সিলেট টেস্ট যেন আরও একবার আঙুল তুলল অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমের ব্যাটিং ফর্মের দিকে। দুই ইনিংসে মাত্র ৮ রান, টানা ১২ ইনিংস ধরে নেই কোনো পঞ্চাশোর্ধ্ব স্কোর— বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম নির্ভরতার প্রতীক এমন ছন্দহীনতায় পড়ে গেছেন, সেটা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। তবে ব্যর্থতার এই মেঘে যখন সমালোচনার ছায়া ঘনাচ্ছে, তখন বর্ষীয়ান এই ক্রিকেটারের পাশে দাঁড়াচ্ছেন তাঁরই সতীর্থরা।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত একদম স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন, ব্যাটে রান না থাকলেও মুশফিক দলের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ, “উনি শুধু ব্যাট হাতে নন, দলের পরিকল্পনা, ফিল্ডিংয়ের সময় পরামর্শ— সবকিছুতেই থাকেন। অনুশীলনের সময় তরুণদের সঙ্গে যে কথা বলেন, সেটা অনেক কাজে দেয়। আর উনার অভিজ্ঞতা, সেটা তো বলে বোঝানোর নয়।”
আরও পড়ুন: ম্যাচ হারের দায়ভার নিজের কাঁধেই নিলেন শান্ত
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ১০০টি টেস্ট খেলার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি— এমন মাইলফলক ছুঁতে আর মাত্র পাঁচ ম্যাচ বাকি। যদিও অধিনায়ক শান্ত জানালেন, রেকর্ড নিয়ে ভাবেন না তিনি। এ প্রসঙ্গে বলেন, “ব্যক্তিগত মাইলফলক বা পুরনো রেকর্ড এসব নিয়ে উনি ভাবেন না, আমরাও না। আমরা চাই উনি মাঠে থাকুন, অভিজ্ঞতা দিয়ে দলকে সাহায্য করুন। পরের টেস্টে উনি নিশ্চয়ই ফিরবেন— আমার বিশ্বাস, এই কঠিন সময় পেরিয়ে আবারও আগের মুশফিককে দেখব।”
শুধু অধিনায়কই নন, আগের দিন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুমিনুল হকও পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মুশফিকের। তিনি বলেছিলেন, “আমি কখনোই ওনাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা করি না। উনি জানে কীভাবে রান করতে হয়, কীভাবে পরিস্থিতি সামলাতে হয়। এতদিন ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলে এসেছেন, ওনার অভিজ্ঞতাই যথেষ্ট। মানুষ প্রায়ই ভুলে যায় মুশফিকভাই দেশের হয়ে কত কিছু করেছে, কত ম্যাচে দলকে টেনে তুলেছে। ওনার মতো একজনকে নিয়ে প্রশ্ন তোলা ঠিক না।”
আরও পড়ুন: শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ম্লান বিজয়ের শতক, জয় পেলো আবাহনী
সব মিলিয়ে বলাই যায়— রানহীন সময়টা যতই দীর্ঘ হোক, মুশফিকুর রহিম এখনো তাঁর সতীর্থদের আস্থার জায়গা। সুতরাং এবার দেখার পালা, এই আস্থা, এই ভরসার প্রতিদান ব্যাট হাতে কতটা ফিরিয়ে দিতে পারেন চট্টগ্রামে দ্বিতীয় টেস্টে।