বৃহস্পতিবার, জুন ২৬, ২০২৫
সামি'স কর্নার

বাংলাদেশকে ডুবিয়েছে মানসিক দুর্বলতা: ল্যাঙ্গাভেল্ট

সিলেট টেস্টে ঘরের মাঠে প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৯১ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ব্যাটারদের আউট হওয়ার ধরন এতটাই হতাশাজনক ছিল যে দিনটা শেষ হওয়ার আগেই জিম্বাবুয়ে তুলে নেয় বিনা উইকেটে ৬৭ রান। প্রতিপক্ষ বোলাররা যেন বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছিল, মানসিকভাবে কতটা পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ।

দিনশেষে সংবাদ সম্মেলনে এলেন এমন একজন, যিনি বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভেতরের গল্প কিছুটা হলেও জানেন। জিম্বাবুয়ের বর্তমান বোলিং কোচ শার্ল ল্যাঙ্গাভেল্ট ২০১৯ সালে ছিলেন বাংলাদেশ দলেরই বোলিং কোচ। পুরোনো খেলোয়াড়দের অনেকেই না থাকলেও, এখানকার ব্যাটারদের ধাঁচ এখনো তাঁর জানা। তাঁর বিশ্লেষণে ফুটে উঠল— এই ব্যর্থতার মূল শেকড়টা লুকিয়ে আছে মাথার ভেতরে।

আরও পড়ুন: ব্যাটিং ব্যর্থতা, রিসোর্স কম, বিকল্প তৈরিতে দিতে হবে সময়

“আমি এটাকে টেকনিক্যাল ভুল নয়, বরং মানসিক দুর্বলতা বলব,”— বলছিলেন ল্যাঙ্গাভেল্ট। তাঁর মতে, শান্তের মতো ব্যাটসম্যান যে শর্ট বলে আত্মঘাতী শট খেলেন, সেটি পরিকল্পনার ঘাটতির চেয়ে আত্মবিশ্বাসের অভাবকেই তুলে ধরে। “মুজারাবানির বলে বাড়তি বাউন্স ছিল, কিন্তু ওর রান করার জায়গাতেই সে বল ছিল। এটা হতেই পারে, কিন্তু এমন ভুল বারবার হলে সেটা চিন্তার বিষয়।”

শুরুটা দুই উইকেট হারিয়েও ঘুরে দাঁড়িয়েছিল টাইগাররা। প্রথম সেশন শেষে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে ভেসে উঠেছিল ২ উইকেটে ৮৪ রান। কিন্তু এরপর যেন ছন্দ হারায় সবকিছু। শান্ত ফেরার পর থেকে একে একে ভেঙে পড়ে মিডল অর্ডার। দ্বিতীয় সেশনেই হারায় ছয় উইকেট।

ল্যাঙ্গাভেল্ট জানালেন, প্রথম সেশনের পরই তিনি বোলারদের বলেছিলেন পরিকল্পনায় বদল আনতে। “আমার মনে হয়েছে আমরা প্রথম দিকে একটু বেশিই শর্ট বল করেছি। তখন বলেছিলাম— কয়েক ওভার আঁটসাঁট লাইনে বল করো, রান না দিলেই চাপ তৈরি হবে।” আর সেটাই হলো। শান্ত আউট হওয়ার পরই যেন শুরু হলো বাংলাদেশের পতনের স্লিপারি যাত্রা।

জিম্বাবুয়ে স্পিনারদের প্রশংসা করতেও ভোলেননি তিনি। ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ও ওয়েসলি মাধাভেরে মিলে ফিরিয়ে দিয়েছেন লোয়ার অর্ডার। “তারা দারুণ পরিকল্পনা নিয়ে বল করেছে, স্পিনারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংই শেষটা গুছিয়ে দিয়েছে আমাদের জন্য,”— বলছিলেন ল্যাঙ্গাভেল্ট।

আরও পড়ুন: শুধু খেলোয়াড়ই নয়, সমস্যা পুরো কাঠামোতেই: সালাউদ্দিন

সিলেটের উইকেট নিয়েও কিছুটা বিস্মিত ল্যাঙ্গাভেল্ট। “বাংলাদেশে আমি এত গতিময় উইকেট আগে দেখিনি। বাউন্স ছিল, মুভমেন্ট ছিল, বল ব্যাটে ভালো আসছিল। এই ধরনের উইকেটে ব্যাটিং সহজ নয়, কিন্তু সেখানেই মানসিক দৃঢ়তা জরুরি।”

বাংলাদেশ দল নিয়ে তাঁর কিছু পুরোনো স্মৃতি থাকলেও, আজকের পারফরম্যান্সে কোনো স্নেহ নয়— শুধু বাস্তবতা। “কয়েকজনকে চিনলেও এখন দলে অনেক নতুন মুখ। তবে কৃতিত্বটা আমাদের বোলারদেরই দিতে হবে। ওরা ধারাবাহিকভাবে চাপ ধরে রেখেছে, এক জায়গায় বল করেছে, যেটা ব্যাটারদের ভুল করতে বাধ্য করেছে।”

সবশেষে যোগ করলেন, “এখনো ম্যাচ বাকি অনেকটা। আত্মতুষ্টির কোনো জায়গা নেই। কিন্তু দিনটিকে বলা যায় জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের জন্য বড় একটি প্রাপ্তি।”

আরও খবর

একটি মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ খবর

জনপ্রিয় খবর