ফিলিস্তিনের সমথর্নে বিতর্কে জড়ানোর পর এবার শেফিল্ড শিল্ডের শেষ ম্যাচ না খেলায় আবারও আলোচনায় অস্ট্রেলিয়ান টেস্ট ওপেনার উসমান খাওয়াজা। কুইন্সল্যান্ড ক্রিকেটের জেনারেল ম্যানেজার জো ডাওস খাওয়াজার শেফিল্ড শিল্ডের এই ম্যাচে না খেলার সিদ্ধান্তকে “হতাশাজনক” বলেছেন। অন্যদিকে, খাওয়াজা দাবি করেছেন হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির কারণে পুনর্বাসন করছিলেন তিনি।
৩৮ বছর বয়সী খাওয়াজা ও কুইন্সল্যান্ড ক্রিকেটের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে মৌসুমের শেষ শিল্ড ম্যাচে খাওয়াজার না খেলার কারণে। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল অ্যাডিলেডের কারেন রোলটন ওভালে। যেখানে কুইন্সল্যান্ড দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ড্র করেছিল।
ম্যাচ চলাকালীন সময়ে উসমান খাওয়াজা মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ান ফর্মুলা ওয়ান গ্রান্ড পিক্সে উপস্থিত ছিলেন। তবে মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন যে তিনি তাসমানিয়ার বিরুদ্ধে আগের ম্যাচে ১২৭ ও অপরাজিত ৩৩ রান করার সময় হ্যামস্ট্রিং চোট পেয়েছিলেন এবং সেই চোটের কারনে পুনর্বাসনে ছিলেন।
কুইন্সল্যান্ড ক্রিকেটের জেনারেল ম্যানেজার জো ডাওস বুধবার (১৯ মার্চ) ব্রিসবেন এয়ারপোর্টে সাংবাদিকদের বলেন, “খাওয়াজার কোনো ইনজুরি ছিল না এবং কুইন্সল্যান্ডের মেডিকেল স্টাফ তাকে খেলার জন্য ফিট ঘোষণা করেছিল।“
এছাড়াও ডাওস বলেন, “আমার জানা মতে, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (CA) স্টাফদেরও একই মতামত। আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে কোনো হ্যামস্ট্রিং সমস্যা নেই। আমি সবসময় আমাদের মেডিকেল টিমের রিপোর্ট অনুযায়ী চলি এবং তাদের ভাষ্যমতে তার খেলার কোনো বাধা ছিল না।”
এ বিষয়ে ডাওস আরও বলেন, ” এটা হতাশাজনক যে তিনি সুযোগ থাকার পরও কুইন্সল্যান্ডের হয়ে খেলেননি। আমার দলে এমন অনেক খেলোয়াড় আছে যারা খেলতে চায়। আমরা হতাশ যে তিনি দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি খেলেননি। তবে এটি তার নিজের সিদ্ধান্ত এবং তিনি এর কারণ জনসাধারণের সামনে ব্যাখ্যা করেছেন। আশা করি, তিনি আগামী সপ্তাহের জন্য নিজেকে তৈরি রাখবেন এবং আমরা শুক্রবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।”
এদিকে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক উইকেটরক্ষক ও কুইন্সল্যান্ড ক্রিকেটের ডেপুটি চেয়ারম্যান ইয়ান হিলি এসইএন রেডিওতে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “ উসমান যখন দলে থাকেন তখন নিজের শতভাগ উজাড় করে দেন। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কুইন্সল্যান্ডের হয়ে বেছে বেছে ম্যাচ খেলার বিষয়টি মেনে নিতে পারছি না এবং আমি একই সাথে খুশি যে খাওয়াজাকে ফর্মুলা ওয়ানের গ্যালারিতে উপস্থিত দেখার জন্য সেসময়ে আমার টিভি চালু ছিলো না। ”
হিলি আরও বলেন, “ ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নেয়া উচিত। আমি তাদের সঙ্গে কথা বলেছি এবং তারা বিষয়টি সম্পর্কে অবগতই ছিলো না যে উসমান কুইন্সল্যান্ডের হয়ে না খেলার বিষয়ে আমাদের কোনো আপত্তি ছিল। তারা চেয়েছিল আমরা আগেই তাদের এ বিষয়ে জানাই। আমি চাই ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া যেন এ বিষয়টি নিয়ে কিছুটা চাপ অনুভব করে। কারণ তারা এ ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টির পরিবেশ করে দিয়েছে।”
অপরদিকে, খাওয়াজাই একমাত্র ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সাথে চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড় নন যিনি মৌসুমের শেষ রাউন্ডে খেলেননি। তিনি ছাড়াও নাথান লায়নও ফর্মুলা ওয়ান গ্র্যান্ড প্রিক্সে উপস্থিত ছিলেন এবং শ্রীলঙ্কা সফরের পর থেকে কোনো ম্যাচ খেলেননি। তিনিও হিপ ইনজুরির কারণে পুনর্বাসনে ছিলেন। এছাড়াও স্টিভ স্মিথও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর নিউ সাউথ ওয়েলসের হয়ে শেষ ম্যাচটি খেলেননি। তবে মারনাস লাবুশেন ও অ্যালেক্স ক্যারি যথাক্রমে কুইন্সল্যান্ড ও দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলেছেন।
খাওয়াজা ইতিমধ্যেই এই গ্রীষ্মে ১১টি প্রথম-শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন। যার মধ্যে সাতটি টেস্ট রয়েছে। অর্থাৎ, তিনি একটি সাধারণ অস্ট্রেলিয়ান ডমেস্টিক রেড-বল ব্যাটসম্যানের পুরো শিল্ড মৌসুমের চেয়ে বেশি ম্যাচ ও বেশি দিন ধরে খেলেছেন। এর আগেও টেস্ট ম্যাচে ফিলিস্তিনের সমথর্নে স্লোগান সংবলিত জুতা পড়ে খেলতে চাওয়ায় বিতর্কে জড়ান খাওয়াজা। সেবার আইসিসির নীতিমালা অনুসরণ না করায় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে খাওয়াজাকে বিশেষভাবে সর্তক করা হয়।