বৃহস্পতিবার, জুন ২৬, ২০২৫
সামি'স কর্নার

বিজয়ের পঞ্চাশতম সেঞ্চুরির দিনে গাজী গ্রুপের জয়

এনামুল হক বিজয় এই ডিপিএলে যেন নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার বদ্ধপরিকল্পনা নিয়ে হাজির হয়েছেন। সুপারলীগের দ্বিতীয় দিনের ম্যাচ শুরুর আগে ৬৫৫ রান নিয়ে বিজয় ছিলেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক, আজ শতক হাঁকিয়ে দলকে জিতিয়ে সেই অবস্থানটা আরও শক্তপোক্ত করলেন ডানহাতি এই ওপেনার। এদিন বিজয় অবশ্য চলে গেছেন রেকর্ডবুকে, প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে স্বীকৃত ক্রিকেটে ৫০ সেঞ্চুরির মালিক এখন বিজয়। ডিপিএলের সুপার লিগে দ্বিতীয় দিনের ম্যাচে বিকেএসপির চার নম্বর গ্রাউন্ডে মুখোমুখি হয়েছিল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ও গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের অধিনায়ক আকবর আলী।

আকবর আলীর সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করেন রূপগঞ্জের ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ও সাইফ হাসান। দু’জনেই একেবারে উড়ন্ত শুরু করেন। দু’জনেই পান ফিফটি এবং উদ্বোধনী জুটিতে যোগ করেন শত রানের জুটি। তবে ১৬তম ওভারে দলীয় ১০১ রানে প্রথম উইকেটের পতন ঘটে। আবু হাশেমের বলে সাইফ আউট হওয়ার আগে ৫৫ বলে ৫২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন, যাতে ছিল পাঁচটি চারের সাথে দুটি ছক্কার মার। সাইফ আউট হওয়ার পর সৌম্য সরকার খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি, মাত্র ৪ রানেই ফিরে যান। এরপর ওপেনার তানজিদ তামিমও প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। তবে রূপগঞ্জের পক্ষে সবচেয়ে সফল ব্যাটার তিনিই ছিলেন। ৫৩ বলে ৬৮ রানের ঝড়ো ইনিংসে ছিল ছয়টি চার ও তিনটি ছক্কা।

আরও পড়ুন: সুপার লিগে টানা দুই জয় আবাহনীর

এরপর জুটি গড়েন অধিনায়ক আকবর আলী ও আফিফ হোসেন। এক পর্যায়ে লিজেন্ড অফ রুপগঞ্জের ২৭ ওভারে স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ১৭০। এরপরের গল্পটা শুধুই বিজয়ের নেতৃত্বাধীন গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের। সেই জায়গা থেকে রূপগঞ্জ অলআউট হয় মাত্র ২২৩ রানে। অর্থাৎ শেষ ৫৩ রানে দলটি হারায় ৭ উইকেট। মিডল অর্ডার কিংবা লোয়ার মিডল অর্ডারে কেউই প্রতিরোধ গড়তে পারেননি। ৪০ ওভার খেলার আগেই অল-আউট হয়ে যায় দলটি। শেখ পারভেজ জীবনের ঘূর্ণিতে দিশেহারা হয়ে যায় রূপগঞ্জ। তিনি একাই নেন ৫ উইকেট, যা তার লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারের প্রথম ফাইফার। অন্যদিকে লেগস্পিনার ওয়াসি খরুচে হলেও পান ২টি মূল্যবান উইকেট।

প্রথম ইনিংসে বল হাতে এমন দারুণ কামব্যাক করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামা গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স তখন ছিল ভালো মোমেন্টামে। সেই মোমেন্টামকে কাজে লাগান ওপেনার সাদিকুর রহমান ও এনামুল হক বিজয়। এই দু’জন উদ্বোধনী জুটিতে যোগ করেন ৮১ রান। সাদিকুর ৩৬ রানে ফিরে গেলেও বিজয় তুলে নেন অর্ধশতক। তার সাথে দ্বিতীয় উইকেটে জুটি বাঁধেন শামসুর রহমান শুভ। তবে তিনি ১৭ রান করে ফিরে গেলে দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটে গাজী গ্রুপের। তৃতীয় উইকেটে সাব্বির হোসেন শিকদারও খুব একটা সঙ্গ দিতে পারেননি। তবে চতুর্থ উইকেট সালমান হোসেন ইমনকে নিয়ে জয়ের প্রান্তে পৌঁছে যায় এনামুল হক বিজয়। এদিন বিজয় তার স্বীকৃত ক্রিমেট ক্যারিয়ারের ৫০তম সেঞ্চুরি পূরণ করেন। ‘শতকের অর্ধশতক’ পূরণ করা প্রথম ও একমাত্র বাংলাদেশী এখন এনামুল হক বিজয়ই।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশের হয়ে খেলতে রাজি কিউবা মিচেল

বিজয়ের এই রেকর্ড উদযাপনের ভঙ্গিটাও ছিল রাজার মত, ক্রিজের অপরপাশে থাকা সঙ্গী সালমান হোসেন ইমনকে সিংহাসন বানিয়ে সেখানে বসে রাজার ভঙ্গিমায় জানান দিলেন, ডিপিএলে বা ঘরোয়া ক্রিকেটে রাজত্বটা এখন তারই! শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে গাজী গ্রুপ। শেষ পর্যন্ত সাত উইকেটের বড় জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স।

স্কোরকার্ড:

লিজেন্ড অফ রুপগঞ্জ: ২২৩/১০ (৩৯.২ ওভার)

(তানজীদ ৬৮, সাইফ ৫২, জীবন ৫/৩৬)

গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স : ২২৪/৩ (৪১ ওভার)

(বিজয় ১১০*, সালমান ৩৮*, শেখ মেহেদী ২/৫৭)

ফলাফল : গাজী গ্রুপ ৭ উইকেটে জয়ী

আরও খবর

একটি মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ খবর

জনপ্রিয় খবর