বৃহস্পতিবার, জুন ২৬, ২০২৫
সামি'স কর্নার

বেঙ্গালুরুর চেনা মাঠই যেনো দুঃস্বপ্ন

এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের প্রাণবন্ত পরিবেশ রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর (আরসিবি) জন্য অনুপ্রেরণার এক উৎস । যদি শুধুমাত্র ফ্যানবেজের কথা বলা হয়, তাহলে এই ফ্র্যাঞ্চাইজিটি চেন্নাই সুপার কিংস এবং মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের সমকক্ষ। ১৭ বছর ট্রফিহীন থাকার পরও দলটি এখনও বিপুল সমর্থন উপভোগ করে।  আর ম্যাচের দিন স্টেডিয়ামের কান ফাটানো পরিবেশ যে কোনো প্রতিপক্ষের জন্যই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। ঠিক সেভাবেই, যেভাবে চেপকের গ্যালারি গর্জে ওঠে যখন মহেন্দ্র সিং ধোনি ব্যাট হাতে ক্রিজে আসেন বা ওয়াংখেড়েতে রোহিত শর্মার ব্যাট থেকে বাউন্ডারি আসতে থাকে।

তবে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম ক্রিকেটীয় দৃষ্টিকোণ থেকে প্রতিপক্ষের জন্য মোটেও ভীতিকর কোনো ভেন্যু নয়। কারণ এখানে দীর্ঘদিন ধরেই ব্যাটসম্যানদের সহায়ক পিচ তৈরি করা হয় এবং এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মাঠের ছোট বাউন্ডারি। ফলে প্রতিপক্ষ দলগুলো এই আত্মবিশ্বাস নিয়েই মাঠে নামে যে এখানে তারা জিততে পারবে। আইপিএলের ১৭তম আসরে প্রবেশের আগে চিন্নাস্বামীর মাঠে আরসিবির জয়ের হার মাত্র ৪৬.৫১%। যেখানে চেন্নাইয়ের চেপকে এই হার ৭০.৯৬%, মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে ৬২.৩৩%, এবং কলকাতা নাইট রাইডার্সের ইডেন গার্ডেন্সে ৫৭.৩১%।

ব্যাঙ্গালুরুর এম. চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে টিম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু

এছাড়াও এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৯০০ মিটার উপরে অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এতো উপরে অবস্থান হওয়ায় এখানে বাতাসের ঘনত্ব কম। তাই বল বাতাসের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় কম প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়। এর অর্থ হলো সামান্য ভুল টাইমিং করা শটও অন্য স্টেডিয়ামের তুলনায় এখানে বেশি দূর যেতে পারে যা ব্যাটসম্যানদের জন্য সহজে বাউন্ডারি পার করার সুযোগ তৈরি করে। হালকা বাতাসের ফলে স্পিনারদের বলের গ্রিপ করতেও সমস্যা হয়। তবে এই বিষয়গুলো হোম টিম ও প্রতিপক্ষ দল উভয়ের জন্যই একই।

দল নির্বাচনে ভুল করাও আরসিবির ঘরের মাঠে মলিন পারফরম্যান্সের অন্যতম কারণ। ব্যাটিং প্যারাডাইস কন্ডিশন হওয়ায় যেখানে শক্তিশালী বোলিং লাইনআপ নিয়ে দল গঠন করা উচিত সেখানে আরসিবি দল গঠন করে তারকা খ্যাতি সমৃদ্ধ বিদেশি ব্যাটার নিয়ে। তাই ভিরাট কোহলি  আর রাহুল দ্রাবিড় ব্যতীত কোনো ভারতীয় ব্যাটসম্যানই আরসিবির হয়ে ১০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করতে পারেননি।

যদিও আরসিবির ব্যাটিং কোচ ও মেন্টর হিসেবে দিনেশ কার্তিকের দায়িত্ব গ্রহণের পর কিছুটা পরিবর্তনের আভাস মিলেছে। এই আসরের নিলামে আরসিবি দলে এনেছে ভুবনেশ্বর কুমার, জস হ্যাজলউদ, নুওয়ান থুসারা ও এনগিদির মতো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরীক্ষীত বোলারদের। তাদের উপযুক্ত সঙ্গ দিবেন ইয়াশ ডায়াল ও রাশিক দারের মতো উঠতি ভারতীয় পেসাররা। তবে স্পিন বোলার হিসেবে কুনাল পান্ডিয়া বাদে আর কোনো পরীক্ষিত স্পিনার আরসিবির স্কোয়াডে নেই। তাহলে কি এবার রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু অবশেষে শিরোপার স্বপ্নপূরণ করবে, নাকি বিরাট ও তার ভক্তদের জন্য অপেক্ষা করছে আরেকটি হতাশার বছর?

আরও খবর

একটি মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ খবর

জনপ্রিয় খবর