সিরিজটা আগেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। শেষ ম্যাচটা ছিল শুধু প্রক্রিয়াগত আনুষ্ঠানিকতা। কিন্তু সেখানেও আলো ছড়ালেন নাসুম আহমেদ। যদিও নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দলের কাছে বাংলাদেশ ‘এ’ দল হেরে গেছে ৪ উইকেটে, তবুও ব্যাট হাতে সাহসী ইনিংস আর বল হাতে কার্যকর পারফরম্যান্সে চোখে পড়েছেন এই বাঁহাতি স্পিনার।
নাসুম নিজেও জানেন, তার নামের পাশে ‘অলরাউন্ডার’ ট্যাগ জুড়ে দেওয়া যাবে না। কিন্তু দলের জন্য তার ব্যাটিংটা যে বাড়তি পাওয়া, সেটা যেন নিজের মুখেই স্বীকার করলেন, “আমি অলরাউন্ডার না। ব্যাট করতে পারি, এটা দলের জন্য বাড়তি প্লাস পয়েন্ট। আমার কোনো ব্যাটিং বেসিক নাই, এমনিই রান করে ফেলি।”
আরও পড়ুন: শেষ ম্যাচ জিতে হোয়াইটওয়াশ এড়ালো নিউজিল্যান্ড ‘এ’

শুধু মুখের কথা নয়, সেটার প্রমাণ দিয়েছেন মাঠেও। ৯৬ বলে ৬৭ রানের ধৈর্যশীল ইনিংস খেলেছেন, সঙ্গে বল হাতেও নিয়েছেন ২ উইকেট মাত্র ৩৬ রানে। আরও একবার প্রমাণ করলেন, শুধু বলেই নয়, প্রয়োজনে ব্যাট হাতেও নির্ভরতা এনে দিতে পারেন তিনি।
এত দারুণ পারফরম্যান্সের পরও নিজেকে বদলাতে নারাজ এই স্পিনার। বলেন, “সবাই জানে আমি বোলার, আমি সেটাতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। বোলিংয়ে নতুন কিছু করছি না। আর করলেও আপনাদের বলব না (হাসি)।”
ব্যাটিং নিয়ে নাসুমের সরল স্বীকারোক্তি যেন তাকে আরও আপন করে তোলে, “সব সময় চাই একটা পঞ্চাশ হোক। কোনো এক জায়গায় গিয়ে আটকায় যাই। আজকে হয়ে গেছে, আলহামদুলিল্লাহ। শতকের স্বপ্ন দেখি নাই, শুধু চেয়েছি যেন শেষ পর্যন্ত খেলতে পারি।”

আরও পড়ুন: পেছাতে পারে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজ
গরমে খেলার চাপ নিয়েও অকপট মন্তব্য তার, “এটাই তো আমাদের পেশা। পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে গরম হোক, ঠাণ্ডা হোক, খেলতেই হবে। নিজের শহরে খেললে আলাদা ফিল আসে।”
এদিকে জাতীয় দলের শ্রীলঙ্কা সফর সামনে থাকলেও, এখনই তা নিয়ে ভাবছেন না তিনি। পুরো মনোযোগ দিয়েছেন সামনের চার দিনের ম্যাচে, “আমি এখন যে ম্যাচটা খেলছি সেটাই নিয়ে ভাবি। শ্রীলঙ্কা সিরিজ অনেক দূরের কথা। সামনে চার দিনের ম্যাচ আছে, সেখানেই ফোকাস।”
শেষ ম্যাচ হারলেও সিরিজটা বাংলাদেশ ‘এ’ জিতেছে ২-১ ব্যবধানে। এবার লাল বলে নতুন চ্যালেঞ্জ— দুটি চার দিনের ম্যাচ। সেখানেও নাসুমের মতো খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স নজরে থাকবে সবাইরই।

নাসুমের মতো একজন যখন বলে, “আমি অলরাউন্ডার না,” তখন তা শুধু কথার কথা নয়— তাঁর মধ্যে লুকিয়ে থাকা নীরব যুদ্ধের গল্পও বলে দেয়। একজন বোলারের ব্যাটে যখন এমন দৃঢ়তা থাকে, তখন তা হয়ে ওঠে দলের জন্য নির্ভরতার প্রতীক।
আরও পড়ুন: টেস্ট থেকে অবসর নিতে চান কোহলি