শুক্রবার, জুন ২৭, ২০২৫
সামি'স কর্নার

প্লে অফে চতুর্থ দল হিসেবে মুম্বাই, বাদ মুস্তাফিজের দিল্লী

আইপিএলের ৬৩ তম ম্যাচে মুম্বাইয়ের স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছিল দিল্লি ক্যাপিটালস এবং মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। পয়েন্ট টেবিলে ৪ নম্বর অবস্থানে থাকা মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স এবং ৫ নম্বর অবস্থানে থাকা দিল্লি ক্যাপিটালসের জন্য ম্যাচটি ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইতোমধ্যে তিনটি দল—গুজরাট টাইটান্স, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু ও পাঞ্জাব কিংস— আইপিএলে প্লে-অফ নিশ্চিত করে ফেলেছে; এই ম্যাচটি ছিল চতুর্থ দল হিসেবে কে যাবে, তা নির্ধারণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ম্যাচ হারলেই মুস্তাফিজের দিল্লি ক্যাপিটালস বাদ পড়ে যাবে আসর থেকে। এমন মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুস্তাফিজকে একাদশে রেখেছে দিল্লি।

তবে দিল্লির জন্য দুঃসংবাদ ছিল এদিন—অসুস্থতার কারণে তাদের নিয়মিত অধিনায়ক আক্সার প্যাটেল একাদশে ছিলেন না। আক্সার প্যাটেলের বদলে টস করতে আসেন প্রোটিয়া ওপেনার ফাফ ডু প্লেসি। ডু প্লেসির নেতৃত্বেই এই ডু-অর-ডাই ম্যাচ খেলতে নামে দিল্লি। বাঁচা-মরার লড়াইয়ের এই ম্যাচে টসে জিতে দিল্লি প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয়।প্রথমদিকে বেশ দারুণ শুরুর ইঙ্গিত দেন মুম্বাইয়ের দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও রায়ান রিকেল্টন। ২ ওভারেই তুলে নেন ২২ রান। তৃতীয় ওভারে অধিনায়ক ফ্যাফ ডু প্লেসি বল তুলে দেন বাংলাদেশের মুস্তাফিজুর রহমানের হাতে।

আরও পড়ুন: জাকের হাসানের দৃঢ়তায় বাংলাদেশের পুঁজি ১৬২

নিজের করা দ্বিতীয় বলেই রোহিত শর্মার উইকেট তুলে এনে দিল্লীকে প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন মুস্তাফিজুর রহমান। পাওয়ারপ্লেতে ২ ওভার করে মাত্র ১৫ রান খরচ করেন মুস্তাফিজুর। উইল জ্যাকসকে আউট করে দিল্লীর বোলার মুকেশ দিল্লীকে দ্বিতীয় ব্রেকথ্রু এনে দেন। রায়ান রিকেল্টনও ২৫ রান করে ভিপরাজ নিগামের শিকার হয়ে ফিরে গেলে মুম্বাই স্কোরবোর্ডে ৫৮ রান যোগ করতে না করতেই ৩ উইকেট চলে যায়। তবে চতুর্থ উইকেট জুটিতে সুরিয়াকুমার ইয়াদাভ এবং তিলক ভার্মা মিলে জুটি গড়ে মুম্বাইকে এগিয়ে নিয়ে যায়।

আরও পড়ুন: গ্লোবাল সুপার লিগে কবে মাঠে নামছে রংপুর

১৪তম ওভারে মুস্তাফিজুরকে আবার আনা হলে সে ওভারে ৯ রান দিয়ে ওভার শেষ করেন মুস্তাফিজুর, তবে উইকেটের দেখা পাননি তিনি। মুস্তাফিজুর উইকেট না পেলেও ১৫তম ওভারে মুকেশ এসে তিলককে আউট করে গুরত্বপূর্ণ জুটি ভেঙ্গে দেন। দিল্লীর আরেক বিদেশী পেসার দুশমন্ত চামিরা থিতু হতে দেননি হার্দিক পান্ডিয়াকেও। ১৮তম ওভারে নিজের শেষ ওভার করতে এসে মুস্তাফিজুর দেন মাত্র ৬ রান। গুরত্বপূর্ণ ম্যাচে মুস্তাফিজুর চার ওভার বল করে ৩০ রান দিয়ে রোহিত শর্মার উইকেট নিয়ে স্পেল শেষ করেন। তবে শেষ দুই ওভারে মুকেশ কুমার ও দুশমন্ত চামিরাকে তুলোধনা করে ৪৮ রান নেন মুম্বাইয়ের সুরিয়াকুমার ইয়াদাভ এবং নামান ধীর। সুরিয়াকুমার এদিন অপরাজিত ৭৩ রান করেন এবং এই ইনিংস দিয়ে টানা ১৩ ইনিংসে পঁচিশোর্ধ্ব ইনিংস খেলে আইপিএলে রেকর্ড গড়েন সুরিয়াকুমার। অন্যদিকে নামান ধীরের ব্যাট থেকে আসে ৮ বলে ২৪ রানের ক্যামিও। সুরিয়াকুমার ও নামান— দুইজনের ব্যাটিং তান্ডবে মুম্বাইয়ের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৮০।

বাঁচামরার লড়াইয়ে ১৮১ রানের লক্ষ্যে তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই হোঁচট খেতে থাকে দিল্লী। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক ফাফ মাত্র ৬ রান করে ফিরে যান। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ন কে এল রাহুলও এদিন ১১ রানের বেশি করতে পারেননি, উইকেটরক্ষক পোরেলের ব্যাট থেকে আসে ৬ রান। ২৭ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে দিল্লী। এরপর ভিপরাজ নিগামকে নিয়ে জুটি গড়ে সামির রিজভি, ভিপরাজ এদিন ৩ চার ও ১ ছয়ে ১১ বলে ২০ রান করেন। আবারও নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে দিল্লী। সামির রিজভি দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৯ রান করেন। শেষদিকে মুস্তাফিজুর ১১ নম্বর ব্যাটার হিসেবে নামলে বুমরাহর ইয়র্কারে পরাস্ত হয়ে শূন্য রানে আউট হন মুস্তাফিজুর। মুস্তাফিজুর আউট হলে ৫৯ রানের বিশাল জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে। এই জয়ে প্লে-অফ নিশ্চিত করে মুম্বাই৷ অপরদিকে মুস্তাফিজুরের দিল্লি ছিটকে যায় এবারের আসর থেকে।

স্কোরকার্ড

মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স: ১৮০/৫

(সুরিয়াকুমার ৭৩*, মুকেশ ২/৪৮, মুস্তাফিজুর ১/৩০)

দিল্লী ক্যাপিটালস: ১২১/১০

(সামির ৩৯, স্যান্টনার ৩/১১, বুমরাহ ৩/১২)

ফলাফল: মুম্বাই ৫৯ রানে জয়ী।

আরও খবর

একটি মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ খবর

জনপ্রিয় খবর