পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল)-এর চলতি আসর হঠাৎই দিক পরিবর্তন করছে। মাঠের পারফরম্যান্স নয়, এবারের পরিবর্তনের নেপথ্যে নিরাপত্তা শঙ্কা। বিদেশি ক্রিকেটারদের উদ্বেগ আর মাঠের বাইরের অনিশ্চয়তার মধ্যে শেষ পর্যন্ত পিএসএলের বাকি ম্যাচগুলো সংযুক্ত আরব আমিরাতে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।
গত বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাওয়ালপিন্ডিতে পেশোয়ার জালমি ও করাচি কিংসের মধ্যকার ম্যাচটি শেষ মুহূর্তে স্থগিত হয়ে যায়। এরপর থেকেই নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে থাকে। বিশেষ করে বিদেশি খেলোয়াড়দের অনেকে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন পিসিবির কাছে। বিস্ফোরণের শব্দ, বিমান চলাচলের বিঘ্ন এবং পরিস্থিতির অনিশ্চয়তা মিলিয়ে অনেকেই খেলায় মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ছিল।

আরও পড়ুন: রিশাদ-রানার নিরাপত্তা নিয়ে তৎপর বিসিবি
পিসিবি এক বিবৃতিতে জানায়, “খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা ও মানসিক স্বস্তিই আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার। টুর্নামেন্ট চালিয়ে নেওয়ার জন্য আমরা সম্ভাব্য সব পথ খুঁজে দেখেছি। কিন্তু এখন একমাত্র বাস্তবসম্মত সমাধান হলো—অবশিষ্ট ম্যাচগুলো অন্য দেশে সরিয়ে নেওয়া।”
বোর্ডের প্রধান পরিচালনা কর্মকর্তা সালমান নাকভি বলেন, “রাওয়ালপিন্ডি শহরের পাশেই যখন এমন ঘটনা ঘটছে, তখন করাচি বা লাহোর কতটা নিরাপদ বলা মুশকিল। এমনকি পাকিস্তানের অপেক্ষাকৃত ছোট শহরগুলোতেও দফায় দফায় হামলা হয়েছে। এই অবস্থায় খেলোয়াড়দের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খেলা চালিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা শুরু থেকেই বিকল্প ভেন্যুর প্রস্তুতি রেখেছিলাম। এখন সেটাই বাস্তবায়নের সময় এসেছে।”
ইতোমধ্যে একাধিক দল ও খেলোয়াড় দুবাইয়ের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। আটটি ম্যাচ বাকি রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে প্লে-অফ এবং ফাইনাল। নতুন সূচি ও ভেন্যুর ঘোষণা শিগগিরই আসবে বলে জানিয়েছে আয়োজকেরা।

আরও পড়ুন: পিএসএল খেলতে চাচ্ছেন না বিদেশি ক্রিকেটাররা
এই সিদ্ধান্তে অংশ নিয়েছেন ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ, ওয়েস্ট ইন্ডিজসহ বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড় ও কোচেরা। ইংলিশ ক্রিকেটারদের মধ্যে রয়েছেন টম কোলার-ক্যাডমোর, ক্রিস জর্ডান, ডেভিড উইলি, স্যাম বিলিংস, জেমস ভিন্সরা। অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নার, ওয়েস্ট ইন্ডিজের জেসন হোল্ডারসহ অনেক তারকাই পিএসএলের নিয়মিত মুখ।
এদিকে ভারতের ধর্মশালায়ও ভেন্যু পরিবর্তনের ঘটনা ঘটেছে। আইপিএলের একটি ম্যাচ বাতিল ও আরেকটি ম্যাচ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে আহমেদাবাদে— যদিও কতৃপক্ষ বলেছে তা মূলত ভ্রমণ সংক্রান্ত জটিলতা ও টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে।
আরও পড়ুন: আরও পড়ুন: পিএসএল উত্তেজনায় ছন্দপতন: পেশোয়ার-করাচি ম্যাচ স্থগিত

যা–ই হোক, মাঠের ক্রিকেট নিয়ে এখনো আগ্রহে ভাটা পড়েনি। নতুন সূচির অপেক্ষায় পিএসএল ভক্তরা, আর খেলোয়াড়রাও প্রস্তুত আবার মাঠে নামতে— নতুন দেশে, নতুন আবহে।