পেশোয়ার জালমিকে ৮০ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে জয় দিয়ে পিএসএলের দশম আসরের যাত্রা শুরু করেছে কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটরস। অন্যদিকে হাইস্কোরিং ম্যাচে মুলতান সুলতান্সকে হারিয়েছে ডেভিড ওয়ার্নারের নেতৃত্বাধীন করাচি কিংস।

আরও পড়ুন: টানা তিন জয়ে লক্ষ্ণৌ, অভিষেক ঝড়ে জয়ে ফিরলো হায়দ্রাবাদও
দ্বিতীয় দিনের প্রথম খেলা:
রাওয়ালপিন্ডিতে টসে জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন পেশোয়ার জালমির অধিনায়ক বাবর আজম। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে কোয়েটার হয়ে ম্যাচের ভিত্তি গড়ে দেন ফিন অ্যালেন, যিনি ২৫ বলে ৫৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে ইনিংসের গতি নির্ধারণ করে দেন। তার সঙ্গী সাউদ শাকিলও ফিফটি করে। এরপর রাইলি রুশো, হাসান নাওয়াজ ও কুসল মেন্ডিসের ব্যাটে থেমে থাকেনি আক্রমণ। ২০ ওভারে কোয়েটা সংগ্রহ করে ২১৬ রান। পেশোয়ার জালমির হয়ে বল হাতে এদিন কেউ গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেননি। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের গতিতারকা নাহিদ রানা এবার পেশোয়ার জালমির হয়েই খেলবেন। তবে জিম্বাবুয়ে সিরিজে থাকায় তিনি প্রথম টেস্ট খেলে তারপর পাকিস্তানে আসবেন, যে কারণে পেশোয়ার জালমির হয়ে প্রথম পাঁচটি ম্যাচ মিস করছেন তিনি।

আরও পড়ুন: এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় হৃদয়, শাস্তি পেলেন ইবাদতও
২১৭ রানের জবাবে পেশোয়ার জালমি শুরুতেই ধাক্কা খায়। দ্বিতীয় বলেই পেশোয়ার জালমির অধিনায়ক বাবর আজম রানের খাতা খুলার আগেই ফেরেন মোহাম্মদ আমিরের বলে। এরপর সাইম আইয়ুব কিছুটা লড়াই করেন, ৩৮ বলে ফিফটি করেন। কিন্তু অন্য প্রান্তে নিয়মিত উইকেট পড়তে থাকলে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে পেশোয়ার জালমি। হারিস, কোহলার-ক্যাডমোর ও তালাতরা শুরু করেও স্থায়ী হতে পারেননি। ম্যাচের সবচেয়ে বড় ধাক্কা দেন আবরার আহমেদ। নিজের ঘূর্ণি দিয়ে তিনি ৪ উইকেট তুলে নেন এবং পেশোয়ার জালমির ইনিংসে ধস নামান। ২৪ রানের ব্যবধানে পড়ে যায় ছয় উইকেট। শেষে মিচেল ওয়েন কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুললেও সেটা ছিল কেবল হারের ব্যবধান কমানো। দুর্দান্ত বোলিং পারফরম্যান্সের জন্য ম্যাচসেরা হন আবরার।
স্কোরকার্ড:
কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটরস: ২১৬/৩ (২০ ওভার)
(শাকিল ৫৯, ফিন ৫৩, নাওয়াজ ৪১, আলী রাজা ১/৩১)
পেশোয়ার জালমি: ১৩৬/১০ (১৫.১ ওভার)
(সাইম ৫০, ওয়েন ৩১, আবরার ৪/৪২)
ফলাফল : কোয়েটা ৮০ রানে জয়ী
দিনের দ্বিতীয় খেলা:
পিএসএলের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অংশ নিলেন অস্ট্রেলিয়ান তারকা ডেভিড ওয়ার্নার। করাচি কিংসের হয়ে শুধুমাত্র খেলোয়াড় নয়, অধিনায়ক হিসেবেও অভিষেক হলো তার। করাচিতে টসে জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। করাচি দলে বাংলাদেশের লিটন দাসের থাকার কথা থাকলেও, ইনজুরির কারণে শেষ মুহূর্তে দেশে ফিরে যান এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার।
ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত সূচনা এনে দেন মুলতান সুলতানসের অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান। এক পাশ আগলে রেখে খেলতে থাকেন তিনি। শাই হোপ এবং ওসমান খান ব্যর্থ হলেও কামরান গোলাম খেলেন ১৯ বলে ৩৬ রানের কার্যকর ইনিংস। তবে শেষের ঝড়টা তোলেন মাইকেল ব্রেসওয়েল—১৭ বলে ৪৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে। অপর প্রান্তে রিজওয়ান তুলে নেন দারুণ এক শতক, ৬৩ বলে ১০৫ রানে অপরাজিত থেকে মুলতানকে পৌঁছে দেন ২৩৪ রানে।

আরও পড়ুন: ইংরেজি বলতে না পারায় আমি ১ শতাংশও লজ্জিত নই: রিজওয়ান
২৩৫ রানের জবাবে শুরুটা দুর্দান্ত করে করাচি। টিম সেইফার্ট এবং ডেভিড ওয়ার্নার মিলে প্রথম তিন ওভারেই তোলেন ৪০ রান। তবে এরপর উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে তারা। সেখান থেকে ম্যাচে ফেরান তিন নম্বরে নামা জেমস ভিন্স। মাত্র ৪৩ বলে ১০১ রানের ঝকঝকে ইনিংসে রানের বন্যা বইয়ে দেন তিনি। তার সঙ্গে ছিলেন খুশদিল শাহ, যিনি খেলেন ৩৭ বলে ৬০ রানের ঝড়ো ইনিংস।
শেষদিকে কিছুটা চাপ এলেও জয় পেতে আর বাধা হয়নি। বিশাল লক্ষ্য তাড়া করে করাচি জয় তুলে নেয় ৪ উইকেটে। ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন জেমস ভিঞ্চ।
স্কোরকার্ড:
মুলতান সুলতান্স: ২৩৪/৩ (২০ ওভার)
রিজওয়ান ১০৫*, ব্রেসওয়েল ৪৪*, কামরান ৩৬, খুশদিল ১/৩৩)
করাচি কিংস: ২৩৬/৬ (১৯.২ ওভার)
(ভিন্স ১০১, খুশদিল ৬০, সেইফার্ট ৩২, আকিফ ৩/৪১)
ফলাফল: করাচি ৪ উইকেটে জয়ী।