মাইক বার্নস, সকলেই শাস্তির বিষয়ে একমত ছিলেন।
এই ঘটনার মধ্য দিয়েই টেস্ট ক্রিকেটের এক ম্যাচে রেকর্ড গড়া যেমন হলো, তেমনি পান্তের নামের পাশে যোগ হলো আচরণজনিত ত্রুটির এক স্মারকও। যদিও তা তাঁর ব্যাটিং কীর্তিকে ঢেকে রাখতে পারছে না। সেঞ্চুরির পর সেঞ্চুরি করে দলকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে গেছেন পান্ত, যার ধারাবাহিকতায় ভারত হেডিংলিতে ইংল্যান্ডের সামনে ৩৭১ রানের বিশাল লক্ষ্য দাঁড় করায়।